বাংলারজমিন
পেটে গজ রেখেই সেলাই, বের করা হলো ৫ মাস পর
দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
৮ এপ্রিল ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৮:৫৮ অপরাহ্ন
কুমিল্লার দেবিদ্বারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের প্রায় পাঁচ মাস পর এক নারীর পেট থেকে বের করা হলো রক্ত মোছার গজ। এই দীর্ঘ সময় গজটি ওই নারীর পেটের নাড়ি ছিদ্র করে ঢুকে যায়। এতে পচন ধরায় তার জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। অপারেশনটি করা হয়েছিল দেবিদ্বার উপজেলার ফিসার সংলগ্ন বড় আলমপুর রাস্তার মাথায় আল ইসলাম হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডা. কর্নেল আবু দাউদ মো. শরীফুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক অপারেশন করে আস্ত গজ (ব্যান্ডেজ) বের করেন। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় চলছে। জানা গেছে, ভুক্তভোগী ওই প্রসূতির নাম মোসা. শারমিন আক্তার (২৫)। তিনি মুরাদনগর উপজেলার মোগসাইর গ্রামের মো. রাসেল মিয়ার স্ত্রী। দ্বিতীয় সন্তান প্রসবের সময় তার সিজার করা। ভুক্তভোগী শারমিনের বড় ভাই রহুল আমিন জানান, পাঁচ মাস আগে ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ডা. রোজিনা আক্তার ও ডা. শামীমা আক্তার লিন্টা সিজার করেন। একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেন শারমিন। এর দু’দিন পর থেকে শারমিনের পেটে ব্যথা হয়। ৭ দিন পর হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর অপারেশনের ক্ষত থেকে পুঁজ বের হতে থাকে। পরে তাকে কুমিল্লাসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা এন্টিবায়োটিক খেতে দেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত গাইনি চিকিৎসক ডা. রোজিনাকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। এ ব্যাপারে আল ইসলাম হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়াজ মোহাম্মদ হোসেন (এনাম) বলেন, ঘটনাটি পাঁচ মাস আগের। এরপর রোগীর স্বজনরা আমাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করেনি। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পেরে আমরা অনুতপ্ত। ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. কর্নেল আবু দাউদ মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অপারেশনের মাধ্যমে পেট থেকে রক্তাক্ত গজ বের করা হয়। বর্তমানে রোগী সংকটাপন্ন। ৪-৫দিন গেলে অবস্থা বোঝা যাবে। কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন বলেন, এ ব্যাপারে স্বজনদের লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।