শেষের পাতা

উত্তপ্ত মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট পরিচালক অবরুদ্ধ

স্টাফ রিপোর্টার

২০২০-১১-১৯

সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিম হত্যা মামলায় জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করেছেন হাসপাতালটির চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল সকাল থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা হাসপাতালের পরিচালককে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা দুর্ভোগে পড়েন।  নবাবগঞ্জ থেকে মো. জসীম তার ১৮ বছর বয়সী ছেলের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসেন। কিন্তু বহির্বিভাগে টিকেট না পেয়ে আর চিকিৎসা নিতে পারেননি। চাঁদপুর থেকে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আসেন ভোলা মিয়া। তিনি বলেন, দুই বছর আগে আমি মানসিকভাবে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ি। এরপর পাবনায় দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে এখানে নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছি। কিন্তু আজ চিকিৎসকরা কর্মবিরতি দিয়েছেন। কতোদূর থেকে কষ্ট করে ডাক্তার দেখাতে এলাম। ঢাকায় পরিচিত কেউ নেই। যেখানে থাকবো। মানিকগঞ্জ থেকে মানসুরা বেগম তার মেয়েকে নিয়ে এসেছেন ডাক্তার দেখাতে। তিনি বলেন, হাসপাতালে এসে টিকেট কেটে ডাক্তারের কক্ষে গেলাম। ডাক্তার বলেন, আমরা রোগী দেখবো না। অথচ, অনেক টাকা খরচ করে প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করে এসেছি। এখন আবার ফিরে যেতে হবে।  
সরজমিন দেখা গেছে, গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত রাজধানীর মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে আড়াই ঘণ্টা সব ধরনের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটের পরে হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগী দেখা শুরু হলেও হাসপাতালের পরিচালক বিধান চন্দ্র রায় পোদ্দারসহ কয়েকজন কর্মকর্তা তখনো প্রশাসনিক ব্লকে তাদের কক্ষে অবরুদ্ধ ছিলেন। এর আগে বেলা ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে পরিচালকের কক্ষের তালা খুলে দিয়ে তার সঙ্গে সাংবাদিকদের কথা বলার সুযোগ দেন আন্দোলনকারীরা। চিকিৎসক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার অবৈধ। গ্রেপ্তারের যথাযথ ব্যাখ্যা এবং তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সম্মানের সঙ্গে চাকরিতে পুনর্বহাল করার দাবি জানান তারা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিত হাসপাতালের কর্মীদের নির্ভয়ে কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বিধান চন্দ্র রায় পোদ্দার মানবজমিনকে বলেন, আমাদের কোনো কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের আগে প্রথমে আমাকে সে বিষয়ে অবহিত করার কথা নিয়ম অনুযায়ী। হাসপাতালের রেজিস্ট্রার আব্দুল্লাহ আল মামুন ডরমিটরিতে (আবাসিক ভবন) থাকতেন। ডা. মামুনকে ভোর ৪টার সময় সাদা পোশাকে কে বা কারা উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে খবর পেয়ে বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে জানিয়েছিলেন বলে জানান- অধ্যাপক ডা. বিধান পোদ্দার। তিনি বলেন, কিন্তু আমাকে কেউ আগে কিছু জানায়নি। ডিজি স্যার আমাকে স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি। পরবর্তীতে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের মাধ্যমে পুরো বিষয়টা জানতে পারি। অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু জানানো হয়নি।
তিনি বলেন, ডা. মামুনকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় সবাই ক্ষুব্ধ। তারা আমার কাছে এসেছেন, তাদের বলেছি, সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি বিষয়টি সুরাহা করতে। রোগীদের দুর্ভোগ হয় এমন কিছু না করতে তাদেরকে বলা হয়েছে। ফলে তারা পুনরায় রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া শুরু করেছেন।
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status