বাংলারজমিন

হেফাজতকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট ঢাবির ছাত্রলীগ নেতাকে হেনস্তা: দুই পুলিশ প্রত্যাহার

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

৮ এপ্রিল ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৯:০০ অপরাহ্ন

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হেফাজতে ইসলামকে নিয়ে পোস্ট দেয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতাকে পুলিশের উপস্থিতিতে জনতা হেনস্তা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের জয়শ্রী বাজারে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। আফজাল খান নামের ওই ছাত্রলীগ নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। তার বাড়ি উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামে। তিনি সমাজকল্যাণ বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ধর্মপাশা থানার এক এসআই ও এক এএসআইকে প্রত্যাহার করে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন, ছাত্রলীগ নেতা ও ধর্মপাশা থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেতা আফজাল গত ২৯শে মার্চ দুপুরে ফেসবুকে হেফাজতে ইসলামের সহিংসতার ছবি দিয়ে একটি পোস্ট দেন। ঘণ্টাতিনেক পর তিনি স্ট্যাটাসটি শুধু নিজে দেখতে পাওয়ার মতো (অনলি মি) করেন। কিন্তু স্থানীয় কিছু যুবক এর স্ক্রিনশট নিয়ে রাখেন। এরই জের  ধরে গত মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে ওই ছাত্রলীগ নেতা জয়শ্রী বাজারে গেলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম আলমের ছেলে আল মুজাহিদ ৩০-৪০ জনকে নিয়ে কেন ওই পোস্ট দিয়েছে, তার ব্যাখ্যা জানতে চান। আফজাল তখন উপস্থিত লোকজনকে বলেন, তিনি হেফাজতে ইসলামকে ব্যঙ্গ করে কোনো পোস্ট দেননি। তবে হেফাজতের আন্দোলনের নামে ধ্বংসাত্মক কাজের প্রতিবাদে পোস্ট দিয়েছেন। এ নিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে মুজাহিদ ওই ছাত্রলীগ নেতার শার্টের কলার ধরে টানাহিঁচড়া করেন। আফজালের কয়েকজন বন্ধু ও স্থানীয় কয়েকজন তাকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু মুজাহিদের পক্ষের লোকজন বেশি হওয়ায় তারা আফজালকে জয়শ্রী বাজারে থাকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আটক করে রাখেন। খবর পেয়ে ধর্মপাশা থানার এসআই জহিরুল ইসলাম ও এএসআই আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে যান। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি শান্ত করতে চেষ্টা চালান। সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে সেখানে উপস্থিত হন ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। জনতার চাপে ছাত্রলীগ নেতা ক্ষমা চান। পরে তাকে হাতকড়া পরিয়ে থানায় নেয়া হয়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আফজাল সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া পুরো ঘটনাটি সাদা কাগজে লিখে তাতে স্বাক্ষর করে থানা পুলিশের কাছ থেকে মুক্তি পান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আল মুজাহিদ দাবি করেন, হেফাজতে ইসলামকে নিয়ে ব্যঙ্গ করে স্ট্যাটাস দেয়ার ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছি। ছাত্রলীগ নেতা তখন ইসলাম ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। ধর্ম নিয়ে মন্তব্য করায় থানা-পুলিশকে ঘটনাটি জানিয়ে স্থানীয় লোকজন তাকে দলীয় কার্যালয়ে আটকে রাখেন। এর চেয়ে বেশি কিছু হয়নি। এ ঘটনায় রাতেই ধর্মপাশা থানার এসআই জহিরুল ইসলাম ও এসএসআই আনোয়ার হোসেনকে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ ঘটনার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমাদের থানার এসআই জহিরুল ইসলাম ও এএসআই আনোয়ার হোসেনকে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। আমি পরিস্থিতি শান্ত করার মাধ্যমে ওই ছাত্রলীগ নেতাকে সেখান থেকে উদ্ধার করেছি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status