এক্সক্লুসিভ
সঞ্চয়পত্র থেকে ৩ মাসেই ৩ গুণ ঋণ বেড়েছে সরকারের
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
৩ নভেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার, ৭:৫৬ পূর্বাহ্ন
নানা কড়াকড়ির মধ্যেও বাড়ছে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে সঞ্চয়পত্র থেকে নিট ১১ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা ঋণ এসেছে সরকারের। চলতি অর্থবছরে নির্ধারিত ২০ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার যা ৫৮.৩১ শতাংশ। অর্থাৎ, বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ করার যে লক্ষ্য ধরেছিল তার ৫৮.৩১ শতাংশ ৩ মাসেই নেয়া হয়ে গেছে। গত অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে সঞ্চয়পত্র থেকে মাত্র ৪ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছিল সরকার। এ হিসাবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় সঞ্চয়পত্রে ঋণ বেড়েছে প্রায় তিনগুণ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে সঞ্চয়পত্র বিক্রি ‘অস্বাভাবিক’ বেড়ে যাওয়ায় এই খাতে সরকারের ঋণও বাড়ছে।
ক্রেডিট কার্ড ছাড়া গত এপ্রিল থেকে সব ধরনের ঋণের সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা ৯ শতাংশ বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ব্যাংকগুলো আমানতে এখন আর ৬ শতাংশের বেশি সুদ দিচ্ছে না। তবে সঞ্চয়পত্র কিনলে এখনো ১১ শতাংশের বেশি সুদ মিলছে। এ কারণে শর্তের মধ্যেও সঞ্চয়পত্রের বিক্রি বাড়ছে। সব মিলিয়ে গত সেপ্টেম্বর শেষে সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১৩ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।
গত অর্থবছরের শুরুতে সঞ্চয়পত্র থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও শেষ পর্যন্ত বিক্রি হয় ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ কম পাওয়ায় গত অর্থবছর ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার রেকর্ড ৭২ হাজার ২৪৬ কোটি টাকার ঋণ নেয়। এবার ব্যাংক থেকে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও গত ২০শে অক্টোবর পর্যন্ত নিট মাত্র ২ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর তথ্যে দেখা যাচ্ছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ৩ হাজার ৫৪৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। আর আগস্টে নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৭৪৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা, যা এক মাসের হিসাবে গত দেড় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধের পর যা অবশিষ্ট থাকে, তাকে বলা হয় নিট বিক্রি। ওই অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা থাকে এবং সরকার তা রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজে লাগায়। বিনিময়ে সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকদের প্রতিমাসে সুদ দিতে হয়। এ কারণে অর্থনীতির পরিভাষায় সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রিকে সরকারের ‘ঋণ’ বা ‘ধার’ হিসেবে গণ্য করা হয়। করোনাভাইরাস মহামারি মানুষের জীবনে নিয়ে এসেছে অর্থনৈতিক সংকট। মুনাফার উপর করের হার বৃদ্ধি এবং নানা ধরনের কড়াকড়ি আরোপের পরও সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাড়ছে। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, দু’টি সম্ভাব্য কারণ থাকতে পারে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের একটি অংশ দিয়ে মানুষ হয়তো সঞ্চয়পত্র কিনছে। আগেও কিনতো, তবে এখন রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় এই অঙ্ক বেড়েছে। এছাড়া অন্য যেকোনো সঞ্চয় প্রকল্পের চেয়ে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার যেহেতু বেশি, সবাই এখানেই বিনিয়োগ করছে।
সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কোভিড-১৯ মহামারির ধাক্কা বাংলাদেশে লাগতে শুরু করার পর গত এগ্রিলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি তলানিতে নেমে আসে। ওই মাসে মোট ৬৬১ কোটি ৭৮ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। সুদ-আসল বাবদ শোধ করা হয় তার প্রায় দ্বিগুণ ১ হাজার ২৮৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। তাতে নিট বিক্রি ছিল ৬২১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ঋণাত্মক। অর্থাৎ এপ্রিল মাসে যতো টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল তার থেকে ৬২১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বেশি গ্রাহকদের সুদ-আসল বাবদে পরিশোধ করা হয়েছিল। মে মাসে ৩ হাজার ২২৬ কোটি ৯০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। সুদ-আসল বাবদ শোধ করা হয় ২ হাজার ৭৯৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ৪৩০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ৪৯ হাজার ৯৩৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিল সরকার। তার আগের অর্থবছরে নিয়েছিল ৪৬ হাজার ৫৩০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আর ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ধার হয়েছিল ৫২ হাজার ৪১৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে সঞ্চয়পত্র বিক্রি ‘অস্বাভাবিক’ বেড়ে যাওয়ায় এই খাতে সরকারের ঋণও বাড়ছে।
ক্রেডিট কার্ড ছাড়া গত এপ্রিল থেকে সব ধরনের ঋণের সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা ৯ শতাংশ বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ব্যাংকগুলো আমানতে এখন আর ৬ শতাংশের বেশি সুদ দিচ্ছে না। তবে সঞ্চয়পত্র কিনলে এখনো ১১ শতাংশের বেশি সুদ মিলছে। এ কারণে শর্তের মধ্যেও সঞ্চয়পত্রের বিক্রি বাড়ছে। সব মিলিয়ে গত সেপ্টেম্বর শেষে সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১৩ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।
গত অর্থবছরের শুরুতে সঞ্চয়পত্র থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও শেষ পর্যন্ত বিক্রি হয় ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ কম পাওয়ায় গত অর্থবছর ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার রেকর্ড ৭২ হাজার ২৪৬ কোটি টাকার ঋণ নেয়। এবার ব্যাংক থেকে ৮৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও গত ২০শে অক্টোবর পর্যন্ত নিট মাত্র ২ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর তথ্যে দেখা যাচ্ছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ৩ হাজার ৫৪৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। আর আগস্টে নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৭৪৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা, যা এক মাসের হিসাবে গত দেড় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধের পর যা অবশিষ্ট থাকে, তাকে বলা হয় নিট বিক্রি। ওই অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা থাকে এবং সরকার তা রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজে লাগায়। বিনিময়ে সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকদের প্রতিমাসে সুদ দিতে হয়। এ কারণে অর্থনীতির পরিভাষায় সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রিকে সরকারের ‘ঋণ’ বা ‘ধার’ হিসেবে গণ্য করা হয়। করোনাভাইরাস মহামারি মানুষের জীবনে নিয়ে এসেছে অর্থনৈতিক সংকট। মুনাফার উপর করের হার বৃদ্ধি এবং নানা ধরনের কড়াকড়ি আরোপের পরও সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাড়ছে। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, দু’টি সম্ভাব্য কারণ থাকতে পারে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের একটি অংশ দিয়ে মানুষ হয়তো সঞ্চয়পত্র কিনছে। আগেও কিনতো, তবে এখন রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় এই অঙ্ক বেড়েছে। এছাড়া অন্য যেকোনো সঞ্চয় প্রকল্পের চেয়ে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার যেহেতু বেশি, সবাই এখানেই বিনিয়োগ করছে।
সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কোভিড-১৯ মহামারির ধাক্কা বাংলাদেশে লাগতে শুরু করার পর গত এগ্রিলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি তলানিতে নেমে আসে। ওই মাসে মোট ৬৬১ কোটি ৭৮ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। সুদ-আসল বাবদ শোধ করা হয় তার প্রায় দ্বিগুণ ১ হাজার ২৮৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। তাতে নিট বিক্রি ছিল ৬২১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ঋণাত্মক। অর্থাৎ এপ্রিল মাসে যতো টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল তার থেকে ৬২১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বেশি গ্রাহকদের সুদ-আসল বাবদে পরিশোধ করা হয়েছিল। মে মাসে ৩ হাজার ২২৬ কোটি ৯০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। সুদ-আসল বাবদ শোধ করা হয় ২ হাজার ৭৯৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ৪৩০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ৪৯ হাজার ৯৩৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিল সরকার। তার আগের অর্থবছরে নিয়েছিল ৪৬ হাজার ৫৩০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আর ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ধার হয়েছিল ৫২ হাজার ৪১৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।