দেশ বিদেশ

রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি রক্ষায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে আপস করেছি- ইকবাল মাহমুদ

স্টাফ রিপোর্টার

৯ মার্চ ২০২১, মঙ্গলবার, ৯:১২ অপরাহ্ন

দায়িত্ব পালনকালে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি রক্ষায় কখনো কখনো কিছু ক্ষেত্রে আপস করতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিদায়ী চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। গতকাল সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে শেষবারের মতো মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান। বিদায়ী দুদক চেয়ারম্যান বলেন, রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি রক্ষায় আপস করেছি। রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ছিল আমার কাছে বড়। এই ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে ভেবে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। এতে নিজের ওপর চাপ অনুভব করেছি। তবে অন্য কারও কাছ থেকে কোনো চাপ পাইনি। তিনি বলেন, আমার কাছে কোনো মন্ত্রী বা এমপি কখনও চাপ প্রয়োগ করেননি। শুধু একদিন একজন মন্ত্রী আমার কাছে এসেছিলেন, তিনি আমার বন্ধু হন। তিনি এসেছিলেন এক কাপ চা খেতে, কোনো তদবির করতে আসেননি। কোনো মন্ত্রী মহোদয় আমার কাছে আসেননি। কোনো মন্ত্রী মহোদয় আমার কাছে ফোন দিয়ে এমন কিছু বলেননি। দ্যর্থহীনভাবে বলতে পারি আমার ওপর কোনো চাপ ছিল না। দুদক সব ক্ষেত্রে জনআকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে আমরা সবাইকে একটি বার্তা দিতে পেরেছি, যে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। অনেক ক্ষমতাধর মানুষকে দুদকের বারান্দায় আসতে হয়েছে। কেউ অন্যায় করে রেহাই পাননি। এই বার্তাটি আমরা পৌঁছাতে পেরেছি। ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমি চেষ্টা করেছি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদককে একটি ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে। আমি তৃপ্ত হতে পারিনি। জনগণের আস্থার প্রতিদান সেভাবে দিতে পারিনি। কাজ করতে গিয়ে দুদকের সবচেয়ে দুর্বলতা কোন জায়গায় সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে বিদায়ী চেয়ারম্যান বলেন, এখানে কোয়ালিটি সম্পন্ন লোকবলের অভাব। কমিশনের যে ধরনের লোক দরকার তেমন লোক নেই। যারা আছে তাদের আরো বেশি প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করতে হবে। দুদক কর্মকর্তাদের ঘুষের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা মানুষ নিয়ে কাজ করি, মানুষকে ডিল করা খুব সহজ কাজ নয়। মানুষ লোভ-লালসার ঊর্ধ্বেও নয়। যারা অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিসিএস ১৯৮১ ব্যাচের কর্মকর্তা ইকবাল মাহমুদ ২০১৬ সালের ১০ই মার্চ দুদক চেয়ারম্যান হিসেবে তৎকালীন চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামানের স্থলাভিষিক্ত হন। তিনি দুদকের চতুর্থ চেয়ারম্যান হিসেবে আজ (মঙ্গলবার) তার মেয়াদ শেষ করবেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব থাকা অবস্থায় ২০০৮ সালের জুন মাসে পদোন্নতি পেয়ে সচিব হন ইকবাল মাহমুদ। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাকে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের (বর্তমান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়) সচিব করা হয়। এরপর ২০১২ সালে সরকার ‘সিনিয়র সচিব’ নামে নতুন পদ সৃষ্টি করলে আরো সাতজনের সঙ্গে ইকবাল মাহমুদও ওই পদ পান। সে সময় তিনি ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব। ওই বছর নভেম্বরে তিনি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) বিকল্প নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পান।
২০০৪ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন গঠিত হলে বিচারপতি সুলতান হোসেন খানকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ২০০৭ সালে এক এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সাবেক সেনাপ্রধান হাসান মশহুদ চৌধুরীকে দায়িত্ব দেয়া হয়। ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর হাসান মশহুদ চৌধুরী পদত্যাগ করার পর চেয়ারম্যানের শূন্যপদে নিয়োগ পান সাবেক সচিব গোলাম রহমান।
 
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status