এক্সক্লুসিভ

সিলেটে সাতদিনেও গ্রেপ্তার হয়নি তামান্নার ঘাতক স্বামী মামুন

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে

৩০ নভেম্বর ২০২০, সোমবার, ৮:১২ পূর্বাহ্ন

সাতদিনেও গ্রেপ্তার হয়নি সিলেটের নববধূ তামান্নার ঘাতক স্বামী আল মামুন। পুলিশ বলছে- তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আর তামান্নার পরিবার বলছে- ঘটনার পর বরিশালের নিজ এলাকায় পালিয়ে গেছে আল-মামুন। সেখানে প্রকাশ্যে থাকলেও তাকে ধরা হচ্ছে না। এদিকে তামান্নার খুনিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় পরিবারে ক্ষোভ কমছে না। কান্নার রোল চলছে তামান্নার পরিবারে। গত সোমবার নগরীর উত্তর কাজীটুলা এলাকার অন্তরঙ্গ ৪/এ, বাসার দু’তলার তালাবদ্ধ একটি কক্ষ থেকে গৃহবধূ তামান্না বেগমের লাশ উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। নিহত তামান্নার গলায় দাগ ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নির্যাতনের চিহ্ন দেখা যায়। এ ঘটনায় ওইদিন রাত ১১টায় এসএমপি’র কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন তামান্নার ভাই সৈয়দ আনোয়ার  হোসেন রাজা। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় তামান্নার স্বামী আল-মামুনকে। বাকি আসামিরা হলো- মামুনের বোন জামাই এমরান, পারভীন, মাহবুব সরকার, বিলকিস ও মামুনের অন্যতম সহযোগী শাহনাজ। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পর রাতেই গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এজাহারনামীয় ২ নম্বর আসামি এমরানকে নগরীর সোবহানীঘাট থেকে  গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। তিনি আল-মামুনের বোন জামাই বলে জানা যায়। এরপর ৬ দিন অতিবাহিত হলেও হত্যাকাণ্ডের মাস্টার মাইন্ড ঘাতক স্বামী আল-মামুনকে  গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। ঘাতক আল- মামুনের বাড়ি বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার  হোগলারচরে। তিনি সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারস্থ আল-মারজান শপিং সেন্টারের ঐশী ফেব্রিক্সের পরিচালক। নিহত তামান্না  বেগম দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালাবাজার ইউনিয়নের ফুলদি গ্রামের সৈয়দ ফয়জুল  হোসেন ফয়লার মেয়ে। বর্তমানে তামান্নার পরিবার গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকার এমসি একাডেমি সংলগ্ন একটি বাসায় ভাড়া থাকেন। তার বাবা সৈয়দ ফয়জুল হোসেন ফয়লা তাদের সঙ্গে থাকেন না বলে জানা গেছে। পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, তামান্নাকে বিয়ে করার আগে মামুন বরিশালে আরেকটি বিয়ে করেন। তাদের একটি সন্তানও রয়েছে। মামুনের বিরুদ্ধে সিলেট কোতোয়ালি থানায় আগের স্ত্রীর দায়ের করা একটি মামলাও রয়েছে। এসব তথ্য গোপন করে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মহিলা কর্মকর্তা শাহনাজ পারভীনের যোগসাজশে তামান্নাকে বিয়ে করেন মামুন। শাহনাজ নিজেকে মামুনের চাচাতো ভাই বলে পরিচয় দেন। বিয়ের সময় তামান্নার পরিবারকে আর্থিক সাহায্যও করেন শাহনাজ। এ ছাড়াও মামুন ভুয়া আইডি কার্ড দিয়ে তামান্নাকে বিয়ে করেছিলেন। ওই ভুয়া আইডি কার্ড শাহনাজই তৈরি করে দিয়েছিলেন। শাহনাজের মূল বাড়িও বরিশাল। মামুনের ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানায় রয়েছে নগরীর বারুতখানা এলাকার নাম।  যেটি ভুয়া বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও তার বাবার নাম রয়েছে আবুল কাশেম সরদার ও মায়ের নাম আম্বিয়া বেগম। তামান্নাকে হত্যার পর থেকে পলাতক রয়েছে মামুন- এমনটা জানিয়েছে পুলিশ। তাদের ধারণা- তামান্নাকে হত্যার পর মামুন তার নিজ  জেলা বরিশালে চলে যায়। সেখানে বাবুগঞ্জ থানার হোগলারচরের পার্শ্ববর্তী নিয়ারচর গ্রামে তার মামার বাড়িতে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। তার সঙ্গে মামলার অন্য আসামিরাও রয়েছে। সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার এবিএম আশরাফ উল্লাহ তাহের মানবজমিনকে জানিয়েছেন- আসামিদের ধরতে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে এক আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। বাকিদের ধরতেও পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গত ৩০শে সেপ্টেম্বর গোলাপগঞ্জের একটি কমিউনিটি সেন্টারে আল-মামুনের সঙ্গে বিয়ে হয় তামান্নার। বিয়ের পর থেকে মামুন তামান্নাকে নিয়ে সিলেট নগরীর উত্তর কাজীটুলা এলাকার অন্তরঙ্গ ৪/এ, বাসার দু’তলার একটি কক্ষে থাকতেন। ওই বাসা  থেকেই ২৩শে নভেম্বর দুপুর দেড়টায় তামান্নার লাশ উদ্ধার করা হয়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status