অনলাইন

কিশোরীকে চেপে ধরেছিলো সুঠামদেহী পুরুষ

স্টাফ রিপোর্টার

৪ মার্চ ২০২১, বৃহস্পতিবার, ১২:০৬ অপরাহ্ন

মেয়েটি কাঁদছে। প্রতিবেশীরা শুনছিলেন গোঙ্গানির শব্দ। গোঙ্গাতে গোঙ্গোতে কাঁদছিলো। তার বয়স ১৫ থেকে ১৬ বছর হবে। কিশোরী। তাকে চেপে ধরেছিলো সুঠাম দেহী পুরুষ। নিজেকে রক্ষা করতে আপ্রাণ চেষ্টা করছিলো মেয়েটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেনি কিছুতেই।

দরজা বন্ধ। বাইরে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছেন এক নারী ও তিন পুরুষ। কয়েক কক্ষের টিনের ঘর এটি। পাশের কক্ষে অপেক্ষায় আরও কয়েক পুরুষ। তারা প্রহর গুনছেন কখন ডাক পড়বে। ডাকবেন এই ঘরের গৃহকর্ত্রী। সিরিয়াল অনুসারে পাঠানো হবে কিশোরীর কাছে। কিশোরীর কান্না, অনুনয়ে কিছুই যায় আসে না তাদের। মাংসলোভী এই পুরুষগুলো নির্দয়। বরং কিশোরীর গোঙ্গানির শব্দ শুনে ভালোই লাগছে তাদের।

কান্নার শব্দ শুনে বিশ্বাসযোগ্যতা পাচ্ছেন গৃহকত্রীর কথায়। গৃহকর্ত্রী তাদের জানিয়েছেন, মেয়েটি নতুন এসেছে। মাত্র দু’দিন থাকবে এখানে। তারপরই তাকে পাঠানো হবে ভারতে। এই দু’দিনে কিছু টাকা রুজি করতে চান তিনি। এজন্য পরিচিত বিত্তশালী কয়েক জনকে ডেকেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে বেনাপোল সীমান্তের একটি বাড়িতে।

ওই বাড়িতে কয়েক পুরষ কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয় কিশোরী। তারপর মেয়েটি অসুস্থ হয়ে যায়। রক্তাক্ত অনেকটা। অসুস্থ হওয়ার পর সেদিনের মতো কামুক পুরুষদের ফিরিয়ে দেয়া হয়। দ্বিতীয় রাতে আবার একইভাবে চলছিলো সকল আয়োজন। কিন্তু প্রতিবেশীদের দেয়া তথ্যানুসারে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। উদ্ধার করা হয় ওই কিশোরীকে। গ্রেপ্তার করা হয় নারী পাচার চক্রের সদস্যদের। ২০১৯ সালের ২৩শে নভেম্বর ওই কিশোরীকে ভারতে পাচার করার চেষ্টা করছিল এই চক্র। সীমান্তের ওপারে ভারতে একটি দালাল চক্রের কাছে ওই কিশোরীকে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছিল।

চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকার মাদারটেকের ওই কিশোরীকে যশোর নিয়ে যায় চক্রের সদস্যরা। স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে মাদারটেকের বাসায় উঠেছিলো চক্রের সদস্য প্রতীক ও জেরিন। ওই বাসায় থেকেই টার্গেট করে কিশোরীকে। ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মধ্যবিত্ত পরিবারের এই মেয়েটিকে নিয়ে যায় যশোরে। উদ্দেশ্য ভারতে পাচার করা।
এ ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে সবুজবাগ থানায় মামলা দায়ের করার পর পর্যায়ক্রমে গ্রেপ্তার করা হয়  প্রতীক,  জেরিনসহ ৯ জনকে।

সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার কানিজ ফাতেমা ওই সময়ে জানান, ভারত, দুবাই, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে নারী মানবপাচারের কথা স্বীকার করে চক্রের প্রতীক আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status