খেলা

ভারত বীরত্বই বাংলাদেশের অনুপ্রেরণা

মুশফিকুর রহমান

৩ ডিসেম্বর ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৯:৫৮ পূর্বাহ্ন

এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন কাতারের মাঠে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সবচেয়ে কঠিন ম্যাচ বাংলাদেশের। ২০২২ বিশ্বকাপের স্বাগতিকদের বিপক্ষে অসম লড়াইয়ে বাংলাদেশের অনুপ্রেরণা ভারত। প্রতিবেশী দেশটি গত বছরের সেপ্টেম্বরে দোহা থেকে পয়েন্ট নিয়ে ফিরেছিল। সেই ম্যাচে কাতারকে গোলশূন্যভাবে রুখে দেয়ার বড় কৃতিত্ব ভারত গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিং সান্ধুর। নরওয়ে লীগে খেলার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ এই দীর্ঘদেহী গোলরক্ষক সেদিন তেকাঠির নীচে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। ভারতের ‘স্পাইডারম্যান’কে পরাস্ত করতে পারেননি আল ময়েজ আলী, হাসান আল হাইদোস, ইউসুফ আব্দুরিসাগরা। শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় এশিয়ান চ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি হবে বেঙ্গল টাইগার্সরা। জামাল ভূঁইয়া-আশরাফুল রানাদের অনুপ্রেরণার অন্যতম উৎস ভারতের সেই বীরত্বগাথা।

কাতারের বিপক্ষে বাংলাদেশের গোলপোস্ট সামলানোর দায়িত্ব আশরাফুল ইসলাম রানার। ২০১৮ এশিয়ান গেমসে কাতার অনূর্ধ্ব-২৩ দলের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সেই জয়ের ম্যাচে রানার দারুণ কয়েকটি সেভে অরক্ষিত ছিল বাংলাদেশের গোলপোস্ট। ইনজুরি টাইমে জামাল ভূঁইয়ার অসাধারণ ফিনিশে জয়ের উল্লাস করেছিল বাংলাদেশ অলিম্পিক দল। ঢাকায় কাতারের আক্রমণ সামলেছেন। গত বছরের অক্টোবরে হওয়া সেই ম্যাচে হজম করতে হয়েছে দুই গোল। দোহায় পরীক্ষাটা আরো কঠিন। সেটা জানেন রানা। চ্যালেঞ্জটা নিতে তৈরি ৩২ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক, ‘প্রধান চ্যালেঞ্জটা গোলরক্ষকের। ভারত কাতারের মাঠে ড্র করেছে। আমাদের খেলোয়াড়দের মধ্যেও সেই কমিটমেন্ট আছে। ভারত পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে পারলে আমরা নই কেন? সেরাটা দেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত।’

অতিমানবীয় পারফরমেন্সে গুরপ্রীত ভারতকে নিশ্চিত তিন-চারটি গোল হজম থেকে রক্ষা করেন। বড় কৃতিত্ব আদিল খান, সন্দেশ ঝিঙ্গান, রাহুল ভেকেদের সংগঠিত রক্ষণভাগের। একাধিকবার ওয়ান টু ওয়ান পজিশন থেকে কাতারিদের আক্রমণ রুখে দেন তারা। রক্ষণভাগের পারফরমেন্সের উপর অনেকটাই নির্ভর করে গোলরক্ষকের সফলতা। তপু বর্মন, ইয়াসিন খান, বিশ্বনাথ ঘোষদের সেই বার্তাও দিলেন আশরাফুল রানা। তিনি বলেন, ‘কাতার আধিপত্য বিস্তার করে খেলার চেষ্টা করবে। ডিফেন্ডারদের জন্যও কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে।’

ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে কাতারের হোঁচট খাওয়ার অন্যতম কারণ ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতা। ছিল ভাগ্যের ছোঁয়াও। ভারতের রক্ষণভাগের বড় ভুলেও গোলপোস্ট অরক্ষিতই ছিল। একবার বল লেগেছে পোস্টে। জামাল ভূঁইয়া সতীর্থদের কাছে চাইলেন নির্ভুল ফুটবল, ‘ভুল হতেই পারে। কিন্তু আমাদের ভুলের সংখ্যা কমাতে হবে।’

বাংলাদেশ খেলবে রক্ষণাত্মক ফুটবল। ডি-বক্সে প্রতিপক্ষ ফুটবলাদের আধিক্যের কারণে কাতারিরা দূর থেকে আচমকা শট নেয়। ভারতের বিপক্ষেও একইভাবে গোলের চেষ্টা করতে দেখা গেছে কাতারকে। গুরপ্রীতের অসাধারণ রিফ্লেক্সে সফলতা পায়নি গোলার মতো শটগুলো। ডিফেন্ডার তপু বর্মনও ভারতের সফলতার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়েই মাঠে নামতে চান। লাল-সবুজ রক্ষণের অন্যতম ভরসা এই ডিফেন্ডার বলেন, ‘সাহসী ফুটবল খেলতে হবে আমাদের। কাতার এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন, তারা অপরাজেয়- এসব ভেবে মাঠে নামা বোকামি হবে। তারা তো এশিয়ারই দেশ। তারা না হয় আমাদের চেয়ে ভালো ফুটবল খেলে। ভারত তো কাতারের মাঠ থেকে পয়েন্ট নিয়ে গেছে। সেই ভারতকে তো আমরা হারিয়েই দিচ্ছিলাম প্রায়।’

কাতারে ভারতের ইতিহাস রচনা করা সেই ড্রয়ে ঢাল হয়েছিলেন গুরপ্রীত, সন্দেশ ঝিঙ্গানরা। করেছিলেন নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়া পারফরমেন্স। লাল-সবুজরা তৈরি কাতারকে চ্যালেঞ্জ জানাতে। দোহার আব্দুল্লাহ বিন খলিফা স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের রুখতে বাংলাদেশেরও লাগবে ঢাল হয়ে দাঁড়ানো যোদ্ধাদের।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status