বাংলারজমিন

ঘাটাইলে বাছেত করিমের সনদ ও গেজেট বহালের দাবি ৬২ বীরমুক্তিযোদ্ধার

ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, রবিবার, ১:০০ অপরাহ্ন

ঘাটাইল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাছেত করিমের সনদ ও গেজেট বহালের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বীরমুক্তিযোদ্ধারা। গত ১০ই জানুয়ারি কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে ৫২ জন মুক্তিযোদ্ধার গেজেট ও সনদ বাতিলের সিদ্ধান্তের যে খবর প্রকাশিত হয় বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাছেত করিমের নাম রয়েছে।  জামুকা কর্তৃক কিশোর বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল বাছেত করিমের সনদ ও গেজেট বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ঘাটাইল উপজেলার ৬২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে যুদ্ধাহত কিশোর বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল বাছেত করিমের নাম থাকায় ঘাটাইলের বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিস্মিত। তিনি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সর্বজন স্বীকৃত।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, আব্দুল বাছেত করিম ১৯৭১ সালে ঘাটাইল গণ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে প্রস্তুতির জন্য ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ ঘাটাইল ঈদগাহ মাঠে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন খান  ও তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা কাজী আব্দুল হামিদের নেতৃত্বে সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গঠিত হলে তিনি কিশোর ও তরুণ বয়সে  সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশ নেন।  যুদ্ধকালীন সময়ে এলেঙ্গা-ভুয়াপুর রাস্তার নগরবাড়ি সেতুর নিকট তিনি ১২ই আগস্ট দিবাগত রাতে খোরশেদ আলম তালুকদারের (বীর প্রতীক) নেতৃত্বে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে মোঃ আব্দুল বাছেত করিম গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন। স্বাধীনতার পর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ গঠিত হলে তিনি ঘাটাইল থানা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার পদে দীর্ঘকাল দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর লাল মুক্তিবার্তা নং ০১১৮০৪০৪৪২,যুদ্ধাহত গেজেট নং ৬০৬, জাতীয় তালিকা নং ২৭৮, বাংলাদেশ গেজেট নং ৪৯৯৫ । তিনি এ যাবৎকাল সকল প্রকার যাচাই-বাছাইএ প্রকৃত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি ও সনদ লাভ করেন । টাঙ্গাইল জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার মোঃ ফজলুল হক (বীর প্রতীক) বলেন, তার মত একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার গেজেট ও সনদ বাতিল করা হলে সত্যিই অত্যন্ত দুঃখজনক। যুদ্ধকালিন কোম্পানি কমান্ডার মোঃ খোরশেদ আলম তালুকদার (বীরপ্রতীক) বলেন, মোঃ আব্দুল বাছেত করিম আমার কোম্পানীর একজন কিশোর সাহসী বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। নগরবাড়িতে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে তিনি গুরুতর আহত হন। কাদেরিয়া বাহিনীর প্রশিক্ষণ কমান্ডার রবিউল আলম গেরিলা বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পর মো. আব্দুল বাছেত করিমের গেজেট ও সনদ বাতিলের বিষয়টি  গভীর ষড়যন্ত্র  ছাড়া কিছুই নয়।  মোঃ আব্দুল বাছেত করিম বলেন, ১৯৭১ সালে ৯ই মার্চ পাকিস্তানি পতাকা পুড়িয়ে দেয়ায় আমাকে কয়েক দিন আত্মগোপনে থাকতে হয়  এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করায় হানাদার বাহিনীরা আমার বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেয়। তিনি একজন প্রকৃত যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা থাকায়  ৬২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল বাছেত করিমের গেজেট ও সনদপত্র বাতিলের আদেশ প্রত্যাহার করে তা পুনর্বহালের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও জামুকার চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য সম্মানিত সদস্যদের নিকট দাবি জানিয়েছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status