মা-বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সৈয়দ আব্দুল মুক্তাদির

মৌলভীবাজারে বাবা-মার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় সমাহিত হলেন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবক, সরকারের সাবেক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, ঢাকাস্থ জালালাবাদ এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি সৈয়দ আব্দুল মুক্তাদির (৮০)। গতকাল ৩ দফা জানাজা শেষে সদর উপজেলার নাজিরাবাদ ইউনিয়নের বারইউরি গ্রামের সৈয়দ বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয় প্রবীণ এই শিক্ষাবিদকে। এর আগে গতকাল সকাল ১০টায় ঢাকার ধানমন্ডি ঈদগাহ মসজিদে তার ১ম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে হেলিকপ্টারযোগে মরহুমের লাশ মৌলভীবাজারে নিয়ে আসা হয়। মৌলভীবাজার স্টেডিয়ামে দুপুর ১টা ২৫ মিনিটের দিকে লাশ বহনকারী হেলিকপ্টারটি পৌঁছালে আগে থেকে অপেক্ষমাণ মৌলভীবাজার-৩ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমদসহ আত্মীয়স্বজনরা তার লাশ গ্রহণ করেন। এরপর লাশবাহী এম্বুলেন্সযোগে তার মরদেহ মৌলভীবাজার শহরের সমশেরনগর রোডের শাদীমহলে মরহুমের বোনের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে শেষবারের মতো একনজর দেখতে ভিড় করেন তার আত্মীয়স্বজন, সাবেক ছাত্র ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। আসরের নামাজের আগে মরহুমের লাশ হযরত সৈয়দ শাহ মোস্তফা (র:) দরগাহ মসজিদে নিয়ে আসা হয়। বাদ আসর দরগাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে মরহুমের ২য় জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার নামাজের পূর্বে মরহুমের কর্মময় জীবন নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন ও দোয়া চান মরহুমের ভাগ্নে মৌলভীবাজার-৩ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমদ, সাবেক পৌর মেয়র ও জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি ফয়জুল করিম ময়ূন, জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন মাতুক, মরহুমের ভাই সৈয়দ কয়ছর আহমদ। এরপর জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক এমপি এম. নাসের রহমানের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ভিপি মিজানুর রহমান মিজান, ফখরুল ইসলাম, মুহিতুর রহমান হেলাল, মঈন উদ্দিন মজনু ও আব্দুর রহিম রিপন। জানাজার নামাজের ইমামতি করেন দরগাহ মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মির্জা শামীম আহমদ। জানাজার নামাজ শেষে ওখান থেকে লাশবাহী এম্বুলেন্সযোগে তার মরদেহ নাজিরাবাদ ইউনিয়নের বরইউরি গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। বাদ মাগরিব বরইউরি জামে মসজিদে ৩য় জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। মরহুম সৈয়দ আব্দুল মুক্তাদির ৪ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন। মাত্র ৪২ দিন আগে তার স্ত্রী  সৈয়দা সৈকত আরা মারা যান। তার ২ ছেলে। বড় ছেলে সৈয়দ তানভীর মুক্তাদির তিনি সপরিবারে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। আর ছোট ছেলে তানজীদ মুক্তাদির রাফি তিনি পরিবার নিয়ে ঢাকায় বসবাস করছেন।

দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংগঠনের শোক:
এদিকে বহু গুণের অধিকারী সৈয়দ আব্দুল মুক্তাদিরের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সংগঠন এবং ঢাকায় সিলেট-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সামাজিক ও সংগঠনের তরফে গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়েছে। প্রত্যেকেই মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। রাজধানীর উত্তরা এলাকায় বসবাসরত সিলেটের বাসিন্দাদের সংগঠন সিলেট সমিতি উত্তরার প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম এবং জেনারেল সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মো. ইনামুল কবির এক যুক্ত বিবৃতিতে সৈয়দ মুক্তাদিরের বিদায়ে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি তার শোকাহত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান।

উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকাল ৫টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।