শেষের পাতা

‘বঙ্গভ্যাক্সের’ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আবেদন

স্টাফ রিপোর্টার

১৮ জানুয়ারি ২০২১, সোমবার, ৯:১৫ অপরাহ্ন

করোনার ভ্যাকসিন বঙ্গভ্যাক্সের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নীতিগত অনুমোদনে নথিপত্র জমা দিয়েছে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক। রোববার দুপুরে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলে (বিএমআরসি) গ্লোব বায়োটেকের কর্মকর্তারা এই রিসার্চ প্রটোকল জমা নেন। মানবদেহে বঙ্গভ্যাক্সের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের এই গবেষণায় কাজ করবে ৫৭ সদস্যের একটি দল। আবেদনে একসঙ্গে প্রথম ও দ্বিতীয় ট্রায়ালের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। সিআরও লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি গ্লোব বায়োটেকের হয়ে টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের কাজটি করবে। এই ট্রায়াল হবে সরকারি হাসপাতালের একটি ইউনিটে। অনুমোদন পাওয়ার পর সেই হাসপাতালের নাম প্রকাশ করা হবে। গ্লোব বায়োটেকের হয়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালনাকারী দলের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বলেন, ১০০ জনের বেশি মানুষের ওপর এই ট্রায়াল পরিচালনা করা হবে, সেভাবেই প্রটোকল জমা দিয়েছেন তারা। গ্লোব বায়োটেকের সিআরও প্রতিষ্ঠান গবেষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা কিছুদিন ধরে গ্লোব বায়োটেকের ভ্যাকসিন বিষয়ক বিস্তারিত তথ্য এবং এ বিষয়ে কাজ করার পর্যাপ্ত সুযোগ- সুবিধা কি আছে তা দেখেছেন। গ্লোবের ভ্যাকসিনটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাওয়ার যোগ্যতা রাখে। সেই জায়গা থেকে আমরা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রটোকল তৈরি করেছি। বিএমআরসি’র ন্যাশনাল রিসার্চ ইথিকস কমিটি এখন আবেদনটি বিবেচনা করবে। বিএমআরসি নীতিগত সম্মতি দিলে তা যাবে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে (ডিজিডিএ)। সেখানকার ন্যাশনাল ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল অ্যাডভাইজারি কমিটি তখন অনুমোদন দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবে। ডা. স্বপ্নীল আরো বলেন, ডিজিডিএ অনুমোদন দিলে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করতে পারবো। চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার পর সর্বোচ্চ ৭ দিনের মধ্যে আমরা কাজ শুরু করবো, আমাদের সে প্রস্তুতি আছে। ১০০ জনের বেশি মানুষের ওপর পরীক্ষা চালানোর বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন- ফাইজার, মডার্নার মতো প্রতিষ্ঠানের ট্রায়াল স্যাম্পলও এমন ছিল। আমরা সেসব প্রতিষ্ঠানের সব তথ্য বিবেচনা করে এই সংখ্যা নির্ধারণ করেছি। যাদের কোভিড-১৯ নেগেটিভ থাকবে, কোমর্বিডিটি থাকবে না, ১৮ বছরের উপর সুস্থ বাংলাদেশি, তারা এই ট্রায়ালে অংশ নিতে পারবেন। গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদ, গ্লোব বায়োটেকের সিইও ড. কাকন নাগ, আইইডিসিআরের পরিচালক তাহমিনা শিরিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার এবং গ্লোবের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান সিআরও লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হেলাল উদ্দিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত বছরের ২৮শে ডিসেম্বর গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডকে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন উৎপাদনের অনুমতি দেয়া হয়। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শতাধিক কোম্পানি ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টায় আছে, সেই দৌড়ে থাকা একমাত্র বাংলাদেশি কোম্পানি গ্লোব বায়োটেক। শুরুতে তাদের ওই ভ্যাকসিনের নাম ‘ব্যানকোভিড’ থাকলেও ডিসেম্বরে তা পরিবর্তন করে ‘বঙ্গভ্যাক্স’ রাখা হয়। সারা বিশ্বে যেসব ভ্যাকসিন তৈরির কাজ হচ্ছে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর মধ্যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পর্যায়ে আছে এমন ৪২টি ভ্যাকসিনের একটি তালিকা এবং ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগের অবস্থায় (প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল) থাকা ১৫৬টি ভ্যাকসিনের আরেকটি তালিকা রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। ওই তালিকায় গ্লোব বায়োটেকের ভ্যাকসিনের নাম উঠেছে। গত বছরের ৩রা জুলাই তেজগাঁওয়ে গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে গ্লোব বায়োটেকের পক্ষ থেকে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টার ঘোষণা দেয়া হয়। পরে ১০ই অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ইঁদুরের ওপর প্রয়োগ করে তাদের ওই সম্ভাব্য ভ্যাকসিন কার্যকর ও সম্পূর্ণ নিরাপদ প্রমাণিত হয়েছে। ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য আইসিডিডিআর,বি’র সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) করলেও পরে তা বাতিল করে গ্লোব বায়োটেক। গত ১লা ডিসেম্বর গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ চুক্তি বাতিলের কথা জানিয়ে বলেন, আইসিডিডিআর,বি’র অনাগ্রহ দেখে তারা ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status