অনলাইন

রোহিঙ্গাদের ‘টুল’ হিসাবে ব্যবহারের পরিকল্পনা মিয়ানমার সামরিক সরকারের

কূটনৈতিক রিপোর্টার

৭ মার্চ ২০২১, রবিবার, ১০:০৩ অপরাহ্ন

রোহিঙ্গাদের ‘টুল’ হিসাবে ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক সরকার। এমনই খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ওয়াশিংটন ডেটলাইনে রোববার প্রচারিত রিপোর্টে সামরিক অভ্যুত্থানের দায়ে অভিযুক্ত বর্মী সেনা নেতৃত্বের দুনিয়াজুড়ে গণতন্ত্রের পীঠস্থানগুলোতে নিষিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকি মোকাবিলায় বিশেষত পশ্চিমা দুনিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে মিয়ানমার এমন পরিকল্পনা নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে চীনের ‘পাপেট’ বা পুতুল হিসাবে মিয়ানমারের সামরিক নেতারা থাকতে চায় না বলেও জানানো হয়েছে। রয়টার্সের রিপোর্ট মতে, রোহিঙ্গাদের ব্যবহারের প্রথম ধাপ হবে তাদের জন্য ফেরানোর জন্য তহবিল সংগ্রহের চেষ্টা। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন ও চীনের কাছ থেকে নিজেদের দূরে রাখতে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের নিযুক্ত এক ইসরায়েলি-কানাডীয় লবিস্টের বরাতে রয়টার্স জানায়, দেশটির সেনা কর্মকর্তারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে চায়। এজন্য তারা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন একটি তহবিল সংগ্রহের জন্য। আরি বেন-মেনাশে নামের এই লবিস্ট ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার একজন সাবেক কর্মকর্তা। এর আগে তিনি জিম্বাবুয়ের রবার্ট মুগাবে এবং সুদানের সামরিক শাসকদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে বেন-মেনাশে জানান, তাকে ও তার প্রতিষ্ঠান ডিকেন্স অ্যান্ড ম্যাডসন কানাডাকে মিয়ানমারের জেনারেলরা নিয়োগ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রসহ যেসব দেশ তাদের ‘ভুল বুঝছে’ তাদের সঙ্গে যোগাযোগে সহযোগিতা করার জন্য। তিনি দাবি করেছেন, ২০১৬ সাল থেকে মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চি চীনের খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। মিয়ানমারের জেনারেলরা চীনের পুতুল হতে চান না। ফলে আমাদের মূল কাজ হচ্ছে চীনবিরোধী পশ্চিমা ও যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের ঘনিষ্ঠ করা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন সামরিক অভ্যুত্থানকে স্বীকৃতি দেয়নি এবং সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। ইসরায়েলি-কানাডীয় লবিস্ট জানান, মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদো সফরে শেষে এখন দক্ষিণ কোরিয়া থেকে তিনি কথা বলছেন। নেপিদোতে তিনি জান্তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল মিয়া তুন ও’র সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে তাকে অঘোষিত ফি দেওয়া হবে। শনিবার এ বিষয়ে রয়টার্সের পক্ষ থেকে মন্তব্য চেয়ে সামরিক সরকারের এক মুখপাত্রকে ফোন দেওয়া হলে তিনি তা রিসিভ করেননি। বেন-মেনাশে জানান, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনায় সহযোগিতা নিশ্চিত করার জন্য তাকে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, মূলত তারা যাকে বাঙালি বলে তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য কিছু তহবিল জোগাড়ের চেষ্টা করা। উল্লেখ্য, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের জাতিগোষ্ঠী হিসেবে স্বীকার করে না। তারা রোহিঙ্গাদের বাঙালি বলে দাবি করে আসছে। এর আগে, ১ ফেব্রুয়ারি জান্তার ক্ষমতা দখলের আট দিন পর মিয়ানমারের সামরিক শাসক সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাং দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ভিত্তিতে বাংলাদেশ থেকে ‘বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের’ ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়েছিলেন। তবে অতীতের মতোই ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করেননি তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status