এক্সক্লুসিভ

মানুষের সবসময় মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকা উচিত (৫২)

কাজল ঘোষ

২৫ জানুয়ারি ২০২১, সোমবার, ৮:৫২ অপরাহ্ন

ডিস্ট্রিক্ট ফেডারেল কোর্টে লড়াইয়ের আইনি প্রক্রিয়া দৃশ্যমাণ হতেই সময় লেগে যায় আট মাসের মতো। আদালতের ভেতরে একজন বিচারক সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ, তথ্য প্রমাণ যাচাই এবং অভিযোগের ভিত্তি কি তা তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে যাচাই করেন। প্রপ-৮ কীভাবে ক্রিস, স্যান্ডি, জেফ এবং পলের নাগরিক অধিকার হরণ করে তা যাচাই করে নির্ধারণ করেন বিচারক। ২০১০ সালের ৪ঠা আগস্ট প্রধান বিচারপতি ভন ওয়াকার তাদের পক্ষে একটি রুল জারি করেন। এতে বলা হয় প্রপ-৮ অসাংবিধানিক এবং এটি সমলিঙ্গের বিয়ের অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করছে। এটা ছিল আশাব্যঞ্জক এবং গুরুত্বপূর্ণ খবর। তৎকালীন সময়ের একটি সাধারণ চর্চা ছিল যে, এটি সংশোধন হলেও যতদিন না তা উচ্চ আদালতে আপিল করা না হচ্ছে ততদিন তা কার্যকর হবে না। এই আইনি প্রক্রিয়া ‘স্টে’ নামে পরিচিত।
আমি অ্যাটর্নি জেনারেল থাকা অবস্থায় মাঝামাঝি সময়ে এ বিষয়ে রুল জারি করা হয় এবং খুব দ্রুতই এটি জাতীয় ইস্যু হিসাবে প্রচারণায় যুক্ত হয়। এ সিদ্ধান্ত নিয়ে আপিল করার অধিকার শুধুমাত্র কালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেলেরই ছিল। সে সময়কার অ্যাটর্নি জেনারেল জেরি ব্রাউন যার পদেই আমি নির্বাচন করছি তিনি আদালতে এ নিয়ে লড়তে অস্বীকৃতি জানান। আমি নিজেও স্পষ্ট করে বলেছিলাম প্রপ-৮ কে রক্ষা করতে আমি একটি পয়সাও খরচ করবো না। তবে আমার বিরোধীদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল পুরোপুরি উল্টো। আমি বুঝতে পারছিলাম যে, এটা শুধুমাত্র নীতিগত ছিল না এটা ছিল বাস্তবসম্মত। যদি ক্যালিফোর্নিয়া আপিল করতে অস্বীকৃতি জানায় তাহলে নিম্ন আদালত চাইলে এই ‘স্টে’ বাতিল করতে পারে এবং রাজ্য চাইলে বিয়ে বৈধ করে দিতে পারে। কিন্তু যদি ক্যালিফোর্নিয়া আপিল করে তাহলে এই প্রক্রিয়া চালু হতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে।   
আমি যখন অ্যাটর্নি জেনারেল হলাম আমার আপিল করার অস্বীকৃতি জানানোর মধ্য দিয়ে এই মামলা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে প্রপ-৮ এর বাদীপক্ষ লড়াই চালিয়ে যেতে চাইলো। তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিলো উচ্চ আদালতে আপিল করার। আমার দৃষ্টিতে তাদের এটি করার কোনো অধিকারই ছিল না। মত প্রকাশ করার স্বাধীনতা মানে এই নয় যে, কেউ চাইলেই আদালতের প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে পারে। কারো কোনো বিষয়ে গভীর অনুভূতি থাকার বিষয় এই নয় যে, তা নিয়ে আদালতে মামলা লড়তে হবে। আদালতে কোনো কিছু নিয়ে মামলা লড়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই সুস্পষ্ট কারণ নিয়ে আসতে হবে। অর্থাৎ আপনাকে অবশ্যই বাস্তবিক অর্থে কোনো কিছু নিয়ে ভুক্তভোগী হতে হবে কিংবা ভুক্তভোগী হওয়ার আশঙ্কা থাকবে।
ক্রিস প্যারি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মামলা করতে প্রস্তুত নিচ্ছিল যখন প্রপ-৮ এর মাধ্যমে সে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটা তার নাগরিক অধিকারকে খর্ব করেছে। আমাদের আইনে বলা আছে, একটি আমেরিকান সম্প্রদায় অন্য আমেরিকান সম্প্রদায়ের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। যা মৌলিকভাবে বৈষম্যপূর্ণ। সংবিধানের বক্তব্য এক্ষেত্রে পরিষ্কার। কিন্তু যখন আদালতে প্রপ-৮ বাতিল হয়ে গেল তখন আদালত কারও কোনো ক্ষতি না করে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে সুরক্ষা দিলেন। যারা মার্কিন সংবিধানের আলোকে সমলিঙ্গের জুটিদের মেনে নিচ্ছিল না তারা এটি করছিল না কারণ তাদের এটি পছন্দ ছিল না। মানুষের সবসময় মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকা উচিত তবে তারা চাইলেই আমেরিকার মৌলিক অধিকার অস্বীকার করতে পারে না। তারপরেও মামলা চলতে থাকলো। রুলে স্থগিতাদেশ জারি করা হলো। নবম সার্কিট কোর্ট দেড় বছরেরও বেশি সময় পরে তাদের সিদ্ধান্ত জানালো। যত দেরি হচ্ছে ন্যায়বিচার ততই অস্বীকার করা হচ্ছিল। একেকটি দিন দেরির কারণে কোনো না কোনো জুটি তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারছিল না। সেই দাদি মা মারা যাচ্ছিল যে, তার নাতির বিয়ে দেখে যেতে পারছিল না। প্রতিটি দিন শিশুরা অবাক হয়ে বলছিল, আমার বাবা-মা কেন বিয়ে করছে না।     
কমালা হ্যারিসের অটোবায়োগ্রাফি
‘দ্য ট্রুথ উই হোল্ড’ বই থেকে
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status