বিশ্বজমিন

‘পাকিস্তান-বাংলাদেশ রিলেশন্স’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা

অতীতের জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত পাকিস্তানের, সম্পর্ক জোরদারে শেখ হাসিনার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ

মানবজমিন ডেস্ক

২১ জানুয়ারি ২০২১, বৃহস্পতিবার, ১২:৫২ অপরাহ্ন

কালচারাল ডিপ্লোম্যাসি বা সাংস্কৃতিক কূটনীতি ব্যবহার করে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত। এর কারণ, এ দুটি দেশের মধ্যে রয়েছে অভিন্ন ধর্ম, রীতি, খাদ্য, আর্ট ও ইতিহাস। বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের সাবেক হাইকমিশনার রফিউজ্জামান সিদ্দিকী ‘পাকিস্তান-বাংলাদেশ রিলেশন্স’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব বক্তব্য রেখেছেন। এ বিষয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে পাকিস্তানের অনলাইন ডেইলি টাইমসে। এতে তিনি আরো বলেছেন, পারস্পরিক বিভিন্ন ইস্যুর সমাধান করে এই দুটি দেশকে একত্রে সামনে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ দিনের শুরুতে ওয়েবিনারের আয়োজন করে সেন্টার ফর রিসার্স এন্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (সিআরএসএস)। এতে বক্তব্য রাখেন ইন্দোনেশিয়ায় নিযুক্ত পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত মিস নাসিম ফিরদৌস, ঢাকা থেকে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্র বিষয়ক নীতির বিশ্লেষক প্রফেসর শাহীদুজ্জামান ও সিআরএসএসের নির্বাহী পরিচালক ইমতিয়াজ গুল।

এতে রফিউজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্যিক সহযোগিতা, সীমান্ত উন্মুক্ত করা এবং সংস্কৃতি বিনিময়-  উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক সমৃদ্ধ হতে সহায়ক হতে পারে। সাবেক রাষ্ট্রদূত নাসিম ফিরদৌস বলেন, দু দেশের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য প্রথম যে পদক্ষেপ প্রয়োজন তা হলো, অতীতের ঘটনাগুলো স্বীকার করে নেয়া। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়কার ঘটনাগুলোর জন্য বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ এসব বিষয়ে অন্ধকারে। তাদেরকে এ সম্পর্কে অনুধাবন করায় সহযোগিতা করা উচিত। তিনি বলেন, একে অন্যের অভিযোগ শোনা, সংস্কৃতি বিনিময় ও সমঝোতা বা আলোচনা এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করতে হবে নীতিনির্ধারকদের।

প্রফেসর শাহীদুজ্জান বলেন, বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতা অনুধাবন করা উচিত পাকিস্তানের। একই সঙ্গে বাংলাদেশের জন্য ভূ-কৌশলগত সীমাবদ্ধতার বিষয়েও তাদের বিবেচনা করা উচিত। জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক উন্নত করার ক্ষেত্রে তিনি পাকিস্তানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, পাবলিক কমিউনিকেশন এবং সাংস্কৃতিক ডিপ্লোম্যাসির জন্য সুযোগ সৃষ্টি করতে ভারতের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত পাকিস্তানের। আমলাতান্ত্রিক বাধা দূর করা উচিত পাকিস্তানের। এই বাধার কারণে পর্যটন শিল্পের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সমাপনী বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, ভূ-রাজনৈতিক ফ্যাক্টরস’কে পাশ কাটিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু পাকিস্তান ভূরাজনৈতিক বন্ধুপ্রতীম কৌশল তৈরি করতে পারে। বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক শক্তিশালী হচ্ছে। এর মতো করে ভূ-কৌশলগত পদক্ষেপ নিতে পারে পাকিস্তান।
 
সাবেক হাইকমিশনার রফিউজ্জামানের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ওয়েবিনার শেষ হয়। তিনি বলেন, এ অঞ্চলে একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান তার অতীত ভুলের কথা মেনে নিয়ে তার অবস্থানকে শক্তিশালী করতে পারে এবং করা উচিত। তার এ বক্তব্যকে সমর্থন করেন রাষ্ট্রদূত নাসিম। তিনি বলেন, এই ধারায় যদি সামনে অগ্রসর হওয়া যায় তাহলে বন্ধুপ্রতীম এই দুই প্রতিবেশীর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ একটি ফাউন্ডেশন গড়ে উঠবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status