দেশ বিদেশ
চীনের পর জাপানের সঙ্গে ‘কৌশলগত’ সম্পর্কে আগ্রহী ঢাকা, আজ বৈঠক
কূটনৈতিক রিপোর্টার
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৯:০২ অপরাহ্ন
চীনের পর এবার জাপানের সঙ্গে সম্পর্ককে ‘কৌশলগত অংশীদারিত্ব’-এ উন্নীত করতে আগ্রহী বাংলাদেশ। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর পাশাপাশি মানবসম্পদ উন্নয়নে সহযোগিতার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় ওই সম্পর্কের রূপান্তরের আশা করছে ঢাকা। দুই বছর বিরতির পর আজ বাংলাদেশ ও জাপানের পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বাধীন ফরেন অফিস কনসালটেশন বা এফওসিতে এ নিয়ে আলোচনা হবে। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। কর্মকর্তারা জানান, জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক বিস্তৃত হয়ে এখন তা সমন্বিত অংশীদারত্বের পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই সহযোগিতাকে বাংলাদেশ কৌশলগত অংশীদারত্বে নিয়ে যেতে আগ্রহী। দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ গত বছরের শেষদিকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সইয়ের জন্য যৌথ সমীক্ষা চালানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। এবারের বৈঠকে এফটিএ বিষয়ে আলোচনা হবে। বাংলাদেশ মনে করে, এফটিএ সই হলে বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ বাড়বে। সেইসঙ্গে বাড়বে দু’দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যও। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিবের তৃতীয় এ বৈঠক হবে ভার্চ্যুয়াল। এতে জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ উপমন্ত্রী হিরোশি সুজুকি টোকিও’র প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন। দুই দেশের মধ্যকার প্রথম পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক ২০১৬ সালে ঢাকায় ও দ্বিতীয় বৈঠক ২০১৮ সালে টোকিওতে হয়েছিল। দুই পররাষ্ট্র সচিবের আলোচনায় আঞ্চলিক পরিস্থিতি ও ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিগ-বি নামে পরিচিত জাপানের বঙ্গোপসাগরীয় শিল্পপ্রবৃদ্ধি অঞ্চলের প্রসঙ্গ আসতে পারে। বিশেষ করে চীন যখন অঞ্চল ও পথের উদ্যোগে (বিআরআই) বাংলাদেশকে যুক্ত করেছে, সেখানে মাতারবাড়ী প্রকল্পে যুক্ত বিগ-বি প্রসঙ্গ আলোচনায় আসবে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের (আইপিএস) সঙ্গে জাপান ও ভারত যুক্ত থাকায় আলোচনায় ওই বিষয়টি সংযুক্তির প্রেক্ষাপট গুরুত্ব পাবে। এই প্রেক্ষাপটে বঙ্গোপসাগর ঘেঁষে গড়ে ওঠা মাতারবাড়ী প্রকল্প ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মিয়ানমারসহ আসিয়ানের দেশগুলোর সঙ্গে যুক্ত করার জন্য বিশেষ সুযোগের বিষয়েও আলোচনা হতে পারে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও শান্তি-স্থিতিশীলতার বিবেচনায় যেকোনো উন্নয়ন কৌশলে যুক্ত হতে বাংলাদেশ রাজি। সেটা পূর্ব কিংবা পশ্চিম, যার উদ্যোগই হোক না কেন। উল্লেখ্য, আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধানে জোর দেবে ঢাকা। বিশেষ করে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে জাপানের আরো জোরালো ভূমিকা চাইবে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে যাতে মিয়ানমারের ওপর জাপান চাপ দেয়, বাংলাদেশ সেই অনুরোধ জানাবে।