শিক্ষাঙ্গন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

ক্যাম্পাসে রঙ্গিন সাজ, তবুও নিষ্প্রাণ

এম বি রিয়াদ, ইবি প্রতিনিধি

২ ডিসেম্বর ২০২০, বুধবার, ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন

‘হিমেল হাওয়া হিম হিম করে
গাইছে দেখো গীত
শরীর আমার শির শির করে
শীত এসেছে শীত'

ভোরের শ্যামল বাংলা এখন কুয়াশার চাদরে মোড়া। সকাল-সন্ধ্যা ঘাসের সবুজ গালিচায় বিন্দু বিন্দু শিশির পড়তে শুরু করেছে। দুয়ারে কড়া নাড়তে নাড়তে চলে এসেছে শীত।

প্রতিবছর শীত মৌসুমকে ঘিরে উৎসব-আমেজে ভরপুর হয়ে উঠে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। সকালে পূব আকাশে সূর্য উঠার সঙ্গে সঙ্গেই দেখা যায় বিভিন্ন চত্বরে চায়ের চুমুকে বন্ধুদের সঙ্গে রোদ পোহানো আর আড্ডা। কাজের ফাঁকে একটু সময় পেলেই রোদে দাঁড়িয়ে থাকেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শীত উপলক্ষে চলে ব্যাডমিন্টন, ভলিবলসহ নানান প্রতিযোগিতা। সন্ধ্যা হলেই বাহারি পিঠার গন্ধে মৌ মৌ করে ক্যাম্পাসের জিয়া হল মোড় এলাকা। রাস্তার পাশেই ছোট ছোট দোকানে তৈরি হয় বাহারি রকমের শীতের পিঠা। বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত এসব দোকানে ভীড় লেগেই থাকে। পিঠা খাওয়ার প্রবল ইচ্ছা নিয়ে কেউ আবার দাঁড়িয়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

তবে এবারের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। মহামারি করোনায় সব আমেজ আজ নিস্তব্ধ। হাজারো শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখর থাকা আঙিনাটা এখন নিস্তব্ধ। শিক্ষার্থীশূন্য ক্যাম্পাস পরিণত হয়েছে বিরানভূমিতে। ভোরবেলা ক্যাম্পাস ছেয়ে থাকে ঘন কুয়াশায়। তবে কুয়াশার ধূম্রজাল মাড়িয়ে এখন আর চাদর মুড়িয়ে হাটাহাটি করে না কেউ। রাতে দেখা মেলে না খড়কুটো দিয়ে মাঠের কোনায় কিংবা হলের ছাদে গানের সঙ্গে আগুন জ্বালিয়ে আড্ডার দৃশ্য। ব্যাডমিন্টন খেলার স্থানও আজ ফাঁকা পড়ে আছে। শরীরে উঞ্চতার ছোঁয়া পেতে রাতভর ব্যাডমিন্টন খেলার দৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না। খেজুর রস খেতে দলবেঁধে মাঠে যেতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠে না কেউ।

শীত মৌসুমে প্রত্যাহ সন্ধ্যার পর জিয়া হল মোড়ে বানানো হয় ধোঁয়া ওঠা ভাপা পিঠা, পাকান পিঠা, পুলি পিঠাসহ নানান রকমের পিঠা। এই পিঠার স্বাদ নিতে সারাক্ষণ জমজমাট থাকে দোকানগুলো। দেখে মনে হবে যেন পিঠার উৎসব চলছে সেখানে। এছাড়া বিভিন্ন বিভাগ, সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো পিঠা উৎসবের আয়োজন করে থাকে। এসবের লেশমাত্রও এবছরে নেই। নেই বন্ধুদের সঙ্গে পিঠা খাওয়ার প্রতিযোগিতা কিংবা মায়াময় খুনসুটি। কেবল বইছে সুনসান নিরবতা।

প্রতিবছর শীত উপলক্ষে জিয়া মোড়ে বসে ছোট ছোট কাপড়ের দোকান। নানান ডিজাইন ও রঙ-বেরঙের কাপড়ের ফ্যাশন চলে এসব দোকানে। শিক্ষার্থীরা পছন্দমত পোশাক  ক্রয় করে এখান থেকেই। এখন কোন ক্রেতা নেই, নেই বিক্রেতাও। সেই স্থানগুলো আজ খাঁ খাঁ করছে।

১৭৫ একরের ফাঁকা ক্যাম্পাসে এখন অতিথি পাখির আধিপত্য। শীতের শুরুতেই প্রতিবছরের মতো এবারও ক্যাম্পাসে ভীড় জমিয়েছে সূদুর থেকে আসা অতিথি পাখিরা। নানা রঙ-বেরঙের পাখির কলকাকলিতে মুখর গোটা ক্যাম্পাস। উপযুক্ত পরিবেশ আর নিরাপদ আশ্রয়ে ক্যাম্পাসের লেকে এসব অতিথি পাখিরা মেতে উঠেছে জলকেলিতে। ক্যাম্পাস নিষ্প্রাণ হলেও অতিথিদের পদচারণা সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে শতগুন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status