দেশ বিদেশ

ইউরোপিয়ান ফাউন্ডেশন ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ

আফগান শান্তি প্রক্রিয়া আরো অনিশ্চিত

অনলাইন ডেস্ক

৬ এপ্রিল ২০২১, মঙ্গলবার, ৩:২২ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তালেবানদের ২০২০ সালের চুক্তি অনুযায়ি আগামি ১লা মে আফগানিস্তান থেকে সব আমেরিকান সেনা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে ২ হাজার ৫০০ জন মার্কিন সেনা অবস্থান করছে। হাতে থাকা একমাস সময়ের মধ্যে বাইডেন প্রশাসন এই সৈন্য প্রত্যাহার করে নিতে পারবে কিনা তা এখনো পরিস্কার নয়। তবে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র আফগান শান্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত সবপক্ষ বিশেষ করে তালেবানদের সঙ্গে সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলবে না বরং দেশটির গোটা রাজনৈতিক পটভূমিতেই বড়ধরনের ছাপ ফেলবে। এছাড়া আফগানিস্তানের সঙ্গে স্বার্থে জড়িত দেশগুলোর প্রত্যেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়টি গভীর পর্যবেক্ষণে রাখবে। আফগানিস্তান প্রশ্নে এখনো যে অনিশ্চয়তা রয়েছে তাতে করে এ বিষয়টির সঙ্গে জড়িত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ক্রমে বুঝতে পারছে দেশটিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার একতরফা প্রচেষ্টা খুব একটা সফলতার মুখ দেখবে না। ই্উরোপিয়ান ফাউন্ডেশন ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ (ইএফএসএএস) তাদের এক মন্তব্য প্রতিবেদনে এসব কথা বলেছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের দিনক্ষণ নির্দিষ্ট করে দেয়া সত্ত্বেও এখানকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি দিনদিন অবনতি হওয়ায় বোঝা যাচ্ছে দেশটিতে যুদ্ধরত সবদলের মধ্যে বিভক্তি দূর করতে হলে আরো বেশি বিস্তৃত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। তালেবানরা বিশ্বাস করে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সেনা প্রত্যাহার করে নেয়া হলে সহিংস সংঘর্ষের মাধ্যমে কাবুল সরকারকে আত্মসমর্পণ করানোই তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সফল হওয়ার সেরা উপায়। অন্যদিকে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি সরকারের আশা, একমাত্র তালেবানদের স্বশস্ত্র আক্রমণ প্রতিহত করলেই এ দলটির দখলদারিত্ব ও তাদের ইসলামিক শাসনতন্ত্র কায়েম বন্ধ করা যাবে। বর্তমানে আফগানিস্তানে যে পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও হত্যাকাণ্ডের মতো পরিস্থিতি বিরাজ করছে তা মূলত তালেবানদের সঙ্গে ডনাল্ড ট্রাম্পের তাড়াহুড়ো করে সম্পন্ন করা চুক্তির প্রত্যক্ষ ফলাফল। চুক্তির শর্তানুযায়ী, মার্কিন সেনাদের ওপর হামলা না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তালেবানরা; বিপরীতে মার্কিন সৈন্যরাও একই ধরনের সুবিধা দেয়ার কথা দিয়েছে। অন্যদিকে ট্রাম্পের আলোচক দল তালেবানদের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও আফগান সরকারের সঙ্গে একইধরনের চুক্তি করেছে, যা ভয়ংকর সংঘর্ষের বীজ বপন করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র তাদের অনেক সেনা প্রত্যাহার করে নেয়ায় রণক্ষেত্রে তালেবানরা এরইমধ্যে বেশ অগ্রগতি করেছে। মার্কিন বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী তালেবানরা আফগানিস্তানে এ যাবতকালের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। এ অবস্থায় আফগানিস্তান প্রসঙ্গে যেকোন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে বাইডেন প্রশাসন। এদিক থেকে বাইডেন প্রশাসনের সামনে এখন দুটি পথ খোলা রয়েছে। এক, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে সম্পন্ন চুক্তি অনুযায়ী ১লা মের মধ্যে তাদেরকে সব সেনা উঠিয়ে নিতে হবে অথবা তালেবানদের সঙ্গে পূর্বসূরীর সম্পন্ন চুক্তিতে অশ্রদ্ধা জানিয়ে আফগানিস্তানে সেনাবাহিনীকে রেখে দিতে পারেন। প্রথম সুযোগটি কাজে লাগালে তালেবানদের খুব দ্রুত ও পুরোপুরিভাবে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়ার ঝুঁকি থাকে। আর পরের পদক্ষেপ কার্যকর করলে মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে পুনরায় তালেবানদের শত্রুতা জেগে উঠবে এবং দেশটি পুরোমাত্রায় আরেকটি যুদ্ধে নিমজ্জিত হবে। আর এ কারণেই বাইডেনের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা আফগানিস্তান বিষয়ে জনসম্মুখে যেকোন ঘোষণা দেয়ার ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হবে এমন উপদেশগুলোই দেয়ার চেষ্টা করছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status