বিশ্বজমিন
মুশতাকের মৃত্যু নিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস যা লিখেছে
মানবজমিন ডেস্ক
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, শনিবার, ২:৪০ অপরাহ্ন
সরকারের সমালোচক, লেখক মুশতাক আহমেদের জেলের ভিতরে মৃত্যুতে দেশে ভিন্ন মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সমালোচকরা বলেন, ভিন্ন মতাবলম্বীদের কণ্ঠকে রুদ্ধ করতে ব্যবহার করা হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা নিউ ইয়র্ক টাইমসের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশি রাইটার, ডিটেইনড ওভার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টস, ডাইজ ইন জেল’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশি লেখক মুশতাক আহমেদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের সমালোচনা করে পোস্ট দেয়ার কারণে প্রায় এক বছরের মতো জেলে আটকে রাখা হয়। তিনিসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কার্টুন সহ কন্টেন্ট ছড়িয়ে দেয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে গত বছর অভিযোগ আনা হয়। তাদের লেখা ও কার্টুন বর্তমান সরকারের করোনা মহামারিতে গৃহীত পদক্ষেপের অব্যবস্থাপনা এবং দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেছিল। মুশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। ২০১৮ সালে সরকার এই আইন পাস করে। এর ফলে যেকোনো ব্যক্তি আর্থিক কর্মকা-, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ অথবা দেশের জনশৃংখলা বিরোধী কোনো নিয়ম ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে তল্লাশি, জরিমানা এবং গ্রেপ্তারের মতো বিস্তৃত ক্ষমতা দেয়া হয়েছে সরকারকে।
এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন বলেছে, গত বছর তারা ১৩৮ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য ডকুমেন্ট হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এর মধ্যে আছেন সাংবাদিক, ছাত্র, এবং রাজনৈতিক কর্মী। তারা সরকারের সমালোচনা করেছিলেন। উচ্চ নিরাপত্তাসম্পন্ন কাশিমপুর কারাগারে রাখা হয়েছিল মুশতাক আহমেদকে। ৬ বার তার জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। কারাগারে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যৃর ঘটনায় তদন্ত দাবি করছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। একই সঙ্গে তারা দাবি জানাচ্ছে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে। এই আইনে সাইবার ক্রাইম ও হামলা প্রতিরোধ করার কথা বলা হয়েছে। যে জেলে মুশতাক আহমেদ মারা গিয়েছেন সেখানকার সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেছেন, বৃহস্পতিবার রাতে চেতনা হারান মুশতাক আহমেদ। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কারা হাসপাতালে। কারা প্রহরীরা পরে তাকে পাশ্ববর্তী গাজীপুর শহরে বড় একটি মেডিকেল ফ্যাসিলিটিতে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে পৌঁছামাত্রা তারা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কারাগারের চিকিৎসকরা রিপোর্ট করেছেন যে, মুশতাক আহমেদ কখনো তার স্বাস্থ্যগত সমস্যা নিয়ে কোন অভিযোগ করেননি। তবে তিনি গ্যাসট্রিক ও মাথাব্যথার জন্য ওষুধ সেবন করতেন।
মুশতাক আহমেদের এক কাজিন নাফিসুর রহমান নিজে একজন চিকিৎসক। তিনি বলেছেন, মৃশতাক আহমেদের লাশের ময়না তদন্তের সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেছেন, তার দেহের কোথাও আমি আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাইনি। তিনি আরো বলেছেন, ময়না তদন্তে দেখা গেছে, মুশতাক আহমেদের হার্টের আকার বেড়ে গিয়েছিল বলে মনে হয়েছে। অচেতন হয়ে পড়ার সময় তার রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার ছিল খুব কম।
নিউ ইয়র্ক টাইমস আরো লিখেছে, মুশতাক আহমেদ ও অন্য ১০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযোগে বলা হয়েছে, তারা করোনা ভাইরাস মহামারিকালে ভুল তথ্য এবং গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন। এর মধ্য দিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছড়িয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ আনা হয়েছে, তারা জাতির জনকের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো পোস্ট দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ফেসবুকে মুশতাক আহমেদের সর্বশেষ একটি পোস্টের কারণে গত বছর মে মাসে অভিজাত বাহিনী খুব ভোরে তাকে তুলে নিয়ে যায়। মুশতাকের মৃত্যুকে একটি ধ্বংসাত্মক এবং বিবেকবর্জিত ক্ষতি বলে মন্তব্য করেছেন সাংবাদিকদের অধিকার বিষয়ক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের এশিয়া বিষয়ক সিনিয়র গবেষক আলিয়া ইফতিখার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের প্রফেসর এবং বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, দেশে কথা বলার স্বাধীনতাকে সঙ্কুচিত করতে ব্যবহার করা হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। তিনি আরো বলেন, আমাদেরকে বুঝতে হবে, সরকারের সমালোচনা মোটেও কোন রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ নয়। মুশতাক আহমেদকে দোষী প্রমাণ করা হয়নি। সরকারের সমালোচনা করার অভিযোগে শুধু তাকে ৯টি মাস জেলে কাটাতে হয়েছে। জেলে তার মৃত্যু মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।
নিউ ইয়র্ক টাইমস আরো লিখেছে, বিশ্বে সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এখানে রয়েছে স্বাস্থ্যখাতে দুর্বল অবকাঠামো। এ দেশটিকে সব সময়ই করোনা ভাইরাসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়। করোনা মহামারির সময়ে ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী সরকারের ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগে উদ্বেগ দেখা দেয়। ওদিকে মুশতাক আহমেদ ছাড়াও গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আছেন সুপরিচিত কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর। সরকারের সমালোচনা করে ‘লাইফ ইন দ্য টাইম অব করোনা’ শীর্ষক রাজনৈতিক কার্টুন প্রকাশ করেন তিনি। জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেলের আহ্বান সত্ত্বেও তাকে মুক্তি দেয়া হয়নি। তিনি জেলেই আছেন। ওই প্যানেলটি বলেছেন, মানবিক কারণে কিশোরকে মুক্তি দেয়া উচিত, যেমনটা সরকার কোভিড-১৯ এর সময়ে পূর্ব সতর্কতা হিসেবে কয়েক হাজার বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। তাই স্বাস্থ্যগত অবস্থা বিবেচনা করে তাকে মুক্তি দেয়া উচিত।
ওদিকে কিশোরের ভাই আহসান কবির বলেছেন, ২৩ শে ফেব্রুয়ারি আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছিল আমার ভাইকে। সেখানে উপস্থিত ছিলাম। কিশোর আমাকে বলেছে, ২রা মে এবং ৬ই মে তাকে নির্যাতন করা হয়েছিল।
এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন বলেছে, গত বছর তারা ১৩৮ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য ডকুমেন্ট হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এর মধ্যে আছেন সাংবাদিক, ছাত্র, এবং রাজনৈতিক কর্মী। তারা সরকারের সমালোচনা করেছিলেন। উচ্চ নিরাপত্তাসম্পন্ন কাশিমপুর কারাগারে রাখা হয়েছিল মুশতাক আহমেদকে। ৬ বার তার জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। কারাগারে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যৃর ঘটনায় তদন্ত দাবি করছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। একই সঙ্গে তারা দাবি জানাচ্ছে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে। এই আইনে সাইবার ক্রাইম ও হামলা প্রতিরোধ করার কথা বলা হয়েছে। যে জেলে মুশতাক আহমেদ মারা গিয়েছেন সেখানকার সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেছেন, বৃহস্পতিবার রাতে চেতনা হারান মুশতাক আহমেদ। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কারা হাসপাতালে। কারা প্রহরীরা পরে তাকে পাশ্ববর্তী গাজীপুর শহরে বড় একটি মেডিকেল ফ্যাসিলিটিতে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে পৌঁছামাত্রা তারা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কারাগারের চিকিৎসকরা রিপোর্ট করেছেন যে, মুশতাক আহমেদ কখনো তার স্বাস্থ্যগত সমস্যা নিয়ে কোন অভিযোগ করেননি। তবে তিনি গ্যাসট্রিক ও মাথাব্যথার জন্য ওষুধ সেবন করতেন।
মুশতাক আহমেদের এক কাজিন নাফিসুর রহমান নিজে একজন চিকিৎসক। তিনি বলেছেন, মৃশতাক আহমেদের লাশের ময়না তদন্তের সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেছেন, তার দেহের কোথাও আমি আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাইনি। তিনি আরো বলেছেন, ময়না তদন্তে দেখা গেছে, মুশতাক আহমেদের হার্টের আকার বেড়ে গিয়েছিল বলে মনে হয়েছে। অচেতন হয়ে পড়ার সময় তার রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার ছিল খুব কম।
নিউ ইয়র্ক টাইমস আরো লিখেছে, মুশতাক আহমেদ ও অন্য ১০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযোগে বলা হয়েছে, তারা করোনা ভাইরাস মহামারিকালে ভুল তথ্য এবং গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন। এর মধ্য দিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছড়িয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ আনা হয়েছে, তারা জাতির জনকের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো পোস্ট দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ফেসবুকে মুশতাক আহমেদের সর্বশেষ একটি পোস্টের কারণে গত বছর মে মাসে অভিজাত বাহিনী খুব ভোরে তাকে তুলে নিয়ে যায়। মুশতাকের মৃত্যুকে একটি ধ্বংসাত্মক এবং বিবেকবর্জিত ক্ষতি বলে মন্তব্য করেছেন সাংবাদিকদের অধিকার বিষয়ক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের এশিয়া বিষয়ক সিনিয়র গবেষক আলিয়া ইফতিখার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের প্রফেসর এবং বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, দেশে কথা বলার স্বাধীনতাকে সঙ্কুচিত করতে ব্যবহার করা হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। তিনি আরো বলেন, আমাদেরকে বুঝতে হবে, সরকারের সমালোচনা মোটেও কোন রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ নয়। মুশতাক আহমেদকে দোষী প্রমাণ করা হয়নি। সরকারের সমালোচনা করার অভিযোগে শুধু তাকে ৯টি মাস জেলে কাটাতে হয়েছে। জেলে তার মৃত্যু মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।
নিউ ইয়র্ক টাইমস আরো লিখেছে, বিশ্বে সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এখানে রয়েছে স্বাস্থ্যখাতে দুর্বল অবকাঠামো। এ দেশটিকে সব সময়ই করোনা ভাইরাসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়। করোনা মহামারির সময়ে ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী সরকারের ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগে উদ্বেগ দেখা দেয়। ওদিকে মুশতাক আহমেদ ছাড়াও গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আছেন সুপরিচিত কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর। সরকারের সমালোচনা করে ‘লাইফ ইন দ্য টাইম অব করোনা’ শীর্ষক রাজনৈতিক কার্টুন প্রকাশ করেন তিনি। জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেলের আহ্বান সত্ত্বেও তাকে মুক্তি দেয়া হয়নি। তিনি জেলেই আছেন। ওই প্যানেলটি বলেছেন, মানবিক কারণে কিশোরকে মুক্তি দেয়া উচিত, যেমনটা সরকার কোভিড-১৯ এর সময়ে পূর্ব সতর্কতা হিসেবে কয়েক হাজার বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। তাই স্বাস্থ্যগত অবস্থা বিবেচনা করে তাকে মুক্তি দেয়া উচিত।
ওদিকে কিশোরের ভাই আহসান কবির বলেছেন, ২৩ শে ফেব্রুয়ারি আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছিল আমার ভাইকে। সেখানে উপস্থিত ছিলাম। কিশোর আমাকে বলেছে, ২রা মে এবং ৬ই মে তাকে নির্যাতন করা হয়েছিল।