এক্সক্লুসিভ
আঠার মাস পর জীবনের দিশা পেলাম
কাজল ঘোষ
২৬ নভেম্বর ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৮:৪৩ পূর্বাহ্ন
এটা অত্যধিক হতাশাজনক ছিল। আর এটা শুধু প্রতিদিনের কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। একজন প্রগতিশীল বিচারক যেমন হওয়া দরকার আমার বিশ্বাস ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি তেমনটি ছিল না। আমার কল্পনায় একজন প্রগতিশীল বিচারক এমন হওয়া উচিত যিনি সততার সঙ্গে তার ক্ষমতাকে ব্যবহার করবেন। দৃষ্টিভঙ্গি এবং অভিজ্ঞতার আলোকে গুরুত্বপূর্ণ অপরাধীদের শাস্তি দেয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে স্পষ্ট থাকবেন। যিনি অনুধাবন করতে পারবেন একটি নিরাপদ কমিউনিটি গড়ে তোলার জন্য সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে অপরাধ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া। আর তা কার্যকরভাবে সম্পন্ন করতে প্রয়োজন পেশাগত সক্ষমতার। আঠার মাস পর আমি আমার জীবনের দিশা পেলাম। তা ছিল লুইস রেনের দেয়া সান ফ্রান্সিসকো শহরে একটি চাকরির প্রস্তাব। লুইস হচ্ছে প্রথম কোনো নারী যিনি ওই পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি অচলায়তন ভেঙেছেন। তিনি ছিলেন নির্ভীক। তার আগ্রহ ছিল বন্দুক তৈরি থেকে তামাক কোম্পানি এবং সেইসব ক্লাবে যাওয়া যেখানে শুধু পুরুষরাই যেতো। তার ওখানে নারী ও শিশুদের সহায়তা দিতে একটি বিভাগ চালু হয়েছিল। লুইস জানতে চেয়েছিল আমার কোনো আগ্রহ আছে কিনা? তাকে বললাম- আমি কাজটি করতে চাই। তবে আমি কেবল একজন আইনজীবী হিসেবে অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখার জন্য কাজটি করবো না। আমি চাই এমন কিছু নীতি কৌশল তৈরি করতে যা পুরো পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাবে।
প্রায়শই দেখা যায়, ছোট শিশুরা অনাথ আশ্রম থেকে কিশোর বন্দি হিসেবে স্থানান্তর এবং পরে পরিণত অপরাধী হিসেবে গণ্য হয়। আমি এমন নীতি তৈরি করতে চাই যা ওদেরকে এই ধ্বংস থেকে রক্ষা করবে।
লুইস আমার পক্ষেই ছিল।
আমি সিটি অ্যাটর্নি অফিসে দু’বছর কাজ করেছি। আমি যৌন সংক্রান্ত সমস্যায় পীড়িত যুবাদের নিয়ে স্টাডি করতে যৌথ তহবিলের মাধ্যমে একটি টাস্কফোর্স গঠন করি। আমরা বিশেষজ্ঞ, সারভাইবার এবং নাগরিক প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি দল গঠন করি যারা এই কার্যক্রম পরিচালনা করবে। আমরা এই স্টাডির মাধ্যমে একগুচ্ছ সুপারিশ তুলে দেই সান ফ্রান্সিসকোর সুপারভাইজার বোর্ডের কাছে। আমার এই প্রচেষ্টার সহযোগী ছিল নরমা হোটালিং। আমরা কাজটি করতে গিয়ে যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছিলাম সে ব্যাপারে তার ছিল প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা। নরমা শিশু বয়সে নির্যাতিত হয়ে ঘরছাড়া এবং হিরোইনে আসক্ত হয়ে পড়েছিল। সে পতিতাবৃত্তিতে যুক্ত থাকার জন্য তিরিশবারের বেশি গ্রেপ্তার হয়েছিল। এরকম অনেকগুলো গল্পের মধ্যে তার জীবনের গল্পের একটি সুন্দর সমাপ্তি হয়েছিল।
নরমা অন্ধকার জীবন থেকে মুক্তি পায়। সে কলেজে পড়তে যায়। সে স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে একটি ডিগ্রি অর্জন করে। এরপর গ্র্যাজুয়েট হয়ে পতিতাবৃত্তিতে যুক্তদের জন্য একটি কর্মসূচি প্রণয়ন করে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল তাদের উদ্ধার করা। পরবর্তীতে তার এই কার্যক্রম বহুস্থানে অনুসৃত হয়েছে। আমি এর চেয়ে ভালো আর কাউকে পাচ্ছিলাম না টিম তৈরি করতে। নিজের জীবনের গল্প বলে অন্যদের সুপথে আনতে তার সাহসিকতায় আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। আমার অগ্রাধিকারের মধ্যে অন্যতম ছিল যারা অল্প বয়সে পতিতাবৃত্তিতে যুক্ত হয়েছে তাদের ভালোবাসা, সহযোগিতা ও সুচিকিৎসা দেয়ার মাধ্যমে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা। আমার অনেক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আমি দেখেছি যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে অথবা যাদের সহযোগিতা করতে চেয়েছি তাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। বেশির ভাগ ঘটনায় দেখা গেছে, তাদের পিতা-মাতা বা অভিভাবক নেই। তাদের অনেকেই অনাথ আশ্রম থেকে পালিয়েছিল। মানুষ অবাক হয়ে যেতো এটা ভেবে পুলিশ যাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে তারা আবার কীভাবে পুরনো পেশায় ফিরে যায়। এটা আমার কাছে অবাক লাগেনি, এরা আর কোথায় যেতো?
কমালা হ্যারিসের অটোবায়োগ্রাফি
‘দ্য ট্রুথ উই হোল্ড’ বই থেকে
প্রায়শই দেখা যায়, ছোট শিশুরা অনাথ আশ্রম থেকে কিশোর বন্দি হিসেবে স্থানান্তর এবং পরে পরিণত অপরাধী হিসেবে গণ্য হয়। আমি এমন নীতি তৈরি করতে চাই যা ওদেরকে এই ধ্বংস থেকে রক্ষা করবে।
লুইস আমার পক্ষেই ছিল।
আমি সিটি অ্যাটর্নি অফিসে দু’বছর কাজ করেছি। আমি যৌন সংক্রান্ত সমস্যায় পীড়িত যুবাদের নিয়ে স্টাডি করতে যৌথ তহবিলের মাধ্যমে একটি টাস্কফোর্স গঠন করি। আমরা বিশেষজ্ঞ, সারভাইবার এবং নাগরিক প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি দল গঠন করি যারা এই কার্যক্রম পরিচালনা করবে। আমরা এই স্টাডির মাধ্যমে একগুচ্ছ সুপারিশ তুলে দেই সান ফ্রান্সিসকোর সুপারভাইজার বোর্ডের কাছে। আমার এই প্রচেষ্টার সহযোগী ছিল নরমা হোটালিং। আমরা কাজটি করতে গিয়ে যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছিলাম সে ব্যাপারে তার ছিল প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা। নরমা শিশু বয়সে নির্যাতিত হয়ে ঘরছাড়া এবং হিরোইনে আসক্ত হয়ে পড়েছিল। সে পতিতাবৃত্তিতে যুক্ত থাকার জন্য তিরিশবারের বেশি গ্রেপ্তার হয়েছিল। এরকম অনেকগুলো গল্পের মধ্যে তার জীবনের গল্পের একটি সুন্দর সমাপ্তি হয়েছিল।
নরমা অন্ধকার জীবন থেকে মুক্তি পায়। সে কলেজে পড়তে যায়। সে স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে একটি ডিগ্রি অর্জন করে। এরপর গ্র্যাজুয়েট হয়ে পতিতাবৃত্তিতে যুক্তদের জন্য একটি কর্মসূচি প্রণয়ন করে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল তাদের উদ্ধার করা। পরবর্তীতে তার এই কার্যক্রম বহুস্থানে অনুসৃত হয়েছে। আমি এর চেয়ে ভালো আর কাউকে পাচ্ছিলাম না টিম তৈরি করতে। নিজের জীবনের গল্প বলে অন্যদের সুপথে আনতে তার সাহসিকতায় আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। আমার অগ্রাধিকারের মধ্যে অন্যতম ছিল যারা অল্প বয়সে পতিতাবৃত্তিতে যুক্ত হয়েছে তাদের ভালোবাসা, সহযোগিতা ও সুচিকিৎসা দেয়ার মাধ্যমে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা। আমার অনেক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আমি দেখেছি যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে অথবা যাদের সহযোগিতা করতে চেয়েছি তাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। বেশির ভাগ ঘটনায় দেখা গেছে, তাদের পিতা-মাতা বা অভিভাবক নেই। তাদের অনেকেই অনাথ আশ্রম থেকে পালিয়েছিল। মানুষ অবাক হয়ে যেতো এটা ভেবে পুলিশ যাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে তারা আবার কীভাবে পুরনো পেশায় ফিরে যায়। এটা আমার কাছে অবাক লাগেনি, এরা আর কোথায় যেতো?
কমালা হ্যারিসের অটোবায়োগ্রাফি
‘দ্য ট্রুথ উই হোল্ড’ বই থেকে