শেষের পাতা

৭ই মার্চের ভাষণে নিরস্ত্র বাঙালি সশস্ত্র বাঙালিতে রূপান্তরিত হয়েছিল

স্টাফ রিপোর্টার

৭ মার্চ ২০২১, রবিবার, ৯:৩৫ অপরাহ্ন

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের মাধ্যমে নিরস্ত্র বাঙালি সশস্ত্র বাঙালিতে রূপান্তরিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে বাঙালিদের প্রস্তুত থাকতে বলেছিলেন। শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে বলেছিলেন। সেই ভাষণের পর নিরস্ত্র বাঙালি সশস্ত্র বাঙালিতে রূপান্তরিত হয়। গতকাল দুপুরে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ভাষণ এমন একটি ভাষণ ছিল, যার কাছে লাঠি ছিল, সে লাঠি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিল, যার ঘরে দা ছিল, লাইসেন্স করা বন্দুক ছিল তা নিয়েই বেরিয়ে পড়েছিল। যে ভাষণ শুনে আজও মানুষ উদ্দীপ্ত হয়, এমন ভাষণ বিশ্বের ইতিহাসে প্রকৃতপক্ষে কেউ দেননি।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন প্রাবন্ধিক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক মো. শামসুল হক। উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ সালামের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক দেবাশীষ পালিতের পরিচালনায় আলোচনায় অংশ নেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. আতাউর রহমান, সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো. মঈন উদ্দিন, এডভোকেট ফখরুদ্দিন চৌধুরী, আবুল কালাম আজাদ, এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, মঈন উদ্দিন রাশেদ, জসিম উদ্দিন, আফতাব উদ্দিন আহমেদ, স্বজন কুমার তালুকদার, আবদুল্লাহ আল বাকের ভুঁইয়া, উত্তর জেলা কৃষক লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো এমন আবেদনময় ও উদ্দীপ্ত করার ভাষণ পৃথিবীর ইতিহাসে কেউ দেননি। ভাষণে বঙ্গবন্ধুর কোনো নোট ছিল না, তিনি একনাগাড়ে বলে গেছেন। পৃথিবীতে অনেক ভাষণ আছে অনেক অর্থবহ। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তার এ ভাষণে একটা নিরস্ত্র জনগোষ্ঠীকে সশস্ত্র জনবাহিনীতে রূপান্তর করে প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণের পর পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে লেখা হয়েছিল, ‘চতুর শেখ মুজিব প্রকৃত অর্থে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করে দিয়েছেন। কিন্তু স্বাধীনতা ঘোষণা করার জন্য তাকে অভিযুক্তও করা যাচ্ছে না।’ এমনভাবে বঙ্গবন্ধু বললেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম। এর মাধ্যমে সেদিন সাংবাদিক ও তরুণদের উদ্দীপ্ত করেছিল এই ভাষণ। এখনো এই ভাষণ শুনলে মানুষ থমকে দাঁড়ায়, এজন্য বিশ্ব ইতিহাসে এটি একটি বিরল ভাষণ। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ অসাধারণ ও অনন্য বিধায় জাতিসংঘের বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
বিএনপি’র ৭ই মার্চ পালনের ঘোষণায় তাদের অভিনন্দন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, এতদিন পরে তাদের বোধোদয় হলো। মির্জা ফখরুল সাহেব এটিও বলেছেন ৭ই মার্চ ইতিহাস, এই ইতিহাসকে আমাদের স্বীকার করতে হবে। আমি ফখরুল সাহেবদের বলবো বাকি যে ইতিহাস বিকৃতি করেছিলেন, সেটাও ভুল স্বীকার করে ইতিহাসগুলো স্বীকার করে নেন। তাহলে জাতি আপনাদের সাধুবাদ দিবে। ড. হাছান বলেন, বিএনপি’র এখন নানা ধরনের মিছিল হয়। দৌড় মিছিল, চোরাগুপ্তা মিছিল, হঠাৎ মিছিল। বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ নাকি একটি চোরাগুপ্তা মশাল মিছিল করেছেন। তাদের বলবো এভাবে চোরাগুপ্তা মিছিল ও মানুষের ওপর চোরাগুপ্তা হামলা করে লাভ হবে না। সত্যিকার অর্থে জনগণের কাছে যদি যেতে চান তাহলে ইতিহাসকে মেনে নিন, যেভাবে ৭ই মার্চকে মেনে নিয়েছেন। এতদিনের অপরাজনীতির জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চান।’
‘বিএনপি ও তাদের মিত্ররা মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর জন্য মায়াকান্না করছেন, তার মৃত্যুতে আমি নিজেও ব্যথিত। কিন্তু মুশতাক আহমেদ কেন গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রশ্ন রেখে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি করোনা মহামারি নিয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের পোস্ট দিচ্ছিলেন। একটি পেজ থেকে নানাভাবে গুজব ছড়াচ্ছিলেন, সেই কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। জামিন কেন পাননি, সেটি কোর্ট বলতে পারবে, এই এখতিয়ার কোর্টের। তার মৃত্যুটা স্বাভাবিক মৃত্যু, তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। এভাবে ছেলেধরা নিয়েও গুজব ছড়ানো হয়েছিল।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের দেশে যখন কোনো অর্জন হয়, আমরা যখন উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ পেলাম, তখন একটি পক্ষ লেগে গেল অন্য বিষয় নিয়ে মাঠ গরম করার জন্য। অথচ এটি নিয়ে একটি অভিনন্দন তাদের মুখ থেকে আসেনি। এটি তাদের একপেশে ও চিন্তার দৈন্যতা। দেশের অর্জন যে তাদের চোখে পড়ে না, কানে যায় না সেটিরই বহিঃপ্রকাশ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন একটি উন্নত রাষ্ট্র রচনা করার জন্য। সেই স্বপ্নপূরণ করে যেতে পারেননি বঙ্গবন্ধু। তিনি যদি বেঁচে থাকতেন আজকে মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরের আগেই বাংলাদেশ নাম লিখাতো উন্নত দেশের কাতারে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status