প্রথম পাতা
অবৈধ বাংলাদেশিদের বৈধতা দিতে বাইডেন প্রশাসনের প্রতি মোমেনের আহ্বান
কূটনৈতিক রিপোর্টার
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, শুক্রবার, ৯:৩২ অপরাহ্ন
অবৈধ অভিবাসীদের পর্যায়ক্রমে বৈধতা প্রদানের সহনশীল উদ্যোগের জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। একই সঙ্গে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা ডকুমেন্টের বিবেচনায় অবৈধ বা অনিয়মিত অবস্থায় আছেন তাদের বৈধতা দিতে মার্কিন প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের কাছে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরে আনডকুমেন্টড বাংলাদেশিদের বৈধকরণের আইনি প্রক্রিয়া সহায়তা দিতে মার্কিন আইন প্রণেতা (কংগ্রেসউইমেন) গ্রেস মেঙ্গের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন মন্ত্রী। ঢাকার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত মঙ্গলবার থেকে যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা মন্ত্রী মোমেনের সঙ্গে কংগ্রেসউইমেন গ্রেস মেঙ্গের বৈঠক হয় বুধবার। সেই বৈঠকে বাংলাদেশ কমিউনিটির কনস্যুলার সংক্রান্ত সুবিধাদির বিষয়ে আলোচনা হয়। কারণ আইন প্রণেতা গ্রেস মেঙ্গ পার্লামেন্টে নিউ ইয়র্কের যে এলাকার প্রতিনিধিত্ব করেন তার উল্লেখযোগ্য অংশই হচ্ছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন ভোটার। তাছাড়া তিনি মার্কিন কংগ্রেসে সর্বদা বাংলাদেশ ককাসের সক্রিয় সদস্য। ডেমোক্রেট দলীয় ওই পার্লামেন্টারিয়ানের সঙ্গে আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কথা বলেন। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বন্ধন কীভাবে আরো জোরদার করা যায় তা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেন তারা। মোমেন মেঙ্গকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভাবনীয় আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন দেখতে মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর আয়োজনে অংশ নিতে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান। বলেন, মার্কিন সংসদ সদস্যদের একটি দলের সঙ্গে আপনি বাংলাদেশ সফর করতে পারেন। সেই সুযোগে আপনি মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অবস্থাও সরজমিন দেখতে পাবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোভিড-১৯ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সাফল্যের পাশাপাশি দেশে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য বিদ্যমান অনুকূল পরিবেশ সম্পর্কে মার্কিন আইনপ্রণেতা মেঙ্গকে অবহিত করেন। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের মেক্সিকো সীমান্তে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষায় থাকা ২৫ হাজার অভিবাসন প্রত্যাশীকে দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। অভিবাসন আদালতের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া সম্পাদন করা হবে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি। অভিবাসীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি রয়েছেন। তবে ঠিক কতো বাংলাদেশি রয়েছেন তা খোলাসা করেনি কেউই। স্মরণ করা যায়, যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রথম দিনেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্থোনিও ব্লিনকেনের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করে মোমেন। সেই ফোনালাপে রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য একজন রোহিঙ্গা বিষয়ক দূত নিয়োগের আহ্বান জানান তিনি। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেনের সঙ্গে তার সরাসরি বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারির কারণে তা ফোনালাপে সীমাবদ্ধ করা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে নেতৃত্বের ভূমিকায় আসা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করতে উদ্যোগী হওয়া। যাতে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের ওপর যথেষ্ট রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা সম্ভব হয়। মিয়ানমারের ওপর কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ এবং দেশটিকে দেয়া জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয়ার কথাও বলেন মোমেন।