এক্সক্লুসিভ
সর্প দংশনে দেশে গড়ে প্রতিদিন ১৭ জনের মৃত্যু
স্টাফ রিপোর্টার
২০২১-০২-০১
দেশে সর্প দংশনে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১৭ জন মারা যাচ্ছেন। বছরে সর্প দংশনে মারা যান প্রায় ৬ হাজার ৪১ জন। প্রতিবছর সর্প দংশনের শিকার হন ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৯১৯ জন। গত ৩০শে জানুয়ারি রাজধানীর আমারি হোটেলে বিশ্ব ক্রান্তীয় অবহেলিত রোগ (এনটিডি) দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব তথ্য জানান সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা এক্সেলেরেটিং দ্য সাসটেইনেবল কন্ট্রোল অ্যান্ড এলিমেনেশন অব নেগলেক্টটেড ট্রপিক্যাল ডিজিস (এসেন্ড) যৌথভাবে এই বৈঠকের আয়োজন করে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে-‘এনটিডির বিরুদ্ধে যুদ্ধে একটি নতুন দিন, অবহেলা শেষ করো, এনটিডিকে পরাজিত করো।’ অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ক্রান্তীয় অবহেলিত রোগ (এনটিডি) বিশ্বের চরম দরিদ্র ১৪৯টি দেশের প্রায় ১৭০ কোটি প্রান্তিক মানুষের জন্য মারাত্মক হুমকি। এই রোগগুলো মানুষকে অন্ধ, বিকলাঙ্গ ও বিকৃত করে। শুধু আক্রান্তদের স্বাস্থ্য কেড়ে নেয় না বরং বেঁচে থাকার সুযোগ এবং বেঁচে থাকার উপার্জন কেড়ে নেয়। এমনকি পরিবার বা সমাজে বসবাস করাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তালিকাভুক্ত এনটিডির সংখ্যা ২০টি। এর মধ্যে বাংলাদেশে প্রধানত সাতটি রোগের প্রার্দুভাব দেখা যায়। এগুলো হলো- গোদরোগ বা ফাইলেরিয়া, কালাজ্বর, কুষ্ঠ, কৃমি, জলাতঙ্ক, সাপে কাটা এবং ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি এনটিডি নির্মূল বা নিয়ন্ত্রণ হয়েছে। তবে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া এবং সাপে কাটা নিয়ন্ত্রণে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক এবং এসেন্ডের কান্ট্রি লিড অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, আমাদের দেশের ৭টি এনটিডি’র মধ্যে ৫টিতেই বেশ সাফল্য এসেছে। কুষ্ঠ রোগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয় ১৯৯৮ সালে। সফলতা আসার পর আবার বেড়ে গেছে। এটা মানার মতো নয়। ২০৩০ সালের আগেই যেন এটি নির্মূল করা সম্ভব হয়। কালাজ্বরের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ২০১৬ সালে। গোদরোগের ক্ষেত্রে সফলতা একেবারেই চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। কৃমিতে ঈর্ষণীয় সাফল্য এসেছে। স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহারে কৃমি একেবারেই কমে গেছে। জলাতঙ্ক একটি ভয়াবহ রোগ হলেও এর সফলতা প্রায় দোরগোড়ায়। ৯৫ ভাগ জলাতঙ্ক কমে গেছে। আর সাপের কামড় এখনো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। প্রতি বছর ৬ থেকে ৭ হাজার মানুষ সর্প দংশনে মারা যাচ্ছেন। এর মূল কারণ, সাপে কামড়ালে প্রথমেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মধ্যে আসে না। কবিরাজের কাছে যায় জনগণ। আবার অনেক উপজেলায় চিকিৎসা দিতে ভয় পায়। শেষটা হলো ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া। এক্ষেত্রে ব্যাপক সচেতনতা এসেছে। এর টিকা আসার সম্ভাবনা আছে। টিকা চলে আসলে সফলতা এসে যাবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক ও সিডিসি লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, এসেন্ডের কান্ট্রি লিড অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমবিডিসি) ও লাইন ডাইরেক্টর (টিবি-এল অ্যান্ড এএসপি) অধ্যাপক ডা. মো. সামিউল ইসলাম, জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল অ্যান্ড এডিস ট্রান্সমিটেড ডিজিজেজ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. আফসানা আলমগীর খান প্রমুখ।