এক্সক্লুসিভ
পর্ব-৬৮
স্বাধীনতার জন্য প্রতিটি প্রজন্মকে লড়তে হয়
কাজল ঘোষ
২ মার্চ ২০২১, মঙ্গলবার, ৮:৫৫ অপরাহ্ন
দুই বছরের প্রচারণা চলেছে কখনো দ্রুতলয়ে আবার কখনোবা ধীরগতিতে। যদিও আমার প্রচারণায় গুরুত্ব পেয়েছে আমার স্টেট। কাজ করার আগে এমন কিছু খারাপ ঘটনাও ঘটেছে যাতে প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে প্রভাব পড়তে পারে। রিপাবলিকানরা প্রাইমারি নির্বাচনী দৌড় শুরু করেছে একদম শুরুর দিক থেকে। এই দৌড় ছিল কখনো উত্তেজনার, কখনো দোষারোপের, কখনো মজার। যে মানুষটি মর্যাদা এবং সততার প্রতীকী সীমাকে অতিক্রম করেছেন, নারীদের যৌন অবমাননা নিয়ে তিরস্কার করেছেন, বিকলাঙ্গ মানুষদের নিয়ে মসকরা করেছেন, অভিবাসীদের অবজ্ঞা করেছেন, আক্রমণ করেছেন যুদ্ধের বীর এবং গোল্ডস্টার পরিবারগুলোকে। একইসঙ্গে তিনি শত্রুতাকে উস্কে দিচ্ছিলেন- এমনকি মিডিয়ার প্রতিও ঘৃণা ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন।
ফলাফল যা হলো তাতে ২০১৬ সালের নির্বাচনের রাতটি খুব একটা আনন্দের ছিল না। এর যে শেষ এখানেই তাও বলা যাচ্ছে না। এটা পরিষ্কার লড়াইটি শুরু হয়েছে কেবলমাত্র। কোরেটা স্কট কিং-এর লেখা থেকে বলতে হয়, আমি স্রোতাদের স্মরণ করিয়ে দিলাম যে, প্রতিটি প্রজন্মকেই স্বাধীনতার জন্য লড়তে হয় এবং জিততে হয়।
‘এটা খুব স্বাভাবিক নাগরিক অধিকার, ন্যায়বিচার এবং সমতার দাবিতে লড়াইয়ে যেখানেই জয় পেয়েছি তা আমরাই করেছি এবং এর কোনোটাই চিরস্থায়ী নয়। এজন্য আমাদেরকে অবশ্যই চোখ-মুখ খোলা রাখতে হবে। আমি বললাম, বুঝতে পারছি যে, এ নিয়ে হতাশার কিছু নেই। এ বিষয়ে অবিভূত হওয়ারও কিছু নেই। আমাদের হাত গুটিয়ে নেয়ার সময় নেই, যুদ্ধটা আমাদেরকেই করতে হবে।
আমি জানি না, যখন আমি সেই রাতে আমার সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলছিলাম কি ঘটতে চলেছে। কিন্তু আমি এটা জানি আমাদের একসঙ্গে শক্তভাবে দাঁড়াতে হবে এবং সকলকে একত্রিত হতে হবে।
দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার, ১০ই নভেম্বর। নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টা পর আমি ‘কোয়ালিশন ফর হিউম্যান ইমিগ্র্যান্ট রাইটস অফ লস অ্যানজেলেস (সিএইচআইআরএলএ-চিরলা) পরিদর্শন করি।
চিরলা লস অ্যানজেলেসের অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে কাজ করছে এমন সংগঠনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরনো। এর সূচনা হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। প্রেসিডেন্ট রিগানের পরে এই সংস্থাটির সূচনা। যিনি একইসঙ্গে ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ারও গভর্নর। যিনি ইমিগ্রেশন রিফর্ম অ্যান্ড কন্ট্রোল অ্যাক্ট-এ স্বাক্ষর করেছেন। ১৯৮২ সালের পূর্বে যারা অবৈধ উপায়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন এই আইনের মাধ্যমে তাদেরকে বৈধতা দেয়া হয়েছিল। ওদের মূল কাজটি ছিল অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতার মর্যাদা পাবার জন্য এবং কাজ করার অধিকার পাবার জন্য কীভাবে আবেদন করতে হবে সে বিষয়ে সহায়তা করা। কমিউনিটি সংগঠকদের প্রশিক্ষণ দিতো তারা। একইভাবে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রপোজিশন ১৮৭-এর মতো অভিবাসনবিরোধী আইনের প্রতি এটা ছিল একটি চ্যালেঞ্জ। ক্যালিফোর্নিয়ার ঐ প্রস্তাবনায় অবৈধ অভিবাসীদের সরকারি কর্মক্ষেত্রে জরুরি না এমন কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছিল। এর মধ্য দিয়ে জাতীয় একটি ঐক্য গড়ে ওঠেছিল। এটা ছিল সেই স্থান যেখানে সিনেটর নির্বাচিত হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে আমি প্রথম কথা বলতে চেয়েছিলাম।
অ্যাঞ্জেলিকা সালাস চিরলার অপ্রতিরোধ্য নির্বাহী পরিচালক ছিলেন। আমাকে অভ্যর্থনা জানাতে তিনিও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে হলভর্তি ছিল মানুষ। সেখানে ছিল সাহসী নারীরা, মেয়েরা, মায়েরা, দাদিরা। তারা সকলেই গৃহে কাজ করে, কেউবা গৃহে স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে কাজ করে। এদের অনেকেই ইংরেজিতে চমৎকার কথা বলতে পারে, কেউবা স্প্যানিশে। এরা সকলেই লড়াই করার জন্য প্রস্তুত।
তাদের সাহস, তাদের মর্যাদা এবং তাদের সংকল্প ব্যক্ত করার পাশাপাশি তারা আমার মায়ের কথাও স্মরণ করিয়ে দিলো। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে আমি ভাবছিলাম আমেরিকায় দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিজ্ঞতার কথা।
একদিকে এটা ছিল আশা এবং উদ্দেশ্যের ব্যতিক্রমী এক অভিজ্ঞতা এবং আমেরিকান ড্রিমের এক শক্তিশালী বিশ্বাস। একই সময়ে গতানুগতিক ধারা এবং বলির পাঁঠা বানানোর মাধ্যমে যে ভীতি তৈরি হয় সেটাও একরকম অভিজ্ঞতা। এক্ষেত্রে থাকে বৈষম্য-যা প্রতিটি জীবনের অংশ।
কমালা হ্যারিসের অটোবায়োগ্রাফি
‘দ্য ট্রুথ উই হোল্ড’ বই থেকে
ফলাফল যা হলো তাতে ২০১৬ সালের নির্বাচনের রাতটি খুব একটা আনন্দের ছিল না। এর যে শেষ এখানেই তাও বলা যাচ্ছে না। এটা পরিষ্কার লড়াইটি শুরু হয়েছে কেবলমাত্র। কোরেটা স্কট কিং-এর লেখা থেকে বলতে হয়, আমি স্রোতাদের স্মরণ করিয়ে দিলাম যে, প্রতিটি প্রজন্মকেই স্বাধীনতার জন্য লড়তে হয় এবং জিততে হয়।
‘এটা খুব স্বাভাবিক নাগরিক অধিকার, ন্যায়বিচার এবং সমতার দাবিতে লড়াইয়ে যেখানেই জয় পেয়েছি তা আমরাই করেছি এবং এর কোনোটাই চিরস্থায়ী নয়। এজন্য আমাদেরকে অবশ্যই চোখ-মুখ খোলা রাখতে হবে। আমি বললাম, বুঝতে পারছি যে, এ নিয়ে হতাশার কিছু নেই। এ বিষয়ে অবিভূত হওয়ারও কিছু নেই। আমাদের হাত গুটিয়ে নেয়ার সময় নেই, যুদ্ধটা আমাদেরকেই করতে হবে।
আমি জানি না, যখন আমি সেই রাতে আমার সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলছিলাম কি ঘটতে চলেছে। কিন্তু আমি এটা জানি আমাদের একসঙ্গে শক্তভাবে দাঁড়াতে হবে এবং সকলকে একত্রিত হতে হবে।
দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার, ১০ই নভেম্বর। নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টা পর আমি ‘কোয়ালিশন ফর হিউম্যান ইমিগ্র্যান্ট রাইটস অফ লস অ্যানজেলেস (সিএইচআইআরএলএ-চিরলা) পরিদর্শন করি।
চিরলা লস অ্যানজেলেসের অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে কাজ করছে এমন সংগঠনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরনো। এর সূচনা হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। প্রেসিডেন্ট রিগানের পরে এই সংস্থাটির সূচনা। যিনি একইসঙ্গে ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ারও গভর্নর। যিনি ইমিগ্রেশন রিফর্ম অ্যান্ড কন্ট্রোল অ্যাক্ট-এ স্বাক্ষর করেছেন। ১৯৮২ সালের পূর্বে যারা অবৈধ উপায়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন এই আইনের মাধ্যমে তাদেরকে বৈধতা দেয়া হয়েছিল। ওদের মূল কাজটি ছিল অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতার মর্যাদা পাবার জন্য এবং কাজ করার অধিকার পাবার জন্য কীভাবে আবেদন করতে হবে সে বিষয়ে সহায়তা করা। কমিউনিটি সংগঠকদের প্রশিক্ষণ দিতো তারা। একইভাবে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রপোজিশন ১৮৭-এর মতো অভিবাসনবিরোধী আইনের প্রতি এটা ছিল একটি চ্যালেঞ্জ। ক্যালিফোর্নিয়ার ঐ প্রস্তাবনায় অবৈধ অভিবাসীদের সরকারি কর্মক্ষেত্রে জরুরি না এমন কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছিল। এর মধ্য দিয়ে জাতীয় একটি ঐক্য গড়ে ওঠেছিল। এটা ছিল সেই স্থান যেখানে সিনেটর নির্বাচিত হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে আমি প্রথম কথা বলতে চেয়েছিলাম।
অ্যাঞ্জেলিকা সালাস চিরলার অপ্রতিরোধ্য নির্বাহী পরিচালক ছিলেন। আমাকে অভ্যর্থনা জানাতে তিনিও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে হলভর্তি ছিল মানুষ। সেখানে ছিল সাহসী নারীরা, মেয়েরা, মায়েরা, দাদিরা। তারা সকলেই গৃহে কাজ করে, কেউবা গৃহে স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে কাজ করে। এদের অনেকেই ইংরেজিতে চমৎকার কথা বলতে পারে, কেউবা স্প্যানিশে। এরা সকলেই লড়াই করার জন্য প্রস্তুত।
তাদের সাহস, তাদের মর্যাদা এবং তাদের সংকল্প ব্যক্ত করার পাশাপাশি তারা আমার মায়ের কথাও স্মরণ করিয়ে দিলো। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে আমি ভাবছিলাম আমেরিকায় দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিজ্ঞতার কথা।
একদিকে এটা ছিল আশা এবং উদ্দেশ্যের ব্যতিক্রমী এক অভিজ্ঞতা এবং আমেরিকান ড্রিমের এক শক্তিশালী বিশ্বাস। একই সময়ে গতানুগতিক ধারা এবং বলির পাঁঠা বানানোর মাধ্যমে যে ভীতি তৈরি হয় সেটাও একরকম অভিজ্ঞতা। এক্ষেত্রে থাকে বৈষম্য-যা প্রতিটি জীবনের অংশ।
কমালা হ্যারিসের অটোবায়োগ্রাফি
‘দ্য ট্রুথ উই হোল্ড’ বই থেকে