অনলাইন

ফেসবুকে একুশে ফেব্রুয়ারি

নির্ভীক চিত্তে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ব্যতীত ভাষার ছন্দ, কারুকাজ, অলংকরণ সব অর্থহীন

তারিক চয়ন

২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, সোমবার, ১২:০৭ অপরাহ্ন

রবিবার ছিল ২১ ফেব্রুয়ারি তথা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। যে দিনটিতে মুখের ভাষার জন্য প্রাণ দিয়ে বিরল ইতিহাস গড়েছিল বাঙালি। মহান একুশের শহীদদের আত্মত্যাগ বিশ্বসভায় পেয়েছে অনন্য মর্যাদা। বাঙালির গর্বের মহিমান্বিত সেই দিনটি বাংলাদেশের পাশাপাশি সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়। কিন্তু ভাষার জন্য জীবন দেয়া মানুষেরা কি নিজেদের সেই 'প্রিয় বাংলা' ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে পারছে? এমন প্রশ্ন এসেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে বিশেষত ফেসবুকে। অগুণিত মানুষ পোস্ট করেছেন এ নিয়ে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান লিখেছেনঃ একুশ মানে মাথা নত না করা; তবে মাথা নত না করার জন্য 'মাথা' থাকতে হয়! নির্ভীক চিত্তে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ব্যতীত ভাষার ছন্দ, কারুকাজ, অলংকরণ, ... এসব কেবলই অর্থহীন।

মাতৃভাষা-ই শিক্ষার মূল মাধ্যম হওয়া উচিত উল্লেখ করে তিনি আরো লিখেছেনঃ ইংরেজি ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য ভাষা শেখা দরকার, তবে মাতৃভাষাই শিক্ষার মূল মাধ্যম হওয়া জরুরি; এর অন্য কোন বিকল্প নেই।

মাহমুদ নোবেল নামের একজন লিখেছেনঃ আপনি জানেন কি?
এই যে শহীদ মিনারে পুষ্পার্পণ করে আসেন। সেই শহিদ মিনারের 'শহীদ'  আরবি শব্দ, 'মিনার' ফারসি শব্দ। আর 'পুষ্প ' সংস্কৃত শব্দ।এই শব্দগুলোকে বাংলা ভাষায় মেনে নিয়েছে যে প্রতিষ্ঠান -'বাংলা একাডেমি' সেই বাংলা একাডেমির 'একাডেমি' আবার ইংরেজি শব্দ।এই যে এতগুলো বিদেশী শব্দের ভীড়ে আমি দুয়েকটা ইংরেজি  বলতে কমফোর্ট ফিল করি এটা কারও সহ্য হয় না।
এখন আবার বলবেন, আরে মিয়া ইংরেজি ঢুকাইও না কমফোর্ট বলছো কেন? আরাম বল।
এদিকে 'আরাম' আবার ফারসি শব্দ!

ফেসবুক প্রায় সব বিষয় নিয়েই 'মিম' হচ্ছে আজকাল। ২১ ফেব্রুয়ারি সামির হাসান নামে একজন যেমন শেয়ার করেছেনঃ "জীবন দিলাম বাংলার জন্য, আর শালা চাকরি হয় না ইংরেজির জন্য!"

শুধু মিম-ই নয়, শেয়ার হয়েছে অনেক কবিতার পঙক্তি আর উক্তি-ও। যেমনঃ "বাংলা ভাষার এই এক মাধুর্য, 'আসছি' বলে স্বচ্ছন্দে চলে যাওয়া যায়!" (সুভাষ মুখোপাধ্যায়)

হালের প্রতি একুশের মতো অভ্র কীবোর্ড এর প্রতিষ্ঠাতা মেহেদি হাসান খানকে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি দেবার জোরালো দাবি জানিয়েছেন অনেকেই। তাসনিম কবীর লিখেছেনঃ

"মেহেদির এই আবিষ্কারের ফলে সরকারের কোটি-কোটি টাকা বেঁচেছে। সমস্ত সরকারি দপ্তরগুলোতে অভ্র ব্যবহৃত হয়। লেখা হচ্ছে সরকারি ফাইলে, তৈরি হচ্ছে আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্র। কিন্তু এত কিছুর মাঝেও অভ্রর আবিষ্কারের কথা কেউ-ই তেমন বলেনা। ছেলেটাও যে কিছুই চায়নি এই আবিষ্কারের পরিবর্তে। না অর্থ, না পরিচিতি। চিরকাল প্রচারবিমুখ, বিনয়ী ছেলেটা তাই এত বড় একটা কাজ করেও রয়ে গেল প্রচারের আলোর বাইরে! হায় স্বদেশ! পেলো না কোনো সরকারি স্বীকৃতি বা পুরষ্কারও।"
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status