বাংলারজমিন

গৃহবধূর শরীরে আগুনের ছ্যাঁকা চার মাসেও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

২২ নভেম্বর ২০২০, রবিবার, ৯:০০ পূর্বাহ্ন

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার গুজিরকোনা গ্রামের মো. ইলিয়াস আহম্মেদ (২৮) ও তার মা মোছা. রেহেনা খাতুনের (৪৩) বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য গৃহবধূ মোছা. নূরন্নেহার ওরফে নূর নাহারকে (২৪) নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে। যৌতুকের দাবি মেটাতে না পারায় তার শরীরে আগুনের ছ্যাঁকা দেয়া হয়। এ ব্যাপারে আদালতে মামলা করলেও গতকাল পর্যন্ত মামলার কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। আসামিরা বাদী মোছা. নুরন্নেহারকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি প্রদান করছে। জানা গেছে, সদর উপজেলার কে. গাতী ইউনিয়নের হরিদাসপুর গ্রামের মো. জসিম উদ্দিনের মেয়ে মোছা. নুরন্নেহার ওরফে নূর নাহারের সঙ্গে প্রায় দুই বছর আগে পার্শ্ববর্তী জেলার দুর্গাপুরের গুজিরকোনা গ্রামের মো. গাজী রহমানের ছেলে মো. ইলিয়াস আহম্মেদের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে খাট, আলনা, সোকেস, স্বর্ণের আংটি ও বিভিন্ন আসবাবপত্র দেয়া হয়। বিয়ের কিছুদিন পর বাবার বাড়ি থেকে আরো এক লাখ টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে বেকার স্বামী ইলিয়াস আহম্মেদ ও তার মা রেহেনা খাতুন। এ নিয়ে নূরন্নেহারকে প্রায়ই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো। গত ৮ই জুন নূরন্নেহারের ভাই আলী আকবর বোনকে দেখার জন্য তার স্বামীর বাড়ি হরিদাসপুরে আম, কাঠাল, চিড়া, মুড়ি নিয়ে যায়। ভাই চলে গেলে নূরন্নেহারকে যৌতুকের কথা বলেছে কি না জিজ্ঞেস করে। যৌতুকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তাকে ঘর থেকে বের করে মাটিতে ফেলে নির্যাতন শুরু করে। চুলার  জ্বলন্ত লাকড়ি দিয়ে হাতে পিঠে আগুনের ছ্যাঁকা দেয়। গৃহবধূর স্বামী ইলিয়াস আহম্মেদ গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। এতে করে নূরন্নেহার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। মোবাইলে গৃহবধূর বাবাকে জানানো হয় তার অসুখ হয়েছে। খবর পেয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে অজ্ঞান ও অগুনে পোড়া অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে ভাই আলী আকবর চিৎকার শুরু করে। আশেপাশের মানুষ এসে আহত গৃহবধূকে  নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ব্যাপারে দুইদিন পর নেত্রকোনা মডেল থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি।
পরে ২১শে জুলাই মোছা. নূরন্নেহার ওরফে নূর নাহার বাদী হয়ে স্বামী মো. ইলিয়াস আহম্মেদ ও শাশুড়ি মোছা. রেহেনা খাতুনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলা দায়েরের প্রায় চার মাসেও আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। আসামিরা মামলা তুলে নেয়ার জন্য বাদী ও তার পরিবারকে নানাভাবে হুমকি প্রদান করছে। নেত্রকোনা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসে) মো. তাজুল ইসলাম জানান, মামলার আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। হুমকি দেয়ার বিষয়টি তাদের জানা নেই।  
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status