প্রথম পাতা

৩ প্রতিষ্ঠানের ভ্যাকসিন ট্রায়ালের অনুমতি পাচ্ছে

ফরিদ উদ্দিন আহমেদ

১৫ জানুয়ারি ২০২১, শুক্রবার, ৯:৫০ অপরাহ্ন

সরকার করোনার ভ্যাকসিন আনার জন্য নানা প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। উদ্যোগের অংশ হিসেবে চলতি মাসেই আসছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন। প্রথমে ৫০ লাখ ডোজ আসবে। ধীরে ধীরে কোভ্যাক্সের টিকা পাবে বাংলাদেশ। এ ছাড়া দেশে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন সহজলভ্য করতে সরকার আরো তিনটি কোভিড ভ্যাকসিন উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠানকে ট্রায়ালের অনুমতি দিতে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান গণমাধ্যমকে জানান, ভ্যাকসিনের আরো উৎস পেতে সরকারের উদ্যোগের একটি অংশ হিসেবেই ভ্যাকসিন উদ্ভাবনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি দেয়া হবে। তিনি বলেন, যদি কোনো ভ্যাকসিন উৎপাদক প্রতিষ্ঠান আমাদের বিস্তারিত (গবেষণা) তথ্য দেয়, তাহলে আমরা তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেব। বর্তমানে তিনটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে তাদের ভ্যাকসিনের শেষ পর্যায়ে ট্রায়ালের পরিকল্পনা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে-ভারত বায়োটেক, চীনের আনহুই জিফেই লংকম বায়োলজিক ফার্মাসি এবং মেডিকেল বায়োলজি চাইনিজ একাডেমি অব মেডিকেল সায়েন্সেস ইনস্টিটিউট। এ ছাড়াও বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড তাদের ভ্যাকসিনের প্রথম পর্যায়ের ট্রায়াল করতে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরসি) কাছে প্রস্তাব জমা দেবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের কাছে ভারত বায়োটেকের এবং চীনের একটি কোম্পানির তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালনার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে আইসিডিডিআর,বি’। আইসিডিডিআর,বি’ সূত্র বলছে, তারা আরো ১০/১২ দিন পর্যবেক্ষণ করবেন। কারণ অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন চলে আসলে কী হবে। ট্রায়ালের জন্য হাসপাতালের সম্মুখসারির যোদ্ধারাই তো তাদের মূল স্বেচ্ছাসেবক। সেখানে তারা ভ্যাকসিন নিলে কীভাবে ট্রায়াল হবে।
এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এবং চীনের আনহুই জিফেই লংকম বায়োলজিক ফার্মাসি কর্তৃপক্ষ ভ্যাকসিনের শেষ পর্যায়ের ট্রায়ালের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে কাজ করছে। গত সপ্তাহে এই দুই পক্ষ ট্রায়াল পরিচালনায় সম্মত হয়। এ বিষয়ে বিএসএমএমইউ’র ভিসি অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে। চূড়ান্ত হয়নি। চূড়ান্ত হলে চুক্তি হবে। আমরা তাদেরকে (আনহুই জিফেই) জানিয়েছি। আমরা ট্রায়াল করবো। প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় লাগবে। এর আগে সিনোফির সঙ্গেও আলোচনা হয়েছিল। পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি আর আগায়নি। মেডিকেল বায়োলজি চাইনিজ একাডেমি অব মেডিকেল সায়েন্সেস ইনস্টিটিউট তাদের ভ্যাকসিনের শেষ পর্যায়ের ট্রায়ালের পরিকল্পনা করছে। বাংলাদেশের একটি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই ট্রায়ালের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত দুটি উৎস থেকে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন কেনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ দেড় কোটি মানুষকে দেয়া হবে। কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় ধীরে ধীরে আসবে ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুসারে ২০ শতাংশ জনগোষ্ঠী অর্থাৎ ৩ কোটি ৪০ লাখ এই টিকা পাবেন। কোভ্যাক্সের মাধ্যমে ফাইজারের টিকার সুবিধা পাওয়ার অফার পেয়েছে বাংলাদেশ। সেখান থেকেও ৪ লাখ টিকা আসবে। তবে শর্ত দিয়েছে ফাইজারের টিকা সম্মুখসারির যোদ্ধাদের দিতে হবে। এই বিষয়ে ১৮ই জানুয়ারির মধ্যে চিঠি দিয়ে জানাতে হবে। সরকার ফাইজারের টিকা নেয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সরকারি কর্মসূচির বাইরে দেশে বেসরকারিভাবে বাংলাদেশের বাজারে বিক্রির জন্য ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে প্রায় ৩০ লাখ ডোজ করোনা ভ্যাকসিন কিনছে দেশের শীর্ষ ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। আগামী মাসেই এ কার্যক্রম শুরু হতে পারে। ৩০ লাখের মধ্যে এরইমধ্যে ১০ লাখ ডোজের জন্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এখন আরো ২০ লাখ ডোজ সংগ্রহের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status