দেশ বিদেশ

ক্যাসিনো পুকারে টালমাটাল চট্টগ্রামের অভিজাতপাড়া

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে

৮ নভেম্বর ২০২০, রবিবার, ৯:৪৩ পূর্বাহ্ন

 গত বছর ক্যাসিনো কর্মকাণ্ড নিয়ে ঢাকায় তোলপাড়ের পর চট্টগ্রামেও এর প্রভাব পড়েছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাজধানী ঢাকাসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন ক্লাবগুলোতেও অভিযান চালায়। নামী-দামী ক্রীড়া সংস্থার বিভিন্ন ক্লাব তখন বন্ধ করে দেয়া হয়। ওইসময় চট্টগ্রামে ক্যাসিনোর আলামত না পাওয়ার দাবি করলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জুয়া খেলার অভিযোগে নগরীর বিভিন্ন ক্লাবের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। কিন্তু করোনোভাইরাস সংক্রমণ রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে চট্টগ্রামে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে জুয়াড়ি চক্র। বিশেষ করে পুকার নামে একটি ক্যাসিনো জুয়া খেলায় চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশী, নাসিরাবাদ, হিলভিউ, বাকলিয়া, চান্দগাও, বায়েজীদ, জামালখান, ডবলমুৃরিং, পাঁচলাইশ ও আগ্রাবাদের অভিজাত পাড়ার যুব শ্রেণী টালমাটাল হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন বিকাল হলেই অভিজাত ক্লাবগুলোতে জুয়াড়িরা ক্যাসিনো পুকারে মেতে উঠেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা। ভুক্তভোগীদের মতে, নগরীর এক শিল্পপতি ও রাজনৈতিক নেতার ছেলের ক্যাসিনো পুকার বোর্ড জুয়ার আসরে যোগ দিচ্ছে অভিজাত শ্রেণির যুবারা। এই ক্যাসিনোর আসরে বসার জন্য জুয়াড়িকে সর্বনিম্ন ১ লাখ টাকা শো-মানি হিসেবে দেখাতে হচ্ছে। এতে প্রতিদিনই লাখ লাখ টাকা বাজি ধরা হচ্ছে। খেলাটি হচ্ছে মূলত: ডলারের মাধ্যমে। ফলে জুয়ার টাকা ডলারে ট্রানজেকশন হওয়ায় দেশের টাকা বাইরে পাচার হয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, এক লাখ টাকার ওপরে খরচ করে বাইরে থেকে ক্যাসিনো পুকার বোর্ডটি চট্টগ্রামে আনা হয়েছে। এটি বহনযোগ্য হওয়ায় একেক দিন একেক জায়গায় পুকার বোর্ড নিয়ে চক্রটির জুয়ার আসর বসাচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। মূলত: আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতেই এই ধরণের কৌশলের বর্তমানে আশ্রয় নেয়া হয়ে থাকে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য মিলছে। অনলাইন পণ্য বিক্রির সাইট আলিবাবায় পুকার থেকে শুরু করে ক্যাসিনোর বিভিন্ন জুয়ার সরঞ্জাম বিক্রির বিজ্ঞাপন দেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
এসব পুকারের একেকটির দাম ১ হাজার ডলার থেকে শুরু করে তার ওপরে। ধারণা করা হচ্ছে, ক্যাসিনো চক্রগুলো এসব সাইটের মাধ্যমে গোপনে দেশের ভেতর এসব ক্যাসিনোর সরঞ্জাম নিয়ে আসছে। আবার বিভিন্ন ডিজিটাল খেলনার নামের আড়ালে মূলত এসব ক্যাসিনো সরঞ্জাম দেশে প্রবেশ করতে পারে।
সূত্রমতে, পশ্চিমা বিশ্বে ক্যাসিনোতে পুকার অন্যতম। এই খেলায় এক ধরণের সুসজ্জিত জুয়ার বোর্ড থাকে। আন্তর্জাতিক জুয়ার নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে ক্যাসিনোতে রুলেট ও ¯¬ট মেশিন থাকা বাধ্যতামূলক রয়েছে।
ক্যাসিনোতে নগদ অর্থের বিকল্প হিসেবে পুকার চিপস নামে বিশেষ ধরণের ঘুঁটি ব্যবহার হচ্ছে। এসব পুকার চিপ যেকোনো ক্যাসিনোতে ভাঙিয়ে নগদ টাকায় রূপান্তর করা যায়। সাধারণত বড় ক্যাসিনোতে ১ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার চিপ ব্যবহার করা হয়। তবে এ ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে কোনো তথ্য নেই বলে দাবি করেছেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (উত্তর) মির্জা সায়েম মাহমুদ। তিনি বলেন, ক্যাসিনো পুকার স¤পর্কিত জুয়া খেলার ব্যাপারে কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে জুঁয়াড়ি বা জুঁয়া চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ অভিযোনে গত ২৭শে অক্টোবর নগরীর বিভিন্ন জুঁয়ার স্পট থেকে ২০ জুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ক্যাসিনো পুকার সম্পর্কেও বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status