বিশ্বজমিন

যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনকার্ড ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলেন বাইডেন

মানবজমিন ডেস্ক

২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, বৃহস্পতিবার, ১১:২১ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ডধারীদের জন্য সুখবর দিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প করোনা মহামারির সময় এসব মানুষের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ড ইস্যু স্থগিত করেছিলেন গত বসন্তে। বলেছিলেন, তা বহাল থাকবে ২০২০ সালের শেষ পর্যন্ত। তিনি করোনা ভাইরাসের নামে এই অবস্থান নিলেও ক্ষমতার শেষ সময়ও ওই আদেশ প্রত্যাহার করেননি। উল্টো ৩১ শে ডিসেম্বরে তার ওই নির্দেশ মার্চের শেষ পর্যন্ত বহাল করেন। কিন্তু বুধবার ট্রাম্পের নির্দেশ প্রত্যাহার করলেন বাইডেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ অভিবাসীরা গ্রিন কার্ডের অনুমোদন পেয়েছেন এমন ব্যক্তিরা গ্রিন কার্ড সংগ্রহ করে সেখানে প্রবেশ করতে পারবেন। আইনজীবীরা বলেছেন, ট্রাম্প এসব মানুষকে ‘ব্লক’ করে রাখার কারণে তারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারছিলেন না। বার্তা সংস্থা এপির উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর দিয়েছে অনলাইন ফ্রান্স ২৪।

এতে আরো বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারে অভিবাসীদের একটি ঝুঁকি হিসেবে দেখেছেন ট্রাম্প। তাই প্রোক্লেমেশন ১০০১৪ এবং ১০০৫২ ইস্যুর মাধ্যমে এমন অভিবাসী শ্রমিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ আটকে দেন। তিনি নির্দেশ দেন গ্রিন কার্ড ইস্যু করা স্থগিত রাখতে। এর ফলে দীর্ঘ সময় যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ উপায়ে কাজ পাওয়ার পর, গ্রিন কার্ডের অনুমোদন পাওয়ার পরও বিভিন্ন দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষকে সেই গ্রিন কার্ড দেয়া হয়নি। ট্রাম্পের ওই স্থগিতাদেশ জো বাইডেন প্রত্যাহার করার পর এসব মানুষ এখন স্বস্তি পাবেন। ট্রাম্পের ওই আদেশ প্রত্যাহার করে বুধবার বাইডেন বলেছেন, বৈধ অভিবাসীদের জন্য দরজা বন্ধ করে দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য সুবিধাজনক নয়। পক্ষান্তরে এতে যুক্তরাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে সুনির্দিষ্টভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এমন ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারছেন না। এ ছাড়া বৈধভাবে স্থায়ী আবাসিক মর্যাদা আছে এমন অধিবাসীরাও তাদের পরিবারের সঙ্গে যুক্ত হতে পারছেন না। এ ছাড়া এমন স্থগিতাদেশের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কারখানাগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব কারখানা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের মেধাবীদের নিয়োগ দিয়ে থাকে।

আমেরিকান ইমিগ্র্যান্ট লয়ার্স এসোসিয়েশনের মতে, করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের বাজেট অর্থবছরে এ সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। এতে কমপক্ষে এক লাখ ২০ হাজার পরিবারভিত্তিক প্রিফারেন্স ভিসা পাননি আবেদনকারীরা । কোনো অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক না হওয়া পর্যন্ত তার স্ত্রী বা ২১ বছরের কম বয়সী সন্তানের জন্য ভিসার আবেদন করতে পারেন না এবং তাদের জন্য ভিসার আবেদন না করলে পরিবারের এসব সদস্যকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে নিতে পারেন না। কোনো বিদেশি ব্যক্তি যদি স্বাস্থ্যসেবার মতো পেশাদার হন এবং তাতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থ সুবিধা পাওয়া যাবে বলে বিবেচনা করা হয়, তাহলেই তাকে চাকরিভিত্তিক ভিসা দেয়া হয়। এমন অভিবাসীদেরও যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দেয়া আটকে দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্র সবার কাছেই আকর্ষণের জায়গা। মাঝে মাঝেই তারা স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য গ্রিনকার্ড দিয়ে থাকে লটারির মাধ্যমে। এ জন্য এক কোটি ৪০ লাখ আবেদনকারীর মধ্য থেকে যে কয়েক হাজার মানুষ ভিসা লটারি জিতেছিলেন তাদের জন্যও ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন ওই নির্দেশের মাধ্যমে। ট্রাম্পের ওই নির্দেশে গ্রিন কার্ড বা ভিসা আটকে গিয়েছে হাজার হাজার মানুষের। এমন হাজারো মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক ইমিগ্রেশন বিষয়ক আইনজীবী কার্টিস মরিসন। তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের ভিসা আটকে দেয়ার ফলে শুধু পরিবারভিত্তিক ৪ লাখ ৩৭ হাজার মানুষ ভিসা পাননি। কিন্তু বাইডেন ওই নির্দেশ প্রত্যাহার করার ফলে এখন আমার ক্লায়েন্টদের জন্য আমি উদ্বেলিত। কারণ, তারা এখন যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারবেন। তবে প্রশাসন যদি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তাহলে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কয়েক বছর সময় লেগে যেতে পারে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status