বাংলারজমিন

একটি ঘরের আকুতি বৃদ্ধা মেমরাজের

মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, শনিবার, ১০:৫১ পূর্বাহ্ন

একহাত নেই। শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা রোগ। শেষ বয়সে চলাফেরার শক্তির অনেকটা হারিয়ে ফেলেছেন। দুমুঠো অন্নের জন্য তাকিয়ে থাকতে হয় মানবিক মানুষের দিকে। নেই মাথাগোঁজার ঠাইটুকুও।  বৃদ্ধা মেমরাজ বিবি শেষ বয়সে বসবাস করছেন অন্যের জায়গায়। ছোট একটি খুপড়ি ঘরে। তাও আবার দুর্বিষহ অবস্থা। তবুও নিরুপায় হয়ে সেখাইনেই বাস করতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি।
বৃদ্ধা মেমরাজ বিবির বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর ইউনিয়নের বেলঘর গ্রামে। কিন্তু সেখানে তার ভিটেবাড়ি কিছুই নেই। নিকটাত্মীয় বলতে ভাই ছাড়া কেউই নেই তার। তরুণী বয়সেই স্বামী-সন্তানরা ফেলে যায় এই বাউল শিল্পীকে। এরপর থেকে শিল্পী পেশাকে তিনি বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মিইয়ে যায় তার সেই দরাজ কণ্ঠ। বয়সের ভারে হাঁটাচলা তার পক্ষে কষ্টকর। এভাবেই কষ্টে দিন পার করছেন ভূমিহীন বৃদ্ধা মেমরাজ। সরেজমিনে গিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। দেখা গেছে, বেলঘর গ্রামে ছয় হাত দৈর্ঘ আর পাঁচ হাত প্রস্থের একটি ছোট ঘরে বাস করছেন তিনি। সেখানে এলোমেলো পুরনো কাপড়-চোপড়। এককোণে চুলা, আর চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাড়ি-পাতিল। এসব নিয়েই তার একাকি সংসার। কষ্টের জীবনের কথা জানতে চাইলে অশ্রুভেজা চোখে মেমরাজ বিবি  বলেন, ‘বাবারে খুব কষ্ট করি। ভাইয়ের জায়গায় একটা একচালা ঘরে থাকি, এই শীতের রাইতে (রাতে) বাতাসে গাও, আত (হাঁত) ও পাও ঠা-া ওইয়া যায়। থড়থড় কইর‌্যা কাঁপি। অসুখ-বিসুখ লইয়া বাড়ি বাড়ি যাইতে পারি না। টেকার  অভাবে ওষুধ (ঔষধ) কিনতে পারি না। এই জীবন আর ভাল লাগে নারে বাবা। একটা সরকারি ঘর যদি পাইতাম হেই ঘরে শান্তি তে মরতে পারতাম। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভাইয়ের সহানুভূতি নিয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে মেমরাজকে? ১৫ বছর ধরে ভাইয়ের বাড়িতে আশ্রয়ে ছিলেন মেমরাজ। কিন্তু নানা কারণে এখন আর ঠাঁই হচ্ছে না সেখানে। স্থানীয় বাসিন্দা আলী মিয়া বলেন, ‘আসলেই মেমরাজ বিবির কোন জায়গা নেই। তাই সরকারের কাছে আমাদের দাবি মেমরাজ বিবি কে যেন  জায়গা সহ একটা ঘর উপহার দেয়া হয়।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status