মত-মতান্তর

নবী করিম (সঃ) এর অপমান

এ এম এম নাসির উদ্দিন, সাবেক সচিব

৩১ অক্টোবর ২০২০, শনিবার, ৫:০৮ পূর্বাহ্ন

এ এম এম নাসির উদ্দিন

ইসলাম পরমত সহিষ্ণুতা শিক্ষা দেয়। অন্য ধর্মকে অপমান করা ইসলাম অনুমোদন করে না। আমাদের প্রিয় নবীজী অন্য ধর্মের প্রতি সহনশীলতা প্রদর্শনের শিক্ষা দিয়েছেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন সময়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতার অপব্যাখ্যা করে স্বাধীন মত প্রকাশের নামে কিছু কুচক্রীমহল আমাদের নবীজীর বিকৃত কার্টুন ইত্যাদি এঁকে বা অন্যান্য উপায়ে তাঁকে অপমানের চেষ্টা করে। এধরণের আচরণ মুসলমানদের হৃদয়ে আঘাত হানে এবং সহিংসতা উসকে দেয়। সম্প্রতি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রন আমাদের নবীজীর এধরণের বিকৃত কার্টুন আঁকার বিষয়টিকে তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতার অংশ বলে দাবী করেছেন। প্যারিসের দুটি সুউচ্চ ভবনে অংকিত এধরণের বিকৃত বিশাল কার্টুনকে ম্যাক্রন রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছেন।

২। নবীজীর এ অপমানে সারা মুসলিম বিশ্ব ফুঁসে ওঠেছে। প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে বাংলাদেশের বিশাল মুসলিম জনগোষ্ঠীর ব্যাপক অংশ সহ সারা মুসলিম বিশ্ব। তুরস্ক,কাতার,কুয়েত,পাকিস্তান,ইরান,মালয়েশিয়া ইত্যাদি দেশ মুসলিম বিশ্বকে ফ্রান্সের পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। এক ডজনের বেশী মুসলিম দেশের সরকার প্রধান ফরাসী প্রেসিডেন্টের আচরণের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
৩। আমাদের প্রিয় নবীর অপমানের প্রতিবাদ করা প্রতিটি ঈমানদার মুসলমানের দায়িত্ব। রাসুল (সঃ) আজীবন তাঁর উম্মতের মঙ্গল চেষ্টায় নিজেকে ব্যাপৃত রেখেছেন।এমনকি মৃত্যুর পরেও উম্মতের মঙ্গল চেষ্টা তাঁর অব্যাহত থাকবে। সে নবীজীর অপমান তাঁর উম্মতের ধর্মীয় অনুভূতিকে গভীরভাবে আহত করবে এবং তাঁরা এর তীব্র প্রতিবাদ/প্রতিরোধ করবে এটাই প্রত্যাশিত।

ক। আমাদের প্রিয় নবী সেই নবী যিনি মৃত্যু শয্যায়ও তাঁর উম্মতের মঙ্গল চিন্তায় কাতর ছিলেন।তাঁর মৃত্যু যন্ত্রণা শুরু হলে তিনি বলেন,হে আল্লাহ,বড় কষ্ট! মৃত্যু বড় কষ্টের!এ কঠিন যন্ত্রনা আমার উম্মতরা সহ্য করতে পারবে না। তুমি আমার সব উম্মতের মৃত্যু যন্ত্রণা আমাকে দিয়ে দাও।তাদের কষ্ট দিওনা।
খ। হাশরের ময়দানে সবাই বলতে থাকবে"ইয়া নাফসি,ইয়া নাফসি"। আর আমাদের প্রিয় নবীজী বলতে থাকবেন "হায় উম্মতি,হায় উম্মতি"। উম্মতের নাজাত ই হবে তাঁর ধ্যান এবং লক্ষ্য।আমরা নাজাতের জন্যে হাশরের ময়দানে প্রিয় নবীজীর সুপারিশ প্রত্যাশা করি। সে নবীজীর অপমানে চুপ থাকা কি গ্রহণযোগ্য? হাশরের ময়দানে নবীজীর সামনে আমরা কিভাবে দাঁড়াব?
৪।পৃথিবীতে প্রায় ৬০ জন মুসলিম সরকার প্রধান রয়েছেন।এঁদের একযোগে প্রতিবাদ করতে হবে।১৫ বা ১৬ জন মুসলিম সরকার প্রধানের প্রতিবাদ যথেষ্ট নয়। মুসলিম দেশগুলোর নিজেদের মধ্যে অনৈক্য, দ্বন্দ্ব সংঘাত এর কারণে কুচক্রীমহল এ ঘৃণ্য কাজ করার সাহস দেখাচ্ছে। ফরাসি প্রেসিডেন্টকে তাঁর এ ঘৃণ্য কর্মকান্ডের জন্যে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভবিষ্যতে এধরণের কর্মকান্ডের পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় তার ব্যবস্থা নিতে হবে। জাতিসংঘের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসা বাঞ্চনীয়। এ ধরনের কর্মকান্ড বিশ্ব শান্তির প্রতি হুমকি সৃষ্টি করে। মুসলিম বিশ্ব জাতিসংঘে বিষয়টি উত্থাপন করে কোন রাস্ট্র যাতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় কোন ধর্মের অবমাননা না করতে পারে সে লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিতে হবে।বিশ্ব শান্তির জন্যেই এটা জরুরি। রাসুল (সঃ) এর উম্মত হিসেবে মুসলিম সরকার প্রধান দের অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে।

"রাসুলের অপমানে যদি কাঁদেনা তোর মন,
মুসলিম নয়, মোনাফেক তুই,
রাসুলের দুশমন।"

-জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status