মত-মতান্তর
সুশাসন, ‘জেলা শাসক’ ও ‘জেলা প্রশাসক’
ড. শরীফ আস্-সাবের
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, শনিবার, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন
দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশে একটি বিতর্ক বেশ চাউর হয়ে উঠেছে- জেলার প্রধান নির্বাহী অর্থাৎ ডেপুটি কমিশনার বা ডিসি’র পদবীটি বাংলায় কি হওয়া উচিত। এ নিয়ে জনগণের মধ্যেও একটি ধোঁয়াশা রয়েছে। এই ধরনের বিতর্ক দেশের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা এবং স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা অবশ্য বলা মুশকিল। তবে বিষয়টির একটু গভীরে যাওয়া দরকার।
অনেকে মনে করেন, ‘প্রশাসক’ শব্দটিতে ঔপনিবেশিক কিংবা সামন্ততান্ত্রিক গন্ধ আছে। অনেকের কাছে এই শব্দের প্রয়োগ জেলা পর্যায়ের অপরাপর সরকারি কর্মকর্তার গুরুত্বকে খাটো করে দেয়। কেউ আবার এই পদে কর্মরত কতিপয় কর্মকর্তার উন্নাসিক, নীতিবিবর্জিত ও দাম্ভিক আচরণের জন্য এই পদ এবং পদবী দু’টিরই অবসান চান!
যাই হোক, প্রতিটি জেলায় সরকারের একজন মুখ্য প্রতিনিধি থাকা আবশ্যক। ‘ডেপুটি কমিশনার’/‘জেলা প্রশাসক’ সেই দায়িত্বটি পালন করে থাকেন। জেলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে তিনি জেলা পর্যায়ের সকল বিভাগের সাথে সমন্বয় সাধন করেন। জেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সকল উন্নয়ন ও প্রশাসনিক কর্মকান্ডের দেখভালের দায়িত্বও তাঁর উপর বর্তায়।
জেলার প্রধান নির্বাহী ও সমন্বয়ক হিসাবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জেলা পর্যায়ের এই কর্মকর্তা একাধারে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা রেভিনিউ কালেক্টর এবং বিভাগীয় কমিশনারের ডেপুটি (ডেপুটি কমিশনার) হিসাবেও কাজ করে থাকেন।
অনেকেই ‘প্রশাসক’ এবং ‘শাসক’ শব্দ দু’টিকে একটু ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখেন। অভিধানে ‘ম্যাজিস্ট্রেট’ শব্দের বেশ ক’টি অর্থের মধ্যে একটি হচ্ছে ‘শাসক’। সেই সুবাদে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ‘জেলা শাসক’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। জেলা শাসক/প্রশাসক জেলায় সরকারের নির্বাহী বিভাগকে প্রতিনিধিত্ব করেন।
আবার, নির্বাহী বিভাগের আরেক নাম শাসন বিভাগ এবং ইংরেজি ‘গভর্নর’ ও ‘গভর্ন্যান্স’ শব্দ দুইটির অর্থ যথাক্রমে ‘শাসক’ ও ‘শাসন’। তবে, নির্বাহী বা শাসন বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন এই পদটির আভিধানিক অর্থ যাই হোক না কেন, আমি মনে করি, দুই বাংলায় ব্যবহৃত পদবীর (শাসক এবং প্রশাসক) প্রতিটিই এসেছে একেকটি প্যাকেজ হিসাবে, যা এই পদধারীদের বিবিধ সত্বা, ক্ষমতা ও দায়িত্বের একীভূত বা সামগ্রিক প্রতিফলন বৈ অন্য কিছু নয়।
এসবের আলোকে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ‘শাসক’ শব্দের ব্যবহার রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে পুরোপুরি অবান্তর বা অসাযুজ্যপূর্ণ না হলেও আমি মনে করি, এই শব্দটির মূলভাব তুলনামূলকভাবে কিছুটা অনমনীয় ও গুরুভার। গণতান্ত্রিক প্রেক্ষাপটে তাই ‘শাসক’ কথাটির ব্যবহারের যৌক্তিকতা নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা করার সময় হয়তো হয়ে এসেছে।
পক্ষান্তরে, ‘প্রশাসক’ শব্দটি এসেছে ‘প্রশাসন’ থেকে যার উৎস ‘শাসন’ হলেও এর প্রচলিত ভাবার্থ খানিকটা আলাদা। চলমান পরিপ্রেক্ষিতে জনগণের সেবক এবং জেলা প্রশাসনের প্রধান হিসাবে ‘প্রশাসক’ শব্দের ব্যবহারটি ভুল কিংবা অসঙ্গতিপূর্ণ নয়, যা প্রচলিত বিধি-বিধান ও নিয়ম-নীতির বাস্তবায়ন বা প্রয়োগের উপর গুরুত্ব আরোপ করে। ‘শাসক’ কথাটির সঙ্গে ‘ম্যাজিস্ট্রেসি’ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত সম্পৃক্ততা থাকলেও ‘প্রশাসক’ শব্দটি এককভাবে ম্যাজিস্ট্রেট, কালেক্টর কিংবা ডেপুটি কমিশনারের সরাসরি প্রতিশব্দ নয়।
এই আলোচনায় বাংলাদেশ সরকারের সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি বেশ প্রাসঙ্গিক এবং প্রণিধানযোগ্য। খুব বেশি দিন আগের কথা নয় যখন মাঠ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রক ‘সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের’ নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়’। এ ছাড়া, ব্যবসা প্রশাসন থেকে শুরু করে ওষুধ প্রশাসন, লোক প্রশাসন কিংবা ভূমি প্রশাসন - সকল ক্ষেত্রেই ‘প্রশাসন’ শব্দটির যথাযথ প্রয়োগ ও ব্যবহার হচ্ছে নিঃসংকোচে। একই সূত্রে সরকারিভাবে জেলা ‘প্রশাসন’ ও ‘প্রশাসক’ শব্দের ব্যবহারও বেমানান বা অগ্রহণযোগ্য নয়।
পরিশেষে, পৃথিবীর তাবৎ দেশের মত বাংলাদেশের সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ভালো মন্দ দুইই আছে। জেলা প্রশাসকরাও এই ভালো মন্দের বাইরে নন। বিভিন্ন সময়ে কতিপয় জেলা প্রশাসকের দায়িত্বজ্ঞানহীন কীর্তিকলাপ জনসাধারণ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করে, যা এই পদ এবং পদবীর মর্যাদা ও ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলে।
তবে, পদ, পদবী কিংবা অবস্থান একজন সরকারি চাকুরের ব্যক্তিগত চরিত্র কিংবা আদব কায়দার নিয়ামক নয়। শেক্সপিয়র সাহেব বলেছিলেন, ‘নামে কি বা আসে যায়...?’ আর কথায় আছে, ‘জন্ম হোক যথা তথা, কর্ম হোক ভালো’। তাই, কিছুসংখ্যক পদধারীর ব্যক্তিগত চারিত্রিক দুর্বলতা, নৈতিক স্খলন অথবা অদক্ষতার কারণে কোন বিশেষ পদ কিংবা প্রাতিষ্ঠানের নাম ও কাঠামোকে দোষারোপ করার কোন সুযোগ নেই।
বরঞ্চ, গণতন্ত্র ও জনকল্যাণের স্বার্থে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের নিয়োগ, পদায়ন ও পদোন্নতির পদ্ধতিসহ মেধা, দক্ষতা ও আচরণগত উৎকর্ষ সাধনের কোন বিকল্প নেই। আর যাঁরা জেলা প্রশাসনসহ দেশের নানা প্রান্তে বিভিন্ন পর্যায়ে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন, দেশ ও দশের স্বার্থে তাঁদের হতে হবে সৎ, নিরপেক্ষ, সংযমী, বিনয়ী এবং জনবান্ধব।
একই সাথে সরকারকেও রাষ্ট্র এবং প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষা ও সুশাসনের স্বার্থে জেলা প্রশাসনসহ নির্বাহী বিভাগের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীকে রাজনৈতিক এবং অবৈধ হস্তক্ষেপ ও প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে হবে। এ ছাড়া, জেলা ও কেন্দ্রের মধ্যে সুষ্ঠু এবং কার্যকর জবাবদিহিতা ও সমন্বয়ের নিমিত্তে প্রযোজ্য ‘চেইন অব কমান্ড’ বা ‘আদেশের পালাক্রম’ সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হবে। উপরন্তু, দেশের শাসনতন্ত্র অনুসারে নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগের স্বাতন্ত্র ও স্বকীয়তা বজায় রেখে এই তিন বিভাগের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি, শ্রদ্ধাবোধ এবং সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে।
কৃতজ্ঞতা: আমাকে এই লেখাটির বিষয়ে যাঁরা গুরুত্বপূর্ণ্য তথ্য ও পরামর্শ দিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
ড. শরীফ আস্-সাবের, একাডেমিক, প্রাক্তন আমলা ও লেখক; প্রেসিডেন্ট, গেইন ইন্টারন্যাশনাল।
অনেকে মনে করেন, ‘প্রশাসক’ শব্দটিতে ঔপনিবেশিক কিংবা সামন্ততান্ত্রিক গন্ধ আছে। অনেকের কাছে এই শব্দের প্রয়োগ জেলা পর্যায়ের অপরাপর সরকারি কর্মকর্তার গুরুত্বকে খাটো করে দেয়। কেউ আবার এই পদে কর্মরত কতিপয় কর্মকর্তার উন্নাসিক, নীতিবিবর্জিত ও দাম্ভিক আচরণের জন্য এই পদ এবং পদবী দু’টিরই অবসান চান!
যাই হোক, প্রতিটি জেলায় সরকারের একজন মুখ্য প্রতিনিধি থাকা আবশ্যক। ‘ডেপুটি কমিশনার’/‘জেলা প্রশাসক’ সেই দায়িত্বটি পালন করে থাকেন। জেলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে তিনি জেলা পর্যায়ের সকল বিভাগের সাথে সমন্বয় সাধন করেন। জেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সকল উন্নয়ন ও প্রশাসনিক কর্মকান্ডের দেখভালের দায়িত্বও তাঁর উপর বর্তায়।
জেলার প্রধান নির্বাহী ও সমন্বয়ক হিসাবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জেলা পর্যায়ের এই কর্মকর্তা একাধারে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা রেভিনিউ কালেক্টর এবং বিভাগীয় কমিশনারের ডেপুটি (ডেপুটি কমিশনার) হিসাবেও কাজ করে থাকেন।
অনেকেই ‘প্রশাসক’ এবং ‘শাসক’ শব্দ দু’টিকে একটু ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখেন। অভিধানে ‘ম্যাজিস্ট্রেট’ শব্দের বেশ ক’টি অর্থের মধ্যে একটি হচ্ছে ‘শাসক’। সেই সুবাদে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ‘জেলা শাসক’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। জেলা শাসক/প্রশাসক জেলায় সরকারের নির্বাহী বিভাগকে প্রতিনিধিত্ব করেন।
আবার, নির্বাহী বিভাগের আরেক নাম শাসন বিভাগ এবং ইংরেজি ‘গভর্নর’ ও ‘গভর্ন্যান্স’ শব্দ দুইটির অর্থ যথাক্রমে ‘শাসক’ ও ‘শাসন’। তবে, নির্বাহী বা শাসন বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন এই পদটির আভিধানিক অর্থ যাই হোক না কেন, আমি মনে করি, দুই বাংলায় ব্যবহৃত পদবীর (শাসক এবং প্রশাসক) প্রতিটিই এসেছে একেকটি প্যাকেজ হিসাবে, যা এই পদধারীদের বিবিধ সত্বা, ক্ষমতা ও দায়িত্বের একীভূত বা সামগ্রিক প্রতিফলন বৈ অন্য কিছু নয়।
এসবের আলোকে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ‘শাসক’ শব্দের ব্যবহার রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে পুরোপুরি অবান্তর বা অসাযুজ্যপূর্ণ না হলেও আমি মনে করি, এই শব্দটির মূলভাব তুলনামূলকভাবে কিছুটা অনমনীয় ও গুরুভার। গণতান্ত্রিক প্রেক্ষাপটে তাই ‘শাসক’ কথাটির ব্যবহারের যৌক্তিকতা নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা করার সময় হয়তো হয়ে এসেছে।
পক্ষান্তরে, ‘প্রশাসক’ শব্দটি এসেছে ‘প্রশাসন’ থেকে যার উৎস ‘শাসন’ হলেও এর প্রচলিত ভাবার্থ খানিকটা আলাদা। চলমান পরিপ্রেক্ষিতে জনগণের সেবক এবং জেলা প্রশাসনের প্রধান হিসাবে ‘প্রশাসক’ শব্দের ব্যবহারটি ভুল কিংবা অসঙ্গতিপূর্ণ নয়, যা প্রচলিত বিধি-বিধান ও নিয়ম-নীতির বাস্তবায়ন বা প্রয়োগের উপর গুরুত্ব আরোপ করে। ‘শাসক’ কথাটির সঙ্গে ‘ম্যাজিস্ট্রেসি’ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত সম্পৃক্ততা থাকলেও ‘প্রশাসক’ শব্দটি এককভাবে ম্যাজিস্ট্রেট, কালেক্টর কিংবা ডেপুটি কমিশনারের সরাসরি প্রতিশব্দ নয়।
এই আলোচনায় বাংলাদেশ সরকারের সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি বেশ প্রাসঙ্গিক এবং প্রণিধানযোগ্য। খুব বেশি দিন আগের কথা নয় যখন মাঠ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রক ‘সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের’ নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়’। এ ছাড়া, ব্যবসা প্রশাসন থেকে শুরু করে ওষুধ প্রশাসন, লোক প্রশাসন কিংবা ভূমি প্রশাসন - সকল ক্ষেত্রেই ‘প্রশাসন’ শব্দটির যথাযথ প্রয়োগ ও ব্যবহার হচ্ছে নিঃসংকোচে। একই সূত্রে সরকারিভাবে জেলা ‘প্রশাসন’ ও ‘প্রশাসক’ শব্দের ব্যবহারও বেমানান বা অগ্রহণযোগ্য নয়।
পরিশেষে, পৃথিবীর তাবৎ দেশের মত বাংলাদেশের সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ভালো মন্দ দুইই আছে। জেলা প্রশাসকরাও এই ভালো মন্দের বাইরে নন। বিভিন্ন সময়ে কতিপয় জেলা প্রশাসকের দায়িত্বজ্ঞানহীন কীর্তিকলাপ জনসাধারণ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করে, যা এই পদ এবং পদবীর মর্যাদা ও ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলে।
তবে, পদ, পদবী কিংবা অবস্থান একজন সরকারি চাকুরের ব্যক্তিগত চরিত্র কিংবা আদব কায়দার নিয়ামক নয়। শেক্সপিয়র সাহেব বলেছিলেন, ‘নামে কি বা আসে যায়...?’ আর কথায় আছে, ‘জন্ম হোক যথা তথা, কর্ম হোক ভালো’। তাই, কিছুসংখ্যক পদধারীর ব্যক্তিগত চারিত্রিক দুর্বলতা, নৈতিক স্খলন অথবা অদক্ষতার কারণে কোন বিশেষ পদ কিংবা প্রাতিষ্ঠানের নাম ও কাঠামোকে দোষারোপ করার কোন সুযোগ নেই।
বরঞ্চ, গণতন্ত্র ও জনকল্যাণের স্বার্থে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের নিয়োগ, পদায়ন ও পদোন্নতির পদ্ধতিসহ মেধা, দক্ষতা ও আচরণগত উৎকর্ষ সাধনের কোন বিকল্প নেই। আর যাঁরা জেলা প্রশাসনসহ দেশের নানা প্রান্তে বিভিন্ন পর্যায়ে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন, দেশ ও দশের স্বার্থে তাঁদের হতে হবে সৎ, নিরপেক্ষ, সংযমী, বিনয়ী এবং জনবান্ধব।
একই সাথে সরকারকেও রাষ্ট্র এবং প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষা ও সুশাসনের স্বার্থে জেলা প্রশাসনসহ নির্বাহী বিভাগের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীকে রাজনৈতিক এবং অবৈধ হস্তক্ষেপ ও প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে হবে। এ ছাড়া, জেলা ও কেন্দ্রের মধ্যে সুষ্ঠু এবং কার্যকর জবাবদিহিতা ও সমন্বয়ের নিমিত্তে প্রযোজ্য ‘চেইন অব কমান্ড’ বা ‘আদেশের পালাক্রম’ সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হবে। উপরন্তু, দেশের শাসনতন্ত্র অনুসারে নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগের স্বাতন্ত্র ও স্বকীয়তা বজায় রেখে এই তিন বিভাগের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি, শ্রদ্ধাবোধ এবং সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে।
কৃতজ্ঞতা: আমাকে এই লেখাটির বিষয়ে যাঁরা গুরুত্বপূর্ণ্য তথ্য ও পরামর্শ দিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
ড. শরীফ আস্-সাবের, একাডেমিক, প্রাক্তন আমলা ও লেখক; প্রেসিডেন্ট, গেইন ইন্টারন্যাশনাল।