বাংলারজমিন
পাম ওয়েলের সঙ্গে ডালডা মিশিয়ে ‘খাঁটি গাওয়া ঘি’ তৈরি করতেন তিনি
স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ থেকে
২০২০-১১-২০
ঘিয়ের ন্যূনতম উপাদান নেই, অথচ নাম তার ‘খাঁটি গাওয়া ঘি’। পাম অয়েল, ডালডা ও ক্ষতিকারক রং একত্রে চুলায় জাল দিয়ে, তার সঙ্গে ফ্লেভার মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এই ঘি। কিশোরগঞ্জের লতিবাবাদ মুকসেদপুর এলাকায় ‘ইলমা এন্ড রেদোয়ান কনজ্যুমার প্রডাক্ট’ নামে অনুমোদনহীন একটি কারখানায় তৈরি হচ্ছে এসব ঘি। পরে এগুলো অত্যাধুনিক মেশিনে টিনের কৌটাজাত করে বাহারি এমনকি দেশের নামি-দামি কোম্পানির মোড়ক লাগিয়ে কিশোরগঞ্জসহ আশপাশের জেলা ও বিভিন্ন উপজেলায় বাজারজাত করছে দীর্ঘদিন ধরে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই ভেজাল ঘি তৈরির কারখানায় অভিযান চালায় র্যাব-১৪ সিপিসি-২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের একটি দল। জেলা প্রশাসন ও র্যাবের সমন্বিত এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাব কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেফটেনেন্ট কমান্ডার এম শোভন খান বিএন এবং জেলা কালেক্টরেটের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহামুদুল হাসান। অভিযানে কয়েক হাজার লিটার ভেজাল ঘি, তৈরির মালামাল, কেমিকেল পরীক্ষা করার ভুয়া সরঞ্জাম ও মেশিন জব্দ করা হয়। সিলগালা করে দেয়া হয় কারখানাটি। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারখানার মালিক মহিউদ্দিন আহমেদ ইমনকে ভোক্তা অধিকার আইনে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহামুদুল হাসান। কারখানার মালিক মহিউদ্দিন আহমেদ ইমন জেলার নিকলী উপজেলার ধীরুয়াইল গ্রামের মকবুল আহমেদের ছেলে। জেলা শহরের কাঁচারিবাজারের আদালত মার্কেটে তার নিজস্ব একটি পাইকারি মুদি দোকান রয়েছে। তার কারখানায় তৈরি করা ‘স্বদেশ খাঁটি গাওয়া ঘি’, ‘বাঘাবাড়ী স্পেশাল প্রিমিয়াম ঘি’ নাম দিয়ে কারখানা ও দোকান থেকে এসব ভেজাল ঘি বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করতেন তিনি। এছাড়া বাবুর্চিরা যেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের রান্নায় ভেজাল এই ঘি ব্যবহার করেন, সেজন্য তাদের বিশেষ টোকেন দেয়া হতো। এর মাধ্যমে রমরমা প্রাণঘাতী এই বাণিজ্য চালিয়ে আসছিলেন এই ভেজাল কারবারি। এ বিষয়ে র্যাব কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম শোভন খান বিএন বলেন, এসব ভেজাল ঘি তৈরিতে যেসব মালামাল ব্যবহার হচ্ছিল, এগুলো মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। জব্দকৃত ভেজাল ঘি ও মালামাল ধ্বংস করা হবে। র্যাবের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বিত এ রকম ভেজালবিরোধী অভিযান নিয়মিত চলবে। যারা খাদ্যে ভেজাল দিচ্ছে তারা দেশ ও জাতির শত্রু, তাদেরকে কোনো রকম ছাড় দেব না আমরা।