প্রথম পাতা

স্থান পাচ্ছে রণাঙ্গন ও মুক্তিগেজেট

পরিবর্তন হচ্ছে তালিকা’র নাম

কাজী সোহাগ

১ মার্চ ২০২১, সোমবার, ৯:৩৫ অপরাহ্ন

মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধের সময়ের তালিকা ‘ভারতীয় তালিকা’ এবং ‘লাল তালিকা’ ,‘লাল বার্তা’-এর নাম বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। ভারতীয় তালিকার পরিবর্তে রণাঙ্গনের তালিকা এবং লাল তালিকা ও লাল বার্তার পরিবর্তে মুক্তিগেজেট-১ ও মুক্তিগেজেট-২ রাখার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে এ সুপারিশ করা হয়েছে। গত ৩রা জানুয়ারি সংসদ সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকের কার্যবিবরণী সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। তাতে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। সংসদীয় কমিটির সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে-মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধের সময়ের যে তালিকা ‘ভারতীয় তালিকা’ বলা হয় তা ‘রণাঙ্গনের তালিকা’ নামে স্বীকৃত হবে। অনুরূপভাবে পরবর্তী গেজেটগুলো মুক্তিগেজেট-১, মুক্তিগেজেট-২ এভাবে নামকরণের সুপারিশ করা হয়। কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করেন কমিটির সদস্য চাঁদপুর-৫ আসনের এমপি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম, বীরউত্তম। যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ভারতীয় তালিকা’ শব্দদ্বয় নতুন প্রজন্মের মনে এবং ইতিহাসে এমন একটি ধারণার সৃষ্টি করছে যে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে কারা অংশগ্রহণ করবে তা ভারত সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে। এটা ক্ষতিকর একটি ভ্রান্ত ধারণা। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে কারা প্রশিক্ষণ নেবে এবং যুদ্ধ করবে সে তালিকা আমরাই তৈরি করেছি। ভারতীয়দের ক্যাম্পে প্রশিক্ষণার্থীদের নাম আমরাই পাঠিয়েছি। ভারত সরকারের কেউ এ তালিকা তৈরি করেনি। তাই এ তালিকাগুলোর নাম করা হোক ‘রণাঙ্গনের তালিকা’। আর ‘লাল তালিকা’,‘লাল বার্তা’ এসব নাম বাদ দিয়ে এসব গেজেটকে মুক্তিগেজেট-১, মুক্তিগেজেট-২ এভাবে নামকরণ করা হোক। কমিটির ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংসদীয় কমিটির সভাপতি শাজাহান খানসহ কমিটির আরো ৫ সদস্য। এদিকে নাম পরিবর্তনের ওই যুক্তিকে সমর্থন দেন কমিটির অপর সদস্যরা। কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে- কমিটির সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল কমিটির মাননীয় সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম, বীরউত্তম এর বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করে বলেন, অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা শব্দটি ব্যবহার করে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার ফলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানহানি হওয়ার পাশাপাশি তাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভও বিরাজ করছে বলে জানান। এক্ষেত্রে উক্ত বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে ভবিষ্যতে বিষয়টি বিস্ফোরিত এবং বিধ্বংসী আকার ধারণ করবে মর্মে তিনি শংকা প্রকাশ করেন। এ প্রসঙ্গে আলোচনার সময় কমিটির অপর সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ঢাকা দক্ষিণের মুক্তিযোদ্ধা কমিটির যাচাই-বাছাইকালে লাল মুক্তিবার্তার ৩০ শতাংশ লোকই যুদ্ধ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছুই বলতে পারেননি। সম্প্রতি ভারতীয় তালিকায় নাম থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই লাগবে না বলে সিদ্ধান্ত দেয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। তাতে বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা ৩৩ প্রমাণের যেকোনো একটিতে নাম থাকলে এমআইএসে নাম অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। বীর মুক্তিযোদ্ধার একাধিক প্রমাণে নাম থাকলে সব প্রচারপত্রের তথ্য তার নামের বিপরীতে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। প্রমাণের তালিকার মধ্যে রয়েছে মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রীদের তালিকা এবং মুজিবনগর কর্মচারী তালিকা। ভারতীয় তালিকার মধ্যে রয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা, মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা (পদ্মা), মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা (মেঘনা), মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা (সেক্টর) এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতীয় তালিকা (সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী)। (লাল মুক্তিবার্তার মধ্যে) লাল মুক্তিবার্তা- স্মরণীয় যারা বরণীয় যারা এবং লাল মুক্তিবার্তা (চূড়ান্ত লাল বই), খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status