শেষের পাতা

পি কে হালদার ইস্যু

আরো ১০ মামলার প্রস্তুতি দুদকের

মারুফ কিবরিয়া

৩ মার্চ ২০২১, বুধবার, ৯:৪৭ অপরাহ্ন

হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা দেশের বহুল আলোচিত ব্যক্তি পি কে হালদার ইস্যুতে মামলার সংখ্যা শুধু দীর্ঘই হচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে নামে-বেনামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঋণ কেলেঙ্কারির তথ্য।  এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন পি কে হালদার    অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত এই চক্রটি এরই মধ্যে দুদকের জালে রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এর মধ্যে অন্তত ৩০-৩৫ জন ব্যক্তিকে আসামি করে নতুন মামলার প্রস্তুতি রয়েছে দুদকের। সংস্থাটির এক কর্মকর্তা মানবজমিনকে জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহেই পি কে হালদার ইস্যুতে আরো দশটি মামলা করবে দুদক।

সূত্র জানায়, এসব মামলায় লিপ্রো ইন্টারন্যাশনাল, কোলাজ ইন্টারন্যাশনাল ও ফাস ফাইন্যান্সসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ৩০ থেকে ৩৫ শীর্ষ কর্মকর্তাকে আসামি করা হতে পারে।

এ বিষয়ে দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো অনুসন্ধান চলমান। বিস্তারিত এখনই বলা যাচ্ছে না।

অবশ্য সংস্থাটির অন্য একটি সূত্র জানায়, পিপলস লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের অনিয়ম ও দুর্নীতিতে বেশ কয়েকজন বড় ব্যবসায়ী ও ব্যাংক কর্মকর্তার নাম উঠে এসেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের জবানবন্দিতে অনেকেরই নাম এসেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এলেও ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আর্থিক খাতের ১৫ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এখন পি কে হালদার চক্রের বিরুদ্ধে। দুদক সকল তথ্য-উপাত্ত আমলে নিয়েই আইনি ব্যবস্থায় যাবে।

সংস্থাটির তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানান, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় পি কে হালদারের মামাতো ভাই শঙ্খ ব্যাপারীকে। তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মুন এন্টারপ্রাইজ ঋণ নেয় ৮৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এ ছাড়া পি কে হালদারের সম্পদও তার কাছে গচ্ছিত ছিল। পি কে হালদারের সঙ্গে যোগসাজশ ও অর্থ আত্মসাৎ, অবৈধ সম্পদ অর্জনের কথা স্বীকার করে শঙ্খ বেপারী তিন দিনের রিমান্ডের দ্বিতীয় দিন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আদালতে।

তারপরই দায় স্বীকার করেন ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডের এমডি রাশেদুল হক। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়, দীর্ঘদিনের সহকর্মী হিসেবেই ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের দায়িত্ব নিয়ে পি কে হালদারের পারিবারিক ও নিয়ন্ত্রণাধীন ৪০ প্রতিষ্ঠানকে আড়াই হাজার কোটি টাকা ঋণ ছাড় দেন রাশেদুল। যেখানে কোনো সম্পদ বন্ধকও রাখা হয়নি। এমনকি যেসব প্রতিষ্ঠানকে ঋণ ছাড় দেয়া হয় তাদের সে অর্থ ফেরত দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে কিনা তাও দেখা হয়নি। দুদকের জালে আটক আরেক আসামি পি কে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা বড়াল। জানুয়ারি মাসে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় ধানমণ্ডির একটি বাড়ি থেকে। জিজ্ঞাসাবাদে পি কে হালদারের সঙ্গে আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন তিনি।

অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে দুদকে ডাকা হয়েছিল পি কে হালদারের আইনজীবী সুকুমার মৃধা ও তার মেয়ে অনিন্দিতা মৃধাকে। পি কে হালদারের টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকা ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়ায় সেদিনই সংস্থাটির উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন দু’জনকে গ্রেপ্তার করেন।

পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ  অর্জন ও পাচারের মামলা করে দুদক। এ মামলায় আরো তিনজনকে আসামি করা হয়। তারা হলেন- তাপসী রানী শিকদার, অসীম কুমার মিস্ত্রি ও স্বপন কুমার মিস্ত্রি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status