অনলাইন

ঋণ পরিশোধে ‘বিশেষ’ ছাড় থাকছে না

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

২৮ জানুয়ারি ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৯:১৭ অপরাহ্ন

 করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত বছর ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করলেও খেলাপি না হওয়ার যে ‘বিশেষ’ সুবিধা দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, সেই ‘ছাড়’ আর থাকছে না। চলতি মাস থেকে কেউ ঋণের কিস্তি না দিলে নিয়ম অনুযায়ী খেলাপি হয়ে পড়বেন। সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বুধবার গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে বৈঠকে (ব্যাংকার্স সভা) এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় উদ্যোক্তাদের ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময় না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেই সিদ্ধান্তই বুধবারের ব্যাংকার্স সভায় জানিয়ে দেয়া হয়েছে। “পুরো এক বছর ঋণ শোধ না করেও ভালো গ্রাহক থাকা গেছে। এতে ঋণ পরিশোধে গ্রাহকেরা আগ্রহ হারাচ্ছেন। এ কারণেই সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সময় আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।” ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বলে জানান সিরাজুল ইসলাম। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ঋণগ্রহীতাদের সুরক্ষা দিতে ২০২০ সালের এপ্রিলে ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতায় স্থগিতাদেশ দেয়া হয়। সরকারের নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সার্কুলার জারি করে জানায়, জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত কোনো ঋণগ্রহীতা ঋণ শোধ না করলেও ঋণের শ্রেণিমানে কোনো পরিবর্তন আনা যাবে না। এরপর এ ছাড়ের মেয়াদ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরে তৃতীয় দফায় এ সুযোগ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। যদিও ডিসেম্বর শেষ হওয়ার আগেই ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ঋণ পরিশোধে শিথিলতার মেয়াদ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি জানিয়ে গভর্নরকে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সময়সীমা না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) মহাসচিব সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, “কোভিড-১৯ এর ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে দেশের অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বার্থে ঋণ পরিশোধে শিথিলতা দেয়া হয়েছিল। তখন আমরা সবাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলাম। “কিন্তু এ ধরনের সুবিধা দীর্ঘমেয়াদে চলতে পারে না। এজন্য এবিবির পক্ষ থেকে আমরা ঋণ শ্রেণিকরণের মেয়াদ না বাড়ানোর অনুরোধ করেছিলাম। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমাদের মতামতের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। মেয়াদ আবারও বাড়ানো হলে ব্যাংকগুলোর পক্ষে টিকে থাকা কঠিন হত। এখন ব্যাংকের অর্থ ব্যাংকে ফেরার সময় হয়েছে।” ব্যাংকার্স সভায় দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, মুদ্রানীতি, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের অগ্রগতি, ব্যাংক ঋণে ৯ শতাংশ সুদহার কার্যকর, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতের অর্থ ফেরত দিতে ব্যর্থতাসহ ব্যাংক খাতের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানান সিরাজুল ইসলাম। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। ‘বিশেষ’ ছাড়ের কারণে গত বছর ব্যাংকগুলো কোনো খেলাপি ঋণ আদায় করতে পারেনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status