বিনোদন
লোকসানের ভয়
সিনেমা মুক্তিতে অনীহা
মাজহারুল তামিম
২৪ নভেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার, ৯:১৮ পূর্বাহ্ন
সিনেমা হল খুলে দেয়ার পাঁচ সপ্তাহ অতিক্রম হয়েছে। তারপরও যেন স্থবির অবস্থা বিরাজ করছে চলচ্চিত্র অঙ্গনে। নতুন সিনেমা মুক্তির কোনো খবর নেই। ছবি না থাকায় হলগুলোতেও দর্শকদের আনাগোনা নেই স্বাভাবিকভাবে। হল খোলার পর কেবল ‘সাহসী হিরো আলম’ ও ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ শীর্ষক দু’টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। এ দু’টি ছবির পর থেকে আর কোনো ছবিই মুক্তি পায়নি। বরঞ্চ অনেক হল পুরাতন ছবি চালাচ্ছে। আবার অনেক হল বন্ধ অবস্থায় আছে। আর স্টার সিনেপ্লেক্স ও যমুনা ফিউচার পার্কে চলছে হলিউডভিত্তিক ছবি। সব মিলিয়ে দেশের হলগুলো চাঙ্গা করার জন্য কোথাও কোনো উদ্যোগও দৃশ্যমান হয়নি। বেশকিছু বড় বাজেটের সিনেমা প্রস্তুত থাকলেও কোনো প্রযোজক-পরিচালকই এই সময়ে মুক্তি দেয়ার পক্ষে নেই। মূলত করোনার এই সময়ে লোকসানের ভয়ে সিনেমাগুলো মুক্তি দিতে চাচ্ছেন না তারা। অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, করোনার এই কঠিন পরিস্থিতিতে কোনো সিনেমা মুক্তি দিলে ভরাডুবি নিশ্চিত। প্রযোজক, পরিচালক ও হল মালিকদের তথ্যমতে ২০টির বেশি চলচ্চিত্র এখন মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘বিদ্রোহী’, ‘মিশন এক্সট্রিম’, ‘বিশ্ব সুন্দরী’, ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’, ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ টু’, ‘শান’, ‘পরান’, ‘বিক্ষোভ’, ‘মেকআপ’, ‘জ্বিন’, ‘ওস্তাদ’, ‘ক্যাসিনো’, ‘আনন্দ অশ্রু’ প্রভৃতি। এরমধ্যে ‘মিশন এক্সট্রিম’ ছবির পরিচালক সানি সানোয়ার মানবজমিনকে বলেন, ছবি তো তৈরিই হয় দর্শকদের জন্য। প্রত্যেকটা পরিচালক-প্রযোজকদের স্বপ্নই থাকে তার সিনেমাটা লাখ লাখ মানুষ দেখুক। হল খুলে দিলেও এখন অস্বাভাবিক একটা অবস্থা বিরাজ করছে। হলে আসার মতো দর্শক সংখ্যা তো একবারেই কম। এই অবস্থায় সিনেমা মুক্তি দিলে স্বাভাবিকভাবেই খুব বেশি দর্শক আসবে না। কারণ, সিনেমা হলে আসার মতো পরিস্থিতি এখনো হয়নি। নিশ্চিত লোকসান গুনতে হবে। ‘মিশন এক্সট্রিম’ বড় বাজেটের ছবি উল্লেখ করে এই নির্মাতা আরো বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের সিনেমাটি মুক্তি দেয়া সম্ভব না। আমরা আপাতত কিছু ভাবছি না। এ বিষয়ে ‘শান’ ছবির পরিচালক এম এ রহিম বলেন, আমাদের সিনেমাটা ঈদে মুক্তির কথা ছিল। পরে মুক্তির তারিখ বাতিল করতে হয়। আর এখন যে পরিস্থিতি তাতে ছবিটি কবে মুক্তি দিবো তা বলতে পারছি না। এখন সিনেমা মুক্তি দিলে দর্শক আসবে কিনা তা নিয়ে আমরা দ্বিধায় আছি। তবে ‘বিশ্বসুন্দরী’ সিনেমার পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী ভিন্ন মত দিয়েছেন এ ব্যাপারে। তিনি বলেন, করোনা তো দুই-এক বছরে শেষ হবে বলে মনে হচ্ছে না। এভাবে তো বসে থাকলেও হবে না। সরকারি প্রতিষ্ঠান, মার্কেট, বিনোদন কেন্দ্রসহ সবকিছুই চলছে। সিনেমা হলেও নতুন সিনেমা মুক্তি দেয়া উচিত। কাউকে না কাউকে এগিয়ে আসতে হবে। কিন্তু প্রযোজকরা এখন চিন্তায় আছেন সিনেমা মুক্তি দিলে চলবে কি না। তারা তো টাকা লগ্নি করেছেন। যাই হোক আমি মনে করি প্রযোজকদের ঝুঁকি নিতে হবে। ভালো ভালো সিনেমা মুক্তি দিয়ে হলগুলো চাঙ্গা করতে হবে। তাহলেই সিনেমা বাঁচবে, সিনেমার মানুষ বাঁচবে।