বাংলারজমিন

ইস্ট টাউন কর্তৃপক্ষের প্রতারণা, ৮ বছরেও বুঝে পাচ্ছে না প্লট

বন্দর (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

২৯ নভেম্বর ২০২০, রবিবার, ৮:২৯ পূর্বাহ্ন

বন্দরের  মদনপুর এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি আবাসন  কোম্পানি বিডিসি ইস্ট টাউন।  প্লটের পুরো টাকা পরিশোধের পর জমি রেজিস্ট্রি করে দিলেও ৭/৮ বছরেও প্লট বুঝে  দিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।  ইস্ট টাউন কর্তৃপক্ষের  প্রতারণার শিকার  জোহরা বেগম গিয়াসউদ্দিন, নাসিরউদ্দিন, মিন্টু ও কামালউদ্দিনসহ বহু গ্রাহক। প্লট বুঝে না পেয়ে  জোহরা বেগম নামের এক ভুক্তভোগী গ্রাহক বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)’র  কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তবে  ইস্ট টাউন বিডিসি কর্তৃপক্ষ বলছেন, যারা বুকিং দিয়েছেন, তাদের আগামী বছর প্লট বুঝিয়ে দেয়া হবে।   
জোহরা বেগম জানান, বন্দরের মদনপুর বিডিসি ইস্ট টাউনে এফ-১৯, প্লট নম্বর ৩৩ ব্লক-বি’ ১ নম্বর রোডের ১ নং  সেক্টরে  ৩ কাঠার একটি প্লট বুকিং দেন। কিস্তি সহ সমুদয় টাকা পরিশোধের পর ২০১৪ সালে ২৩ ফেব্রুয়ারি বন্দর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে দলিলদাতা হিসেবে বিডিসি ইস্ট টাউনের পক্ষে প্রকল্প পরিচালক মো. শামসুর রহমান দলিলে স্বাক্ষর করে জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়। এরপর  জোহরা বেগম ২০১৪ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর জমির নামজারি করেন। নামজারি ডিসিআর নং ৩১৩৭৬/১৮।  কিন্তু  ৭ বছর অতিবাহিত হলেও প্লট দখল বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে না। এতে নিরুপায় হয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ভুক্তভোগী গিয়াসউদ্দিন জানান, তিনি ৫ কাঠা জমির জন্য ১৯ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু জমি রেজিস্ট্র্রি বা বুঝিয়ে
দেয়ার ব্যাপারে কিছুই বলছেন না বিডিসি কর্তৃপক্ষ।
বন্দর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স লিডার নাসিরউদ্দিন জানান, তার বাবা ওয়াজউদ্দিন আড়াই কাঠা জমির জন্য  ২০০৩ সালে এক হাজার টাকায় বুকিং দেন। এরপর কিস্তির পুরো টাকা ৪ লাখ ৩৬ হাজার পরিশোধ করে। তার জমি বুঝিয়ে দেয়ার কথা বললে কর্তৃপক্ষ টালবাহানা করছেন বলে অভিযোগ করেন।
ঢাকার পলওয়েল মার্কেটের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া জানান,  সাড়ে ৭ কাঠা জমির জন্য আড়াই বছর আগে ১০ বছর কিস্তিতে ৫৭ লাখ টাকা পরিশোধ  করা হয়। টাকা পরিশোধ করা হলেও প্লট এখনো  বুঝে পাননি।
জনৈক কামালউদ্দিন জানান, ৫ কাঠা জমির জন্য ৩৬ লাখ টাকা পরিশোধ করেও জমি বুঝে পাননি বলে অভিযোগ করেন।
মিন্টু নামের এক গ্রাহক  বলেন, ৫ কাঠা জমির জন্য ৩৬ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। প্লট বুঝিয়ে দিবে ইস্ট টাউন কর্তৃপক্ষ তালবাহানা করে আসছেন। এ ভাবে প্রায়  গ্রাহকের কাছ থেকে  প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে জমি বুঝিয়ে  দিচ্ছে না  বিডিসি ইস্ট টাউন কর্তৃপক্ষ।   
 মদনপুর ইস্ট টাউন কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হারুনর রশিদ জানান, জমিতে মাটি কাটার কাজ চলছিল। করোনার কারণে চলতি বছরের মার্চ মাসে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে জমি বুঝিয়ে দেয়া সম্ভব হয়নি। এ কোম্পানির সিস্টেম হচ্ছে সব টাকা পরিশোধ করার দুই বছর পর জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়া হয়।   
 বিডিসি’র প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, জমি বুঝিয়ে দেয়ার ব্যাপারে এলাকাভিত্তিক কিছু জটিলতা  রয়েছে। কিছু জমি নাল পড়ে আছে। ভরাট করা হয় নাই। ভরাটের পর সামনের বছর (২০২১ সাল) জমি বুঝিয়ে  দেয়া হবে। বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শুক্লা সরকার জানান, এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন কয়েকজন গ্রাহক। অভিযোগের  পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কিন্তু সেখানে কথা বলার মতো কাউকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status