বাংলারজমিন
লণ্ডভণ্ড চৌহালী
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
৫ ডিসেম্বর ২০২০, শনিবার, ৭:৪৩ অপরাহ্ন
যমুনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে পুরো চৌহালী এখন লণ্ডভণ্ড। ২০২ বর্গমাইল আয়তনের এই উপজেলাটি এখন ৫২ বর্গমাইলে এসে দাঁড়িয়েছে। সহায় সম্বল হারিয়ে অনেক বৃত্তশালী এখন পথে আশ্রয় নিয়েছে। হাজার হাজার বিঘা আবাদি জমি ভাঙন কবলে পড়ে এখন চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিধ্বস্ত এই উপজেলার রাস্তা-ঘাট দেখে চেনার উপায় নেই এখানে এক সময় সাজানো গোছানো একটি উপজেলা ছিল। ছিল সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিস, হাটবাজার, স্কুল কলেজ, মসজিদ মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থাপনা। প্রতিদিন এ সকল হাট-বাজারে লেগে থাকতো মানুষের কোলাহল। যমুনা নদীর করালগ্রাসে এই উপজেলাবাসী এখন আতঙ্কিত, ‘এই বুঝি চৌহালী উপজেলা জেলার মানচিত্র থেকে মুছে যায়।’ শুষ্ক মৌসুমেও থেমে নেই যমুনা নদীর ভাঙনের তীব্রতা। দিশাহারা চৌহালীর ভাঙন কবলিত মানুষগুলো।
সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চর সলিমাবাদ গ্রামের পয়লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অসময়ে যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনের তাণ্ডবে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। স্কুলটি রক্ষায় ভাঙন কবলিত এলাকায় দ্রুত বালুর বস্তা দিয়ে ডাম্পিং করা জরুরি হয়ে পড়েছে। তা না হলে যেকোনো মুহূর্তে স্কুলটি নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
এ বিষয়ে ওই স্কুলে পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক জাহাঙ্গীর ফকির, মজিবর রহমান, বাবুল আক্তার ও নেক মোহাম্মদ জানান, এ এলাকার মানুষ নদী ভাঙনে নিঃস্ব অসহায় ও হতদরিদ্র। তাদের পক্ষে পয়সা খরচ করে দূরের স্কুলে ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা করানোর সামর্থ্য নেই। এ স্কুলটি ভেঙে গেলে তাদের ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এ কারণে স্কুলটি ভাঙন থেকে রক্ষা করা অতি জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম হোসেন জানান, এ বিদ্যালয়টিতে ৪টি গ্রামের নদী ভাঙন কবলিত হতদরিদ্র পরিবারের ১০৯ জন ছেলেমেয়েরা পড়ালেখা করে। আশেপাশে আর কোনো স্কুল নেই। তাই এ স্কুলটি তাদের একমাত্র ভরসা। এটি ভেঙে গেলে পয়সা খরচ করে দূরের স্কুলে গিয়ে এদের পড়ালেখা করার মতো সামর্থ্য নেই। ফলে অর্থাভাবে এদের অনেকেরই পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এদের মানবিক বিষয় বিবেচনা করে স্কুলটি রক্ষা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। স্কুলটির সামনের ভাঙন কবলিত স্থানে কিছু বালুর বস্তা ফেলে ডাম্পিং করা হলে এ বছর স্কুলটি রক্ষা করা সম্ভব হবে। বিষয়টি চৌহালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে জানিয়েছি। কিন্তু এখনো এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় যেকোনো মুহূর্তে স্কুলটি ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কাহ্হার সিদ্দিকী বলেন, এ বিদ্যালয়সহ চৌহালী উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম যমুনা নদী ভাঙনের মুখে পড়ে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। অথচ এ ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে এ স্কুলসহ শত শত ঘরবাড়ি, বিভিন্ন স্থাপনা ও ফসলি জমি যমুনা নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। দেখার কেউ নেই।
এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর ফিরোজ বলেন, বিষয়টি আমি চৌহালী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি। তিনি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু তারা এখনো কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় স্কুল ঘরটি ওই স্থান থেকে সরিয়ে নিয়ে আপাতত নিরাপদ স্থানে রেখে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে জমি পেয়ে সেখানে ঘরটি তুলে স্কুলের কার্যক্রম চালানো হবে। এ সময় পর্যন্ত একটি মালিকানাধীন জায়গায় স্কুলের কার্যক্রম চালানো হবে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, চৌহালীর ভাঙন রোধে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে। তারা এ বিষয়ে কি ব্যবস্থা নিয়েছে তা তারাই ভালো বলতে পারবে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ভাঙন রোধে অচিরেই ওই এলাকায় জিওটেক্স বালুর বস্তা ফেলার কাজ শুরু করা হবে। এ ছাড়া ওই এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প জমা দেয়া আছে। প্রকল্পটি অনুমোদন হলেই ওই এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
সরকার ভাঙন কবলিত মানুষগুলোর জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা ও চৌহালী উপজেলার যে অংশটুকু এখনো টিকে আছে সেটুকু রক্ষায় সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে যমুনা নদীর ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে এমনটাই প্রত্যাশ উপজেলাবাসীর।
সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চর সলিমাবাদ গ্রামের পয়লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অসময়ে যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনের তাণ্ডবে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। স্কুলটি রক্ষায় ভাঙন কবলিত এলাকায় দ্রুত বালুর বস্তা দিয়ে ডাম্পিং করা জরুরি হয়ে পড়েছে। তা না হলে যেকোনো মুহূর্তে স্কুলটি নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
এ বিষয়ে ওই স্কুলে পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক জাহাঙ্গীর ফকির, মজিবর রহমান, বাবুল আক্তার ও নেক মোহাম্মদ জানান, এ এলাকার মানুষ নদী ভাঙনে নিঃস্ব অসহায় ও হতদরিদ্র। তাদের পক্ষে পয়সা খরচ করে দূরের স্কুলে ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা করানোর সামর্থ্য নেই। এ স্কুলটি ভেঙে গেলে তাদের ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এ কারণে স্কুলটি ভাঙন থেকে রক্ষা করা অতি জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম হোসেন জানান, এ বিদ্যালয়টিতে ৪টি গ্রামের নদী ভাঙন কবলিত হতদরিদ্র পরিবারের ১০৯ জন ছেলেমেয়েরা পড়ালেখা করে। আশেপাশে আর কোনো স্কুল নেই। তাই এ স্কুলটি তাদের একমাত্র ভরসা। এটি ভেঙে গেলে পয়সা খরচ করে দূরের স্কুলে গিয়ে এদের পড়ালেখা করার মতো সামর্থ্য নেই। ফলে অর্থাভাবে এদের অনেকেরই পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এদের মানবিক বিষয় বিবেচনা করে স্কুলটি রক্ষা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। স্কুলটির সামনের ভাঙন কবলিত স্থানে কিছু বালুর বস্তা ফেলে ডাম্পিং করা হলে এ বছর স্কুলটি রক্ষা করা সম্ভব হবে। বিষয়টি চৌহালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে জানিয়েছি। কিন্তু এখনো এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় যেকোনো মুহূর্তে স্কুলটি ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কাহ্হার সিদ্দিকী বলেন, এ বিদ্যালয়সহ চৌহালী উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম যমুনা নদী ভাঙনের মুখে পড়ে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। অথচ এ ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে এ স্কুলসহ শত শত ঘরবাড়ি, বিভিন্ন স্থাপনা ও ফসলি জমি যমুনা নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। দেখার কেউ নেই।
এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর ফিরোজ বলেন, বিষয়টি আমি চৌহালী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি। তিনি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু তারা এখনো কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় স্কুল ঘরটি ওই স্থান থেকে সরিয়ে নিয়ে আপাতত নিরাপদ স্থানে রেখে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে জমি পেয়ে সেখানে ঘরটি তুলে স্কুলের কার্যক্রম চালানো হবে। এ সময় পর্যন্ত একটি মালিকানাধীন জায়গায় স্কুলের কার্যক্রম চালানো হবে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, চৌহালীর ভাঙন রোধে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে। তারা এ বিষয়ে কি ব্যবস্থা নিয়েছে তা তারাই ভালো বলতে পারবে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ভাঙন রোধে অচিরেই ওই এলাকায় জিওটেক্স বালুর বস্তা ফেলার কাজ শুরু করা হবে। এ ছাড়া ওই এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প জমা দেয়া আছে। প্রকল্পটি অনুমোদন হলেই ওই এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
সরকার ভাঙন কবলিত মানুষগুলোর জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা ও চৌহালী উপজেলার যে অংশটুকু এখনো টিকে আছে সেটুকু রক্ষায় সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে যমুনা নদীর ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে এমনটাই প্রত্যাশ উপজেলাবাসীর।