শেষের পাতা

শিক্ষামন্ত্রীকে দুষলেন কলিমুল্লাহ, মন্ত্রণালয় বলেছে অনভিপ্রেত

স্টাফ রিপোর্টার ও বেরোবি প্রতিনিধি

৫ মার্চ ২০২১, শুক্রবার, ৯:১২ অপরাহ্ন

আমি নিয়মিত ২০ থেকে ২২ ঘণ্টা বিশ্ববিদ্যালয়কে সময় দেই। অথচ পরিকল্পিতভাবে বলা হচ্ছে আমি নাকি ক্যাম্পাসে থাকি না। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) তার বিরুদ্ধে উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্র্নীতির অভিযোগ পায়। যা ইতিমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এরই প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এ সময় তিনি দুর্নীতির দায় অস্বীকার করেন এবং বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে। প্রতিবেদনের আংশিক প্রকাশ করে আমাকে হেয় করা হচ্ছে। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার, রাজনীতির শিকার। ওদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বেরোবি ভিসির বক্তব্য অনভিপ্রেত বলে উল্লেখ করেছে।
গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, দায়িত্বে অবহেলা নিজের চরিত্রে নেই। আমার পরিচিত সবাই জানেন, আমি একজন কাজ পাগল মানুষ। বাংলাদেশের যে প্রান্তেই থাকি না কেন আমি বেরোবির ভিসি। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী, ভিসির পদ আবাসিক নয় রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব আবাসিক।
এ সময় নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের জন্য শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে দায়ী করেন। বলেন, এ ধরনের জায়গা থেকে এমন অভিযোগ তোলা রাজনৈতিক অপকৌশল। আগের ভিসির সময় একটি বিশেষ এলাকা থেকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারাই অবরোধ আন্দোলন করে আসছেন। আমাকে ঘেরাও করতেই ক্যাম্পাসে পাওয়া যায় না। এ ছাড়া আগের শিক্ষামন্ত্রীর সময়ও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আমাকে পাওয়া যায় না, আমি নিখোঁজ হয়ে যাই, আমি ঢাকা থাকি। আমি প্রতিদিন ২০ থেকে ২২ ঘণ্টা কাজ করি। ঢাকায় থাকলে লিয়াজোঁ অফিসে কাজ করি। রংপুরে থাকলে বাসায় থেকে কাজ করি। দায়িত্ব গ্রহণের পর স্বাভাবিকভাবেই সব চলছিল। কিন্তু মিথ্যা ও অসংলগ্ন যেসব তথ্য সংবাদ মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে, তা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।
এ সময় ইউজিসিকে উদ্ধৃত করে বলেন, ইউজিসির রিপোর্টের দায় শিক্ষামন্ত্রীর। আমাদের দেশে দুর্নীতি নিয়ে যে সমস্যা সেটা হচ্ছে ধামাচাপা দেয়ার একটা কালচার আছে। শিক্ষামন্ত্রীর অফিস থেকে কয়েক পৃষ্ঠার খণ্ডিত অংশ নিয়ে ফাঁস করা হয়েছে। এটা রাজনীতির একটা অপকৌশল। সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে এ ধরনের হীন রাজনীতি করার জায়গা না। যেসব মুখরোচক গল্প আমরা শুনেছি সেগুলো আইনানুগ না এবং আমরা এই কারণে বিষয়টা বুঝবার এবং সমাধানের জন্য সময় নিয়েছি। আমাদের অনুমান এই কাণ্ডটি করা হয়েছে একটা ভিন্ন চিন্তা ধারায়। এটি একেবারেই হীনম্মন্যতার পরিচয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরকে মিথ্যা ?ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করে বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এখনো আমরা পাইনি। এর আগেই গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
ওদিকে বেরোবি ভিসির বক্তব্যের জবাব দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেসনোটে তার এই বক্তব্য অনভিপ্রেত বলে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ইউজিসি বরাবর তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়। ইউজিসি তাদের নিয়ম অনুযায়ী প্রক্রিয়া অনুসরণে তদন্ত সম্পন্ন করে মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করে। ইউজিসি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বিধায় এ প্রক্রিয়ার কোনো পর্যায়ে মন্ত্রণালয় বা মন্ত্রীর পক্ষ থেকে কোনো ধরনের প্রভাব বিস্তারের কোনো সুযোগ নেই।
আরো জানানো হয়, মন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার কথা উল্লেখ করে রাজনীতিকে জড়িয়ে কিছু মন্তব্য করেছেন। যার সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের কোনো বিষয়ের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা না থাকায় এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকছে।
ভিসিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক অনিয়ম ও দুর্নীতি সংক্রান্ত আরেকটি অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষে যথাযথ প্রক্রিয়ায় বক্তব্য উপস্থাপন করা হবে বলেও জানানো হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status