বিশ্বজমিন

‘যুদ্ধাপরাধী’ সিরিয় জেনারেলকে পালাতে মোসাদের সহায়তা

মানবজমিন ডেস্ক

২ ডিসেম্বর ২০২০, বুধবার, ৯:৪৫ পূর্বাহ্ন

সিরিয়ায় যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের অভিযোগে অভিযুক্ত দেশটির এক জেনারেলকে অস্ট্রিয়ায় পালাতে ও রাজনৈতিক সহায়তা পেতে সহায়তা করেছে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। ইউরোপের এক জেষ্ঠ বিচারিক সূত্রের বরাত দিয়ে বৃটেনের দ্য টেলিগ্রাফ সম্প্রতি এই খবর দিয়েছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, ওই সিরিয় কর্মকর্তার নাম ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালেদ হালাবি। তিনি সিরিয়ায় যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকে রাক্কা শহরের গোয়েন্দা কার্যক্রমের প্রধান ছিলেন। তার তত্ত্বাবধায়নে থাকা একটি কারাগারে বন্দিদের হত্যা, নির্যাতন ও যৌন হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে।

বিদেশে সক্রিয় ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএসই ২০১৪ সালে হালাবিকে সিরিয়া থেকে পালাতে সহায়তা করে। তারা ভেবেছিল, যুদ্ধে সিরিয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ পরাজিত হলে হালাবিকে ব্যবহার করতে পারবে তারা। তবে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ থাকায় জেনেভা কনভেনশনের আওতায় তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়নি ফরাসি সরকার। এছাড়াও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একটি মামলার কার্যক্রমও শুরু হয়।

ইউরোপের ওই বিচারিক সুত্র অনুসারে, ফ্রান্সের কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর মোসাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন হালাবি। হালাবির গুরুত্ব বিবেচনায়, তাকে আশ্রয় পাইয়ে দিতে অস্ট্রিয়ার আভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা বিভিটির সঙ্গে যোগাযোগ করে মোসাদ।

টেলিগ্রাফের ওই প্রতিবেদন অনুসারে, ফ্রান্সের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক ইউনিট হালাবির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তদন্ত চালু করলে তাকে ফ্রান্স থেকে অস্ট্রিয়ায় নিয়ে যায় ইসরাইলি ও অস্ট্রিয় এজেন্টরা। ২০১৫ সালে তাকে আশ্রয় দেয় অস্ট্রিয়া। ভিয়েনায় একটি এপার্টমেন্ট ও ব্যাপক সরকারি সুবিধাও দেওয়া হয় তাকে। এর পাশাপাশি মোসাদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ৬ হাজার ডলার করে পেতেন তিনি।

ইউরোপীয় ওই বিচারিক সূত্র জানায়, নিশ্চিতভাবেই মোসাদ তাকে নিয়ে খুব আগ্রহী ছিল। তারা হয়তো এও ভেবেছিল যে, ভবিষ্যতে তিনি কোনো রাজনৈতিক ভূমিকাও রাখতে পারবেন।

এদিকে, যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ সংগ্রহকারী সংগঠন কমিশন ফর ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস অ্যান্ড একাউন্টিবিলিটি (সিআইজেএ) জানিয়েছে, তাদের সংগ্রহ করা নথিপত্রগুলোয় হালাবির তত্ত্বাবধানে হওয়া অপরাধগুলোর প্রমাণ রয়েছে।

সিআইজেএ পরিচালক নিরমা জেলাসিক বলেন, আমাদের কাছে বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ও নির্যাতনের শিকার হওয়া প্রায় ৪০ জনের সাক্ষ্য রয়েছে। তিনি আরো জানান, হালাবির বিরুদ্ধে হত্যা, নির্যাতন, যৌন হামলার পাশাপাশি অপ্রাপ্তবয়স্কদের নির্যাতনেরও প্রমাণ রয়েছে।

২০১৭ সালে হালাবিকে খুঁজে বের করতে ইউরোপোলকে অনুরোধ করে। ২০১৮ সালে হালাবির এপার্টমেন্টে অভিযান চালায় অস্ট্রিয় পুলিশ। কিন্তু তাকে সেখানে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপর থেকে এখন অবদি তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। প্রশ্ন হলো, তিনি কি তাহলে অস্ট্রিয়া থেকেও পালিয়েছেন? যদি তা-ই হয়, এবার তাকে পালাতে সহায়তা করলো কারা? আর কোন দেশেই বা নিয়ে যাওয়া হয় তাকে?
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status