বাংলারজমিন

মাল্টা চাষে ভাগ্য বদল ওলিয়ারের

মাগুরা প্রতিনিধি

২৮ নভেম্বর ২০২০, শনিবার, ৮:২৩ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশে এক সময় মাল্টা ছিল একান্তই বিদেশি ফল, তা এখন মাগুরার মাটিতে চাষ করে ভাগ্য বদল হয়েছে মাগুরার ওলিয়ার রহমানের। তার বাগানের সুস্বাদু সবুজ রঙের মাল্টা সংগ্রহ করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজির হচ্ছেন ফল ব্যবসায়ীরা। এ বছরই তিনি তার বাগান থেকে ৩০ লাখ টাকার মাল্টা ঘরে তুলেছেন। মাগুরা সদর উপজেলার জগদল গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব ওলিয়ার রহমানের ছোটবেলা থেকেই নানা রকম বাগান করার নেশা। ৪ বছর আগে হর্টিকালচারিস্ট ড. মনিরুজ্জামানের সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি পরিকল্পনা করেন একটি মাল্টা বাগান করার। সে অনুযায়ী যশোর ঝুমঝমপুর থেকে সংগ্রহ করেন বারি-১ মাল্টার চারা। তিন বিঘা জমির ওপর শুরু করেন মাল্টার চাষ। এ বছর তার বাগান ভরে ওঠে মাল্টায়। সবমিলে ৮০০ মণ মাল্টা সংগৃহীত হয়েছে তার বাগান থেকে। দারুণ সুস্বাদু এ মাল্টার খবর ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশ থেকে ব্যবসায়ীরা আসছেন মাল্টা কিনতে। ইতিমধ্যেই ২৫ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করেছেন তিনি।  তিনি আশাবাদী আরো ৫ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি হবে।
মাল্টা চাষি ওলিয়ার রহমান জানান, চার বছর আগে আমি এই বাগানের পেছনে ৭ লাখ টাকা বিনিয়োগ করি। তখন মূলত শখের বশেই করেছিলাম। আমি ভাবিনি এই বাগান থেকে এক বছরেই ৩০ লাখ টাকার ফল পাবো। এখন আমার বাগান পরিচর্যার জন্য ৮ জন লোক কাজ করছে। এ বাগান থেকে আরো ১২ বছর ফল আসবে। আমি স্বপ্ন দেখছি আরো লোককে কাজে নেবো। এই বাগানকে আরো সম্প্রসারণ করবো।
ময়মনসিংহ থেকে আগত ফল ব্যবসায়ী লোকমান মিয়া বলেন, এই বাগানের মাল্টা খুবই মিষ্টি এবং ফরমালিন মুক্ত। অচিরেই এর বাজার বাংলাদেশের সব অঞ্চলে ছড়িয়ে যাবে। ওয়াই আর এফ পি (ইয়ার রাউন্ড ফ্রুট প্রডাকশন) প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক ড. মেহেদী মাসুদ বলেন. প্রতিবছর বাংলাদেশে ২ লাখ মেট্রিক টন মাল্টার চাহিদা রয়েছে যা বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে ৩০ হাজার মেট্রিক টন মাল্টা উৎপাদিত হচ্ছে। আমরা যদি কৃষকদের উৎসাহিত করতে পারি মাল্টা চাষে, তাহলে ভবিষ্যতে মাল্টা আমদানির প্রয়োজন হবে না। যা আমাদেরকে বিপুল পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় করতে সাহায্য করবে।
মাগুরা মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার আব্দুল্লাহ হেল কাফি বলেন, মাগুরায় মাল্টা চাষ হচ্ছে এটা একটা সুসংবাদ। মাল্টা যেমন মানব দেহে ভিটামিন সির চাহিদা পূরণ করে ঠিক তেমনি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বিশেষ করে ডায়বেটিস রোগীদের জন্য এটা খুবই সহায়ক।
হর্টিকালচারিস্ট ড. মনিরুজ্জামান বলেন, মাগুরার মাটি বেলে দোআঁশ প্রকৃতির। এ ধরনের মাটি মাল্টা উৎপাদনে সহায়ক। এ ছাড়া এই মাটিতে প্রয়োজনীয় পরিমাণ অম্লের উপস্থিতি এবং লবণাক্তহীনতা মাল্টাকে সুস্বাদু করে তুলেছে। আমরা মাগুরায় মাল্টা চাষ নিয়ে আশাবাদী।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status