বিশ্বজমিন

রয়টার্সের প্রতিবেদন

ধর্ষণ মামলা থেকে ট্রাম্পের নাম বাদ দেয়ার আবেদন প্রত্যাখ্যান

মানবজমিন ডেস্ক

২৮ অক্টোবর ২০২০, বুধবার, ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন

একটি ধর্ষণ মামলা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নাম বাদ দেয়ার সরকারি আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন ফেডারেল একজন বিচারক। বুকে সাহস দেখিয়ে ন্যায়বিচারের পক্ষে থাকা ওই বিচারক হলেন ম্যানহাটানে ইউএস ডিস্ট্রিক্ট জজ লুইস কাপলান। অভিযোগ আছে, একজন লেখিকা তার মামলায় বলেছেন, প্রায় ২৫ বছর আগে ম্যানহাটানের একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে তাকে ধর্ষণ করেছেন ট্রাম্প। এ জন্য ওই লেখিকা মানহানি মামলা করেছেন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। তার দাবি, ধর্ষণের অভিযোগ মিথ্যাভাবে অস্বীকার করছেন ট্রাম্প। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে আরো বলা হয়, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ এনেছেন ইলি ম্যাগাজিনের সাবেক কলামনিস্ট ই. জ্যাঁ ক্যারোল। কিন্তু এই মামলায় ট্রাম্পের পরিবর্তে সরকার তার পক্ষে অবস্থান নিতে চায়। মঙ্গলবার ম্যানহাটানে ইউএস ডিস্ট্রিক্ট জজ লুইস কাপলান সেই অনুরোধও প্রত্যাখ্যান করেছেন। সরকার যা চাইছে যদি তার পক্ষে রায় দেয়া হতো তাহলে দায়বদ্ধতা থেকে রেহাই পেতেন ট্রাম্প। আর তাতে ক্যারোলের ধর্ষিত হওয়ার মানহানির মামলাটি ম্লান হয়ে যেত।
জ্যাঁ ক্যারোলের দাবি, ১৯৯০ এর দশকের মধ্যভাগে বাগডর্ফ গুডম্যানে তাকে ধর্ষণ করেছেন ট্রাম্প। ক্যারোল কে তা জানতেন ট্রাম্প। ক্যারোল এই অভিযোগ করার পর ট্রাম্প তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপরই গত নভেম্বরে নিউ ইয়র্ক স্টেট কোর্টে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন ক্যারোল। ক্যারোলের দাবি, এখন ট্রাম্প এটাকে বানোয়াট গল্প বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন। ‘সে আমার উপযোগী নয়’ বলে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প।
এটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বারের নির্দেশে এই মামলাটি নেয়া হয় আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি ফেডারেল কোর্টে। এতে বলা হয়, সরকারি ক্ষমতার অধীনে ট্রাম্প তার অবস্থান নিয়েছেন এবং ক্যারোলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাই এভাবে ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করা যায় না।
কিন্তু বিচারক লুইস কাপলান তার ৬১ পৃষ্ঠার রায়ে বলেছেন, ফেডারেল কর্মীদের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত অভিযোগের যে রীতি তার অধীনে পড়েন না প্রেসিডেন্ট। একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্যারোল সম্পর্কে কোনো বিবৃতি দেননি ট্রাম্প। এমনকি যখন অভিযোগের জবাবে কথা বলেছেন ট্রাম্প, তখন তিনি কারো দ্বারা নির্দেশিত বা নিয়ন্ত্রিত হননি। এ বিষয়টি সরকারের কিছু নয়। তাছাড়া ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার কয়েক দশক আগে অভিযোগকারীকে ধর্ষণ করেছেন। ট্রাম্পকে নিয়ন্ত্রণ করার মতো কেউই নেই।
এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। আগামী ৩রা নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এ সময়ে ক্যারোলের করা মামলার মতো আরো অনেক মামলা রয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। তিনি প্রথম দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বিপুল সংখ্যক নারী একই রকম অভিযোগ করেছিলেন। তাদের বেশির ভাগই তার বিরুদ্ধে যৌন অসদাচরণ অথবা ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন। এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন ট্রাম্প।
ওদিকে জ্যাঁ ক্যারোলের আইনজীবী রবার্তা কাপলান বলেছেন, তারা মানহানির এই মামলাটি ফেডারেল কোর্টে বোঝাপড়া করবেন। তার ভাষায়- নির্ভেজাল সত্য কথা হলো, আমার মক্কেলের মানহানি করেছেন ট্রাম্প। আমার মক্কেলের বুকভরা সাহস রয়েছে। সেই সাহস নিয়ে তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন। তার ওই নৃশংস ব্যক্তিগত আচরণের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের অফিসকে গুলিয়ে ফেলা যাবে না।
জবাবে জ্যাঁ ক্যারোল বলেছেন, যখন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প আমাকে একজন মিথ্যাবাদী বলেন এবং আমার অভিযোগ এই বলে অস্বীকার করেন যে, আমার সঙ্গে তার সাক্ষাতই হয়নি- তখন বলবো তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে কথা বলছেন না। আমি এ জন্য সন্তুষ্ট যে, বিচারক কাপলান মৌলিক সত্যকে স্বীকার করেছেন।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের পক্ষ থেকে আগস্টে এই মামলাটি স্থগিত করতে আবেদন জানানো হয়েছিল ম্যানহাটানের বিচার ভারনা স্যান্ডার্সের স্টেট কোর্টে। কিন্তু তিনি এতে সায় না দিয়ে মামলাটি পাঠিয়ে দেন আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ফেডারেল কোর্টে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status