শেষের পাতা

ভ্যাকসিন ঘিরে আশা-দুরাশা

ফরিদ উদ্দিন আহমেদ

২১ নভেম্বর ২০২০, শনিবার, ৮:৫৭ পূর্বাহ্ন

করোনার ভ্যাকসিন ঘিরে আশা দেখছেন মানুষ। ভাইরাসটির মহামারি থেকে মুক্তি পেতে ভ্যাকসিনের অপেক্ষায় এখন গোটা বিশ্ব। বাইরের দুনিয়ায় করোনাভাইরাসের একের পর এক টিকার সাফল্যের খবরে আলো বাড়ছে বাংলাদেশেও। দেশে কবে টিকা আসবে, কবে নাগাদ দেশের মানুষের শরীরে প্রয়োগ করার সুযোগ ঘটবে এমন প্রশ্ন এখন সকলের মুখে মুখে। আলোচনা সরকারের শীর্ষ পর্যায়েও। তবে বাস্তবে এখনো আশা-নিরাশার দোলায় দুলছে দেশে টিকার ভাগ্য।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু দেশে টিকা উদ্ভাবনের একটি মাত্র উদ্যোগ ছাড়া আর কোনো কিছুই নেই। তাই অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে যতক্ষণ না বড় দেশগুলোর চাহিদা পূরণ শেষ হবে কিংবা দেশে টিকার জোগান আসবে।
সম্প্রতি ফাইজার-বায়োএনটেকের দাবি, তাদের টিকা করোনা রোধে ৯৫ শতাংশ সক্ষম। অক্সফোর্ড জানিয়েছে, তাদের ভ্যাকসিন ষাটোর্ধ্ব বয়সীদের শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করছে। মডার্নার টিকা ৯৪ দশমিক ৫ শতাংশ, রাশিয়ার টিকা ৯২ শতাংশ কার্যকর বলে দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এগিয়ে চলেছে ভারত, চীনের টিকার হিউম্যান ট্রায়ালও।
দেশে সানোফির উদ্ভাবিত টিকার পরীক্ষামূলক অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা গেছে। ফরাসি ওষুধ কোম্পানি সানোফির উদ্ভাবিত টিকার ট্রায়ালের (কার্যকারিতা পরীক্ষা) প্রস্তুতি নিচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)। ইতিমধ্যে প্রটোকল বা গবেষণাবিধি বাংলাদেশ মেডিকেল রিচার্স কাউন্সিলে (বিএমআরসি) জমা দিয়েছে। এ বিষয়ে বিএসএমএমইউ’র ভিসি অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া মানবজমিনকে বলেন, সানোফির সঙ্গে আলাপ আলোচনা চলছে। চূড়ান্ত পর্যায়ে আসলেই চুক্তি করা হবে। প্রাথমিকভাবে গবেষণাবিধি বাংলাদেশ মেডিকেল রিচার্স কাউন্সিলে (বিএমআরসি) জমা দেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) তৃতীয় ধাপের টিকাটির ট্রায়ালের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে আইসিডিডিআরবিতে চীনের সিনোভ্যাক ও বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেকের টিকার ট্রায়ালের নতুন কোনো অগ্রগতি নেই।
সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা অনুসারে এরইমধ্যে দেশে অগ্রাধিকারভিত্তিক তালিকা তৈরি ও টিকা পাওয়ার পর তা আমদানি, সংরক্ষণ ও প্রয়োগের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। মাঠপর্যায়েও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রস্তুত করা হচ্ছে টিকা প্রয়োগের জন্য। প্রথম দিকে জাতীয় টিকাদান কর্মসূচির আদলে কর্মসূচি ঘোষণা করে টিকা দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছিল, সেখানে জনবল সংকটের কারণে এখন তা একযোগে না করে ভাগে ভাগে করার পরিকল্পনা চলছে বলে জানা গেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্র থেকে।
১৯শে নভেম্বর টিকা বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্যাভি অ্যালায়েন্স ও কোভেক্স নেতাদের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের একটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক শুরু হয়েছে। আগেই সরকার কোভেক্সভুক্ত হয়েছে এবং নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকাও দিয়েছে, যেখান থেকে প্রাথমিকভাবে ২০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর জন্য টিকা পাবে বাংলাদেশ। পরে আরো ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ মানুষের টিকা আসার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। কিন্তু এই মাধ্যমে বাংলাদেশে কবে নাগাদ টিকা আসতে পারে, তা এখনো কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০টি কোম্পানির ভ্যাকসিন আন্তর্জাতিক এ সংস্থাটির তালিকাভুক্ত হয়েছে এবং হিউম্যান ট্রায়াল পর্যায়ে রয়েছে ১০টি। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেকের তৈরি তিনটি ভ্যাকসিনকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভ্যাকসিন প্রি-ক্লিনিক্যাল ক্যান্ডিডেটের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। হিউম্যান ট্রায়ালের অনুমোদন নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status