শেষের পাতা
‘পাওয়ার আলীর’ বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ
গৃহকর্মী থেকে শতকোটি টাকার মালিক
স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা ও কক্সবাজার
১৯ জানুয়ারি ২০২১, মঙ্গলবার, ৯:৩৯ অপরাহ্ন
ব্যবসায়ীর বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন পাঠশালা অবধি পড়াশোনা করা সৈয়দ মোহাম্মদ আলী। পরবর্তীতে নিয়োগ পান কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির অফিসের পিয়ন হিসেবে। আর তার পেছনে তাকাতে হয়নি। যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে এসে যায়! এখন কক্সবাজারের কোটিপতিদের একজন মোহাম্মদ আলী। রাতারাতি টাকার কুমির বনে যাওয়া আলীকে নিয়ে জেলাজুড়ে অন্তহীন আলোচনা। অভিযোগ রয়েছে- ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে নামের মিল থাকায় সুকৌশলে তার স্থাবর সম্পত্তি কব্জা করে হাতিয়ে নিয়েছেন সাড়ে চার কোটি টাকা। এছাড়া সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিসহ দেশ বিদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নাম ভাঙিয়ে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কক্সবাজারে এই মোহাম্মদ আলী ‘পাওয়ার আলী’ নামে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। গতকাল থেকে সংস্থাটি পাওয়ার আলীর বিপুল সম্পদের অনুসন্ধানে নেমেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নামের মিল থাকায় জালিয়াতি করে আলী হাতিয়ে নিয়েছেন অভিযোগকারী ব্যবসায়ীর প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা। তাছাড়া প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের বিশাল মার্কেট আর ৮ কোটি টাকা মূল্যের বসতভিটাও কৌশলে হাতিয়ে নিতে নানা ফন্দি-ফিকির করছেন।
আলী কক্সবাজার প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদেরও ব্যবহার করছেন নানা কৌশলে। কথিত আছে জটিল কোনো সমস্যায় আটকে গেলে জেলার শীর্ষ আমলা ও রাজনীতিবিদরা সাহায্যের জন্য আলীর কাছে ছুটে যান। কক্সবাজার প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ অফিসারদের সামনে বসিয়ে রেখে ঊর্ধতনদের সঙ্গে কথা বলেন এই আলী। এসব ঘটনার সত্যতাও পেয়েছেন কক্সবাজারে কর্মরত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
আলী তার কাছে আসা লোকজনকে প্রায়শ বলে বেড়ান, সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে নিয়মিত ফোন করে তার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেয়া হয়। প্রতারক আলী হিলারি ক্লিনটন-বারাক ওবামা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সম্পর্কের কথাও বলে বেড়ান। এছাড়া বিভিন্ন বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা, গোয়েন্দা কর্মকর্তা, পুলিশ কর্মকর্তারা তার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করেন বলেও প্রচার করেন।
অভিযোগে আরো জানা যায়, ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ করেন ‘পাওয়ার আলী’। তার ভ্রমণ-গন্তব্যে পছন্দের তালিকায় রয়েছে আমেরিকা, লন্ডন, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, ইন্ডিয়া।
কক্সবাজারের রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন দলের যে পরিবার বা ব্যক্তিকে ‘ক্ষমতাধর’ হিসেবে সবাই সমীহ করেন, তারাও আলীকে তোয়াজ করে চলেন বলে আলোচনা আছে।
সম্প্রতি প্রতারক সাহেদসহ সরকার দলের দুর্নীতিবাজ নেতাদের গ্রেপ্তারের পর অনেকটা আড়ালে চলে যান পাওয়ার আলী। এরপর থেকেই তার প্রতারণার ঘটনা ফাঁস হতে থাকে। কক্সবাজারের সাধারণ মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়, আলী সাহেদের মতোই বহুরূপী এক প্রতারক।
খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে কক্সবাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলীর বাসায় ‘কাজের ছেলে’ হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন মোহাম্মদ আলী। মাসিক হিসেবে ৭০০ টাকা বেতনে। কক্সবাজার সদরের পিএমখালী ইউনিয়নের গোলারপাড়া গ্রামের দরিদ্র নৌকার মাঝি দিনমজুর ইলিয়াস প্রকাশ কালু মাঝির ছেলে তিনি। দিনমজুর পিতার ছেলে আলীর অদৃশ্য উত্থান হয় মাত্র ১০ বছরে।
মোহাম্মদ আলীর জাদুর কাঠি হচ্ছে জালিয়াতি আর প্রতারণা। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে সম্পর্কের কথা প্রচার করে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সাধারণ মানুষের কাছে নিজেকে ক্ষমতাবান হিসেবে উপস্থাপন করে কৌশলে তিনি প্রতারণার জাল ফেলেন নানা স্থানে।
তদবির বাণিজ্য ও বেদখলে থাকা জমি ক্রয় এবং ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য সম্পদের মধ্যে রয়েছে কক্সবাজার শহরের পূর্ব নতুন বাহারছড়া বিমানবন্দর সড়কের পাশে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে চারতলা বিলাসবহুল বাড়ি, কক্সবাজার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কস্তুরাঘাটের এন্ডারসন রোডের ডুপ্লেক্স বাড়ি, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের ব্যাপারীপাড়ার ৩৭০ এক্সেস রোডের ১০ তলা ভবন, নিজ গ্রামে পাঁচ কোটি টাকার প্রাসাদোপম বাড়ি, কক্সবাজার শহরের কলাতলী ও বাইপাস সড়কে তিনটি এবং ঢাকায় দু’টি ফ্ল্যাট, কক্সবাজার পৌরসভা ও তার পিএমখালী ইউনিয়নে নামে-বেনামে ৩০ একর, চট্টগ্রামে ১০ একর জমি, কক্সবাজার সদরের ঈদগাহে মেসার্স এসএমএ ব্রিক ফিল্ড, কক্সবাজার সদরের গোলারপাড়া গ্রামে নিজ নামে আলী ডেইরি অ্যান্ড পোল্ট্রি ফার্ম, মেসার্স আলী এন্টারপ্রাইজ নামে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসহ নামে-বেনামে অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। মোহাম্মদ আলীর এসব অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ বিষয়ে দুদকের কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম বলেছেন, কমিশনে মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। আমরা এরই মধ্যে অভিযোগটি অনুসন্ধানের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিগগিরই একজন কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে। তবে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মোহাম্মদ আলী তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নামের মিল থাকায় জালিয়াতি করে আলী হাতিয়ে নিয়েছেন অভিযোগকারী ব্যবসায়ীর প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা। তাছাড়া প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের বিশাল মার্কেট আর ৮ কোটি টাকা মূল্যের বসতভিটাও কৌশলে হাতিয়ে নিতে নানা ফন্দি-ফিকির করছেন।
আলী কক্সবাজার প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদেরও ব্যবহার করছেন নানা কৌশলে। কথিত আছে জটিল কোনো সমস্যায় আটকে গেলে জেলার শীর্ষ আমলা ও রাজনীতিবিদরা সাহায্যের জন্য আলীর কাছে ছুটে যান। কক্সবাজার প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ অফিসারদের সামনে বসিয়ে রেখে ঊর্ধতনদের সঙ্গে কথা বলেন এই আলী। এসব ঘটনার সত্যতাও পেয়েছেন কক্সবাজারে কর্মরত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
আলী তার কাছে আসা লোকজনকে প্রায়শ বলে বেড়ান, সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে নিয়মিত ফোন করে তার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেয়া হয়। প্রতারক আলী হিলারি ক্লিনটন-বারাক ওবামা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সম্পর্কের কথাও বলে বেড়ান। এছাড়া বিভিন্ন বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা, গোয়েন্দা কর্মকর্তা, পুলিশ কর্মকর্তারা তার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করেন বলেও প্রচার করেন।
অভিযোগে আরো জানা যায়, ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ করেন ‘পাওয়ার আলী’। তার ভ্রমণ-গন্তব্যে পছন্দের তালিকায় রয়েছে আমেরিকা, লন্ডন, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, ইন্ডিয়া।
কক্সবাজারের রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন দলের যে পরিবার বা ব্যক্তিকে ‘ক্ষমতাধর’ হিসেবে সবাই সমীহ করেন, তারাও আলীকে তোয়াজ করে চলেন বলে আলোচনা আছে।
সম্প্রতি প্রতারক সাহেদসহ সরকার দলের দুর্নীতিবাজ নেতাদের গ্রেপ্তারের পর অনেকটা আড়ালে চলে যান পাওয়ার আলী। এরপর থেকেই তার প্রতারণার ঘটনা ফাঁস হতে থাকে। কক্সবাজারের সাধারণ মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়, আলী সাহেদের মতোই বহুরূপী এক প্রতারক।
খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে কক্সবাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলীর বাসায় ‘কাজের ছেলে’ হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন মোহাম্মদ আলী। মাসিক হিসেবে ৭০০ টাকা বেতনে। কক্সবাজার সদরের পিএমখালী ইউনিয়নের গোলারপাড়া গ্রামের দরিদ্র নৌকার মাঝি দিনমজুর ইলিয়াস প্রকাশ কালু মাঝির ছেলে তিনি। দিনমজুর পিতার ছেলে আলীর অদৃশ্য উত্থান হয় মাত্র ১০ বছরে।
মোহাম্মদ আলীর জাদুর কাঠি হচ্ছে জালিয়াতি আর প্রতারণা। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে সম্পর্কের কথা প্রচার করে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সাধারণ মানুষের কাছে নিজেকে ক্ষমতাবান হিসেবে উপস্থাপন করে কৌশলে তিনি প্রতারণার জাল ফেলেন নানা স্থানে।
তদবির বাণিজ্য ও বেদখলে থাকা জমি ক্রয় এবং ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য সম্পদের মধ্যে রয়েছে কক্সবাজার শহরের পূর্ব নতুন বাহারছড়া বিমানবন্দর সড়কের পাশে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে চারতলা বিলাসবহুল বাড়ি, কক্সবাজার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কস্তুরাঘাটের এন্ডারসন রোডের ডুপ্লেক্স বাড়ি, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের ব্যাপারীপাড়ার ৩৭০ এক্সেস রোডের ১০ তলা ভবন, নিজ গ্রামে পাঁচ কোটি টাকার প্রাসাদোপম বাড়ি, কক্সবাজার শহরের কলাতলী ও বাইপাস সড়কে তিনটি এবং ঢাকায় দু’টি ফ্ল্যাট, কক্সবাজার পৌরসভা ও তার পিএমখালী ইউনিয়নে নামে-বেনামে ৩০ একর, চট্টগ্রামে ১০ একর জমি, কক্সবাজার সদরের ঈদগাহে মেসার্স এসএমএ ব্রিক ফিল্ড, কক্সবাজার সদরের গোলারপাড়া গ্রামে নিজ নামে আলী ডেইরি অ্যান্ড পোল্ট্রি ফার্ম, মেসার্স আলী এন্টারপ্রাইজ নামে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসহ নামে-বেনামে অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। মোহাম্মদ আলীর এসব অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ বিষয়ে দুদকের কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম বলেছেন, কমিশনে মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। আমরা এরই মধ্যে অভিযোগটি অনুসন্ধানের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিগগিরই একজন কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে। তবে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মোহাম্মদ আলী তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেছেন।