বিশ্বজমিন

মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট

খাসোগি হত্যার অনুমোদন দিয়েছিলেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স

মানবজমিন ডেস্ক

২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, শনিবার, ৯:৪৩ পূর্বাহ্ন

ঠিক যেমনটা বলা হচ্ছিল তাই ঘটলো। সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান তার দেশের ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে ২০১৮ সালে জীবন্ত ধরে নিতে অথবা হত্যার অনুমোদন দিয়েছিলেন। না, এসব কারো বানানো কথা নয়। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা প্রকাশিত চার পৃষ্ঠার রিপোর্টে একথা বলা হয়েছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছেন যে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যা করা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। হত্যাকা-ের পরপরই আঙ্গুল উঠেছিল ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের দিকে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও তদন্তে তাই বলেছিল। সৌদি আরবের বেশ কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবরোধ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু তা থেকে রক্ষা পান ক্রাউন প্রিন্স। কারণ, তাকে ব্যবহার করে সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল রেখে ইরানকে শায়েস্তা করতে চেয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এবার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নতুন প্রশাসন নতুন রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এতে আরো বলা হয়, সাংবাদিক জামাল খাসোগি সৌদি আরবের নাগরিক। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নীতির কড়া সমালোচনা করে কলাম লিখতেন ওয়াশিংটন পোস্টে। ২০১৮ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের কনস্যুলেটের ভিতরে একটি সৌদি টিম তাতে হত্যা করে দেহ টুকরো টুকরো করে। তারপর সেই দেহাবশেষ কি করা হয়েছে তার হদিস নির্দিষ্ট করে আজও কেউ বলতে পারেন না। ওদিকে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে নতুন গোয়েন্দা রিপোর্ট প্রকাশ করা হলেও এতে কোনোভাবে ক্রাউন প্রিন্স জড়িত থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। তারা আগের মতোই বিবৃতিতে বলেছে, দুর্বৃত্তদের একটি গ্রুপ হায়েনার মতো অপরাধ করেছে খাসোগিকে হত্যা করে।

কিন্তু জো বাইডেন পরিষ্কার করেছেন, রাজনৈতিক কোন প্রতিপক্ষকে হত্যা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এমন নীতির অধীনে ৩৫ বছর বয়সী ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে সম্পর্ক হবে তার। উল্লেখ্য, কয়েক দশক ধরে বিশ্বে সর্বোচ্চ তেল রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরব। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের শক্ত প্রতিপক্ষ ইরানের বিরুদ্ধে সৌদি আরবকে প্রয়োজন যুক্তরাষ্ট্রের। তা সত্ত্বেও টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বাইডেন বলেছেন, তিনি সৌদি আরবের বাদশা সালমানে সঙ্গে কথা বলেছেন। তাকে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে সৌদি আরবকে। স্প্যানিশ ভাষার টেলিভিশন ইউনিভিশনকে বাইডেন বলেন, আমি তাকে (সৌদি বাদশা) পরিষ্কার করেছি যে, নিয়ম পরিবর্তন হচ্ছে। এখন থেকে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘোষণা করছি আমরা।

খাসোগি হত্যার কারণে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র শুক্রবার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ওইসব ব্যক্তির ভিসা বন্ধ, যারা খাসোগি হত্যায় জড়িত। এ ছাড়া সাবেক গোয়েন্দা বিষয়ক উপপ্রধান সহ অন্যদের বিরুদ্ধে দেয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে। তাদের সঙ্গে কোনো রকম ব্যবসা বাণিজ্য এবং যোগাযোগ রাখা নিষিদ্ধ থাকবে মার্কিনিদের জন্য। এ ছাড়া সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি বাতিল করার কথা বিবেচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা বলেছে, সৌদি আরবে মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। তাই সেখানে প্রতিরক্ষা বিষয়ক অস্ত্র বিক্রি ভবিষ্যতে সীমিত করা হবে। খাসোগি হত্যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স প্রকাশিত চার পৃষ্ঠার রিপোর্টে বলা হয়েছে, সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে জীবিত ধরে নিতে অথবা হত্যা করতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের অপারেশন অনুমোদন দিয়েছিলেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status