বাংলারজমিন

কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুর্নীতি

করোনায় হোটেলে না থেকেও ডাক্তারদের বিল ৫৮ হাজার টাকা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

২৬ নভেম্বর ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৮:৫৭ পূর্বাহ্ন

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সেবা প্রদানে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা আবাসিক হোটেলে না থাকলেও তাদের নামে অবৈধ বিল তৈরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। হোটেলে না থেকেও ৫৭ হাজার ৬০০ টাকার হিসাব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো চিঠিতে দেখানো হয়েছে। এছাড়াও হোটেলে খাওয়া বাবদ দেখানো হয়েছে ৯৬ হাজার টাকার হিসাব। এ সংক্রান্ত কয়েকটি চিঠি গত জুলাই মাসের ৫ তারিখে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীমা শিরিন স্বাক্ষরিত পরিচালক (অর্থ), স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো স্বারক নং- উঃজেঃস্বঃকমঃ/কালীঃ/ঝিনাইঃ/২০২০/৪৭৯ চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত জুন মাসের ৬ তারিখ থেকে ৬ জন চিকিৎসক ও নার্স ৬ জন ও অন্যান্য ১২ জন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের রহমানিয়া আবাসিক হোটেলে থাকা বাবদ ৫৭ হাজার ৬০০ ও খাওয়া বাবদ ৯৬ হাজার টাকা ও গত এপ্রিল মাসের ১ তারিখ থেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বাবদ ৬৬ হাজার টাকার তথ্য প্রদান করা হয়। একই তারিখে পাঠানো স্মারক নং- উঃজেঃস্বঃকমঃ/কালীঃ/ঝিনাইঃ/২০২০/৪৭৮ চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ইতিমধ্যে কোভিড-১৯ পরিচালনার জন্য ৩ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পেয়েছে।   
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কালীগঞ্জ রহমানিয়া হোটেলের বোর্ডার রেজিস্ট্রার খাতায় ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে ২ জন, মে মাসে ১ জন, জুন মাসে ১৫ জন, জুলাই মাসে ১৪ জন, আগস্ট মাসে ২৯ জন অবস্থান করেছেন। কিন্তু ওই মাসগুলোতে থাকা বোর্ডার রেজিস্ট্রারে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোনো চিকিৎসক, নার্স ও কোনো কর্মচারীর নাম-ঠিকানা পাওয়া যায়নি। এছাড়াও রহমানিয়া হোটেলে কোনো রান্না খাবার বিক্রি করা হয় না। কালীগঞ্জ রহমানিয়া হোটেলের ম্যানেজার জসিম উদ্দিন বলেন, করোনার মধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোনো ডাক্তার, নার্স আমাদের আবাসিকে থাকেননি। রেজিস্ট্রার খাতায় যাদের নাম আছে তারাই ওই সময় এখানে ছিলেন। এর বাইরে অন্য কেউ এখানে ছিলেন না। রহমানিয়া হোটেলে কোনো রান্না করা হয় না বা কোনো  খাবার বিক্রি করা হয় না। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মাজহারুল ইসলাম জানান, শুরু থেকেই তিনি কোভিড-১৯ এ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি কখনো কোনো হোটেলে থাকেননি। আজ পর্যন্ত সরকারের কোনো প্রণোদনাও তিনি পাননি। তিনি কোভিড-১৯ এ দায়িত্ব পালনের সময় হাসপাতালের ডরমেটরিতেই ছিলেন। আরেক চিকিৎসক আর্জুবান নেছা বলেন, তিনিও কোভিড-১৯ এ স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে তিনি হোটেলে থেকেছেন। কিন্তু কত তারিখ বা কোন মাসে থেকেছেন সেটা সঠিক জানাতে পারেননি এবং তিনি এখনো কোনো প্রণোদনার টাকাও পাননি।  নাম প্রকাশ না করার শর্তে কোভিড-১৯ এ নিয়োজিত হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারী বলেন, রোগীদের নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে সব কাজ তাদের সম্পন্ন করতে হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সরকার প্রদত্ত কোনো প্রণোদনা তারা পাননি। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীমা শিরিন বলেন, হোটেলে থাকা নিয়ে রহমানিয়া হোটেলের ম্যানেজার তিনি কেন এমন বলেছেন তা আমি জানি না। তিনি দাবি করেন, ডাক্তাররা রোস্টার ডিউটি করেছেন। ওই সময় তারা রহমানিয়া হোটেলেই ছিলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status