প্রথম পাতা
রাজউকে গোল্ডেন মনিরের বিকল্প প্রশাসন
বিশেষ প্রতিনিধি
২৩ নভেম্বর ২০২০, সোমবার, ৯:৩৫ পূর্বাহ্ন
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে গোল্ডেন মনির প্রায় অর্ধ শতাধিক সহযোগী পুষতেন। এসব সহযোগী তার সব কাজের কাজী। নিজের সুবিধা মতো শ্রমিক লীগের এসব নেতাকে কাজে লাগাতেন। বিনিময়ে তাদের দিতেন মোটা অঙ্কের নজরানা। রাজউকের শ্রমিক লীগের সাবেক নেতা আব্দুল মালেক, শামসুল আলম মিল্কী ও আওরঙ্গজেব সিদ্দিকী নান্নুসহ অনেকেই গোল্ডেন মনিরের পুরনো সঙ্গী। এর বাইরে রাজউকে কর্মরত অর্ধশতাধিক সহযোগী রয়েছে তার। এসব সহযোগীদের সঙ্গে গোল্ডেন মনিরের দহরম মহরমের কথা সর্বজনবিদিত। নতুন করে শ্রমিক লীগ নেতা বাশার শরীফ তার সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত হন। রাজউকের এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে বিকল্প প্রশাসন গড়ে তোলেন তিনি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজউকে নিজের সুবিধা মতো চেয়ারম্যান, সদস্য বা পরিচালক পেলে গোল্ডেন মনিরের আনাগোনা বেড়ে যেতো। এরপর ‘ঝামেলা’র ফাইলগুলোর প্রতি নজর দিতেন তিনি। ‘যেকোনো কিছু’র বিনিময়ে এসব ফাইল ঠিক করতেন গোল্ডেন মনির। রাজউক সূত্রে জানা গেছে, গোল্ডেন মনির নিজের কব্জায় শতাধিক ফাইল সব সময় রাখতেন। এ জন্য রাজউকের এনেক্স ভবনে তার তিনটি রুম ছিল। এসব রুমে ঝামেলার নথিপত্র সংরক্ষণ করতেন। এসব কাজে তার সঙ্গী ছিলেন শ্রমিক লীগের নেতা ও অসাধু কর্মচারীরা। মাঝে মধ্যে চেয়ারম্যান ও সদস্যদেরও এ কাজে ব্যবহার করতেন তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান ও সদ্য সাবেক বিদ্যুৎ সচিব সুলতান আহমেদ ফাইল গায়েব চক্রের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেন। গেল বছরের ১৫ই অক্টোবর সুলতান আহমেদ নিজে দু’জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে এনেক্স ভবনে গোল্ডেন মনিরের আস্তানায় অভিযান চালান। রাজউকের পেছনের এনেক্স ভবনের কয়েকটি কক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের গায়েব হওয়া মোট ৭২টি প্লটের ফাইল উদ্ধার করেন। ফাইল উদ্ধারের সময় রাজউকের অফিস সহায়ক পারভেজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, ফাইল গায়েবকারী শ্রমিক লীগ নেতা বাশার শরীফ ও গোল্ডেন মনির ওইদিন পালিয়ে যায়। রাজউক কর্মচারীরা জানান, বর্ধিতাংশ ভবনের একটি কক্ষ অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক কমিশনার আবদুল কাইয়ুম ভাড়া নিয়েছিলেন। ওই কক্ষ থেকে কিছু ফাইল উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া রাজউক শ্রমিক লীগের কক্ষ থেকে আরো কিছু ফাইল পাওয়া যায়। গোল্ডেন মনির রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে যোগসাজশ করে বিভিন্ন প্লটের ফাইল নিয়ে ওই কক্ষে রাখতেন। ওই কক্ষেই প্লট বেচাকেনাসহ গায়েব হওয়া ফাইল ফিরিয়ে দেয়া-সংক্রান্ত কাজের দেন-দরবার হতো। অভিযানের পর ফাইল গায়েব হওয়া রুমগুলোতে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়। এরপর সুলতান আহমেদ যতদিন চেয়ারম্যান ছিলেন ততদিন রাজউক ভবনমুখী হননি গোল্ডেন মনির। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমানের আমলে শত কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন গোল্ডেন মনির। এ সময় বাড্ডার শতাধিক প্লট ঠিকঠাক করেন তিনি। এ ছাড়া পূর্বাচলে প্রাতিষ্ঠানিক প্লট নেয়াসহ নানা কিছু করেন। এ ছাড়া তিন পরিচালকসহ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সঙ্গে গোল্ডেন মনিরের সখ্যতার কথা রাজউকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মুখে মুখে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজউকের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের ধরলে গোল্ডেন মনিরের অনেক অজানা সম্পদ ও কাহিনী জানতে পারবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
৮ বছর আগেই মামলা করেছিল দুদক: র্যাবের অভিযানে সদ্য গ্রেপ্তার গাড়ি ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে ২০১২ সাল থেকেই অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধান শেষে ওই বছরই মামলা করে সংস্থটি। তবে হাইকোর্টে আবেদনের মাধ্যমে এতোদিন কোনো মতে নিজেকে আড়াল করেন গোল্ডেন মনির। এরই মধ্যে দুর্নীতি-অপকর্মের মাধ্যমে রাজার রাজত্ব গড়ে তোলেন তিনি। দুদকের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র মানবজমিনকে বিষয়টি নিশ্চিত করে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে দুদকে আরো দু’টি অনুসন্ধান চলছে গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে। অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। গোল্ডেন মনির ঢাকার উত্তরায় জমজম টাওয়ারসহ বিভিন্ন স্থানে প্লট-ফ্ল্যাটের মালিক হওয়ার প্রমাণ পেয়েছে দুদক। তদন্তকারী কর্মকর্তারা আরো জানান, শিগগিরই অনুসন্ধান শেষে মূল প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে কমিশনে। তারই ধারাবাহিকতায় অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হবে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে দুদকের এক কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, মনিরের বিরুদ্ধে দুদকে আগেই মামলা ছিল। এরপর আরো দুইটির অনুসন্ধান চলমান। তবে এ অনুসন্ধান কার্যক্রমও শেষ পর্যায়ে। প্রতিবেদন জমা দেয়ার অপেক্ষায়। শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। এরপর কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে মামলা করা হবে।
জানা যায়, গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে দুদক এক মাস আগেই অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে। এর আগেও একটি অনুসন্ধান চলমান সংস্থাটিতে। দুই অনুসন্ধানে সংস্থাটি গোল্ডেন মনিরের টাকার কুমির হওয়ার বিষয়টির প্রমাণ পায়। এতে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বেশকিছু অবৈধ অর্থে প্লট ও ফ্ল্যাটের মালিক হওয়ার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। এছাড়া রাজধানীর উত্তরার ১১নং সেক্টরে নির্মিত জমজম টাওয়ার গোল্ডেন মনিরের মালিকানায় রয়েছে বলে জানায় দুদক।
তিন মামলায় ১৮দিনের রিমান্ড: ওদিকে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক রাখার দায়ে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে এবং বিভিন্ন দেশের মুদ্রা রাখার দায়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা করেছে র্যাব। এই তিন মামলায় ৭ দিন করে ২১ দিনের রিমান্ড চেয়ে গতকাল বাড্ডা থানা পুলিশ মনির হোসেনকে আদালতে হাজির করে। মহানগর হাকিম শুনানি শেষে মনিরের ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এরমধ্যে অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আবু বক্কর সিদ্দিক অস্ত্র মামলায় ৭ ও বিশেষ মতা আইনে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে বিচারক বলেন, দুই মামলার রিমান্ড একসঙ্গে কার্যকর হবে। অন্যদিকে ঢাকা মহানগর হাকিম মাসুদুর রহমান মাদক মামলায় ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শুনানিতে রাষ্ট্রপ থেকে আদালতে বলা হয়, আসামির বাসায় অবৈধ অস্ত্র ও টাকা পয়সা পাওয়া গেছে। এর উৎস জানার জন্য আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ জরুরি। অপরদিকে আসামিপ েআদালতে বলা হয়, হয়রানির জন্য এই মামলা।
৮ বছর আগেই মামলা করেছিল দুদক: র্যাবের অভিযানে সদ্য গ্রেপ্তার গাড়ি ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে ২০১২ সাল থেকেই অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধান শেষে ওই বছরই মামলা করে সংস্থটি। তবে হাইকোর্টে আবেদনের মাধ্যমে এতোদিন কোনো মতে নিজেকে আড়াল করেন গোল্ডেন মনির। এরই মধ্যে দুর্নীতি-অপকর্মের মাধ্যমে রাজার রাজত্ব গড়ে তোলেন তিনি। দুদকের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র মানবজমিনকে বিষয়টি নিশ্চিত করে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে দুদকে আরো দু’টি অনুসন্ধান চলছে গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে। অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। গোল্ডেন মনির ঢাকার উত্তরায় জমজম টাওয়ারসহ বিভিন্ন স্থানে প্লট-ফ্ল্যাটের মালিক হওয়ার প্রমাণ পেয়েছে দুদক। তদন্তকারী কর্মকর্তারা আরো জানান, শিগগিরই অনুসন্ধান শেষে মূল প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে কমিশনে। তারই ধারাবাহিকতায় অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হবে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে দুদকের এক কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, মনিরের বিরুদ্ধে দুদকে আগেই মামলা ছিল। এরপর আরো দুইটির অনুসন্ধান চলমান। তবে এ অনুসন্ধান কার্যক্রমও শেষ পর্যায়ে। প্রতিবেদন জমা দেয়ার অপেক্ষায়। শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। এরপর কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে মামলা করা হবে।
জানা যায়, গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে দুদক এক মাস আগেই অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে। এর আগেও একটি অনুসন্ধান চলমান সংস্থাটিতে। দুই অনুসন্ধানে সংস্থাটি গোল্ডেন মনিরের টাকার কুমির হওয়ার বিষয়টির প্রমাণ পায়। এতে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বেশকিছু অবৈধ অর্থে প্লট ও ফ্ল্যাটের মালিক হওয়ার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। এছাড়া রাজধানীর উত্তরার ১১নং সেক্টরে নির্মিত জমজম টাওয়ার গোল্ডেন মনিরের মালিকানায় রয়েছে বলে জানায় দুদক।
তিন মামলায় ১৮দিনের রিমান্ড: ওদিকে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক রাখার দায়ে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে এবং বিভিন্ন দেশের মুদ্রা রাখার দায়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা করেছে র্যাব। এই তিন মামলায় ৭ দিন করে ২১ দিনের রিমান্ড চেয়ে গতকাল বাড্ডা থানা পুলিশ মনির হোসেনকে আদালতে হাজির করে। মহানগর হাকিম শুনানি শেষে মনিরের ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এরমধ্যে অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আবু বক্কর সিদ্দিক অস্ত্র মামলায় ৭ ও বিশেষ মতা আইনে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে বিচারক বলেন, দুই মামলার রিমান্ড একসঙ্গে কার্যকর হবে। অন্যদিকে ঢাকা মহানগর হাকিম মাসুদুর রহমান মাদক মামলায় ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শুনানিতে রাষ্ট্রপ থেকে আদালতে বলা হয়, আসামির বাসায় অবৈধ অস্ত্র ও টাকা পয়সা পাওয়া গেছে। এর উৎস জানার জন্য আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ জরুরি। অপরদিকে আসামিপ েআদালতে বলা হয়, হয়রানির জন্য এই মামলা।