ফেসবুক ডায়েরি
'জেনে বা না জেনে প্রতিদিনই কোভিড পেশেন্টকে স্পর্শ করি'
ডা. সাকলায়েন রাসেল
১৪ জানুয়ারি ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৯:৪৭ অপরাহ্ন
করোনার সম্মুখযোদ্ধা চিকিৎসকরা। অচেনা শত্রু করোনার বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছেন তারা। প্রাণও হারিয়েছেন অনেক চিকিৎসক। রোগীর সেবা দিতে অনেক সময় স্পর্শও করতে হয় তাদের। রোগী দেখবার এমনি এক ঘটনা তুলে ধরেছেন ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ও ভাসকুলার সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সাকলায়েন রাসেল।
তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
এসেছেন ভাসকুলারজনিত সমস্যা নিয়ে...
রোগীর বসে থাকতেই শ্বাসকষ্ট...হাতের পালসে হাত রেখে জিজ্ঞেস করলাম...
-'হাপাচ্ছেন কেন?
-রোগীর লোকের তড়িৎ উত্তর, 'ডায়ালাইসিস এর রোগী তো স্যার, মাঝেমধ্যে ওমন হয় একটু'!
হাতটা চেক করতে করতে জিজ্ঞেস করলাম...
'টেস্ট করেছেন?'
রোগীর লোক বেশ সাবলিল।
-করোনা টেস্ট তো? জ্বী স্যার, করেছি স্যার! দুইদিন আগেই করেছি!
রোগীর হাত দেখা শেষ করে চেয়ারে বসতে বসতে জিজ্ঞেস করলাম..
'তো রেজাল্ট কি?'
রোগীর লোকের নির্ভেজাল বিদ্যুৎ গতির উত্তরঃ 'পজিটিভ, পজিটিভ স্যার'
এভাবেই জেনে বা না জেনে প্রতিদিনই কোন না কোন কোভিড পেশেন্টকে স্পর্শ করি...খালি হাতে...নো পিপিই...ফেসশিল্ড! গগলস!
স্পর্শ ছাড়া কি পালসের গতি বোঝা যায়? তাপমাত্রার তারতম্য বোঝা যায়? রোগী দেখে শান্তি পাওয়া যায়?
মুখে একটা সার্জিক্যাল মাস্ক...মনে অল্প বিস্তর সাহস...ব্যাস এতোটুকুই ভরসা!
চাচা গেল...অনেক আপনজন গেল...মা কোভিড পজিটিভ হয়ে হাসপাতালে... ছোট বোনটাও কয়েকদিন আগে কোভিড থেকে সেরে উঠেছে...স্ত্রীও শ্বাসকষ্টের রোগীদের সেবায় নিয়োজিত। পেশাগত কারণে নিজেদের নিরাপদ রাখার সুযোগ কম।
তবুও কোথায় যেন একটা সাহস কাজ করে..
'ইনশাআল্লাহ, আমার কিছু হবেনা'!
এই সাহসটাই আমাকে দায়িত্বে অবিচল রাখে...অবিচল রাখে জীবন বাজি রেখে সেবা অব্যাহত রাখা সকল স্বাস্যসেবককে!
অথচ, আমার কিছু হবেনা এমনটা ভাবতে ভাবতেই অনেকের অনেক কিছু হয়ে গেল! কেউ কেউ হারালেন সবকিছু!
কত চিকিৎসক চোখের সামনে থেকে হারিয়ে গেলেন চিরতরে!
যেকোন মুহুর্তে হারিয়ে যেতে পারি...এটা জেনেও প্রতিদিন নতুন করে বাঁচাকেই জীবন বলে। সে জীবনে না হয় সবাই ভাল থাকি।
তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
এসেছেন ভাসকুলারজনিত সমস্যা নিয়ে...
রোগীর বসে থাকতেই শ্বাসকষ্ট...হাতের পালসে হাত রেখে জিজ্ঞেস করলাম...
-'হাপাচ্ছেন কেন?
-রোগীর লোকের তড়িৎ উত্তর, 'ডায়ালাইসিস এর রোগী তো স্যার, মাঝেমধ্যে ওমন হয় একটু'!
হাতটা চেক করতে করতে জিজ্ঞেস করলাম...
'টেস্ট করেছেন?'
রোগীর লোক বেশ সাবলিল।
-করোনা টেস্ট তো? জ্বী স্যার, করেছি স্যার! দুইদিন আগেই করেছি!
রোগীর হাত দেখা শেষ করে চেয়ারে বসতে বসতে জিজ্ঞেস করলাম..
'তো রেজাল্ট কি?'
রোগীর লোকের নির্ভেজাল বিদ্যুৎ গতির উত্তরঃ 'পজিটিভ, পজিটিভ স্যার'
এভাবেই জেনে বা না জেনে প্রতিদিনই কোন না কোন কোভিড পেশেন্টকে স্পর্শ করি...খালি হাতে...নো পিপিই...ফেসশিল্ড! গগলস!
স্পর্শ ছাড়া কি পালসের গতি বোঝা যায়? তাপমাত্রার তারতম্য বোঝা যায়? রোগী দেখে শান্তি পাওয়া যায়?
মুখে একটা সার্জিক্যাল মাস্ক...মনে অল্প বিস্তর সাহস...ব্যাস এতোটুকুই ভরসা!
চাচা গেল...অনেক আপনজন গেল...মা কোভিড পজিটিভ হয়ে হাসপাতালে... ছোট বোনটাও কয়েকদিন আগে কোভিড থেকে সেরে উঠেছে...স্ত্রীও শ্বাসকষ্টের রোগীদের সেবায় নিয়োজিত। পেশাগত কারণে নিজেদের নিরাপদ রাখার সুযোগ কম।
তবুও কোথায় যেন একটা সাহস কাজ করে..
'ইনশাআল্লাহ, আমার কিছু হবেনা'!
এই সাহসটাই আমাকে দায়িত্বে অবিচল রাখে...অবিচল রাখে জীবন বাজি রেখে সেবা অব্যাহত রাখা সকল স্বাস্যসেবককে!
অথচ, আমার কিছু হবেনা এমনটা ভাবতে ভাবতেই অনেকের অনেক কিছু হয়ে গেল! কেউ কেউ হারালেন সবকিছু!
কত চিকিৎসক চোখের সামনে থেকে হারিয়ে গেলেন চিরতরে!
যেকোন মুহুর্তে হারিয়ে যেতে পারি...এটা জেনেও প্রতিদিন নতুন করে বাঁচাকেই জীবন বলে। সে জীবনে না হয় সবাই ভাল থাকি।