প্রথম পাতা

মার্চের শুরুতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের

স্টাফ রিপোর্টার

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, বুধবার, ৯:৩৬ অপরাহ্ন

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে ফেব্রুয়ারির শেষে বা মার্চের শুরুতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ আহ্বান জানান পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করে সংগঠনটি। পরে সচিবালয়ের ফটকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা। শাহবাগে কর্মসূচি পালনের কথা থাকলেও সেখানে আগে থেকেই কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেন মুক্তিযুদ্ধের সন্তান প্রজন্ম। এ কারণে কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। এ সময় নুর বলেন, আমাদের শিক্ষামন্ত্রী যে অবিবেচনামূলক সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সেটি ছাত্র সমাজ প্রত্যাখ্যান করছে। তার মুখ থেকে এই সময় এই সিদ্ধান্ত আশা করিনি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশের বড় একটা অংশ যাদের পরীক্ষা চলছে। হঠাৎ করে শিক্ষামন্ত্রী বললেন, পরীক্ষা হবে না। এটা কী ছাত্রদের ওপর শিক্ষামন্ত্রীর রাগ যে পরীক্ষা হবে না। তাদের কী পাস করতে হবে না? চাকরিতে যেতে হবে না? একটা দেশের শিক্ষামন্ত্রী এইভাবে সিদ্ধান্ত নেন কীভাবে?
ডাকসু’র সাবেক এই ভিপি বলেন, কিছুদিন আগে আপনারা দেখেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রমিক লীগের নেতারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছেন, আন্দোলন থামাতে বলেছেন। তারা শুনেননি। আন্দোলন না থামায় রাতে তাদের ওপর নারকীয় হামলা চালিয়েছে। খুঁজে খুঁজে বেদম প্রহার করেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও আঘাতের শিকার হয়েছেন। দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা অপরাধী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করুন। জাহাঙ্গীরনগর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন হলের তালা ভাঙছে। তখন শিক্ষামন্ত্রী টেনশনে পড়ে গেছেন, হায় হায় আমরা বন্ধ রাখছি, তারা তো আন্দোলন শুরু করে দিয়েছে। তখন তিনি তড়িঘড়ি করে ঘোষণা দিলেন ক্লাস-পরীক্ষা কিছু হবে না। এটা কী কাদের মির্জার মতো পেয়েছেন? কথা নাই, বার্তা নাই- নোয়াখালীতে হরতাল। কাদের মির্জা ও আওয়ামী লীগের সার্কাসে একজন সাংবাদিক বন্ধু নিহত হলেন। সাংবাদিকরা না দাঁড়ালেও আমরাই দাঁড়িয়ে গিয়েছিলাম। বোরহান হত্যার বিচার চেয়েছি। দেশে এতগুলো সাংবাদিক সংগঠন, কোথায় তারা? কেউ তো দাঁড়ালো না। আওয়ামী লীগ, বিএনপি আসবে- যাবে, গণমাধ্যম কিন্তু টিকে থাকবে।
নুর বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত দিলো ১৭ই মে হল খুলবে। দেখেন বাসে ভরে লোক যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের সমাবেশে হাজার হাজার লোকের উপস্থিতিতে বক্তব্য দিচ্ছেন। তখন করোনার কথা চিন্তা করেন না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে তাদের মায়া উতলে উঠেছে। যখন করোনার কারণে সবাই ভীত ছিল। তখন ‘বেহুদা কমিশন’ নির্বাচন নিয়েছে। তারা বুঝতে পেরেছে তারা যেভাবে দেশ শাসন করছে এটা ছাত্র সমাজ মেনে নেবে না। তাদের আতঙ্ক যে ছাত্ররা যদি ফুঁসে ওঠে তাহলে তাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। আমি শিক্ষামন্ত্রীকে আশ্বস্ত করছি ছাত্ররা আপনাদের গদি ধরে টান দেবে না। আপনারা তো সেই ১৪ সাল থেকেই ভোটারবিহীনভাবে ক্ষমতায় আছেন। অযথা আতঙ্কে ভুগার কারণ নাই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেন। ভয়ের কিছু নাই। ভাঁওতাবাজি করে আর বন্ধ রাখবেন না। যে পরীক্ষাগুলো চলছিলো সেগুলো আবার চালু করা হোক। আমি সরকারকে বলবো, আপনারা সুবিবেচনা করবেন। আপনারা ফেব্রুয়ারির শেষে খুলবেন নাকি মার্চের শুরুতে খুলবেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।
নুরের আগে মানববন্ধনে ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, বাংলার ছাত্রসমাজ শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছে। সরকার মনে করেছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন তাদের জন্য হুমকির কারণ হতে পারে। যে কারণে চক্রান্তের নীলনকশা অনুযায়ী ক্যাম্পাস বন্ধ রাখা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই সরকার কোনো কিছুকেই ভয় পায় না, তারা শুধু ছাত্র আন্দোলনকে ভয় পায়। ছাত্র আন্দোলন দমিয়ে রাখার জন্যই ক্যাম্পাস খুলে দেয়া হচ্ছে না।
মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সচিবালয় ঘেরাও করতে যান অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন- ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান, সংগঠনটির ঢাবি শাখার সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাসহ ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status