শেষের পাতা

আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে

স্টাফ রিপোর্টার

২৫ অক্টোবর ২০২০, রবিবার, ৯:৪৫ পূর্বাহ্ন

আওয়ামী লীগ সরকার ‘বিশেষ বিশেষ শক্তিতে বলীয়ান হয়ে’ দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।তিনি বলেন, এই আওয়ামী লীগ সরকার, তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। শুধুমাত্র জনগণকে বোকা বানানোর জন্য তারা গণতন্ত্রের মুখোশ পরে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রকৃতপক্ষে একব্যক্তির শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে। আমরা অনেক বলেছি, আমরা এই মানববন্ধন, মিছিল, হরতাল বহু কিছু করছি। আমরা এখন পর্যন্ত এই সরকারের টনক নড়াতে পারিনি। কারণ তারা বিশেষ বিশেষ শক্তিতে বলীয়ান হয়ে আছে।
সরকারের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, অনেক হয়েছে। এভাবে আর চলতে পারে না। আমরা পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই- অবিলম্বে পদত্যাগ করুন, অবিলম্বে জনগণের চোখের ভাষা পড়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় জনগণের উত্তাল ঢেউ সৃষ্টি হবে সেই ঢেউয়ে আপনারা সবাই ভেসে যাবেন। জনগণের উদ্দেশ্যেও বলতে চাই, আপনারা আর নিশ্চুপ হয়ে থাকবেন না। যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে আজকে যদি আমরা প্রতিবাদ না করি, রুখে না দাঁড়াই তাহলে ১৯৭১ সালে আমরা যে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম, আমরা যে ১৯৯০ সালে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই-সংগ্রাম করেছিলাম, যে গণতন্ত্রকে আমরা ছিনিয়ে নিয়ে এসেছিলাম সেই গণতন্ত্রকে তারা আবার হরণ করেছে। সুতরাং আমাদের সবাইকে আজকে রুখে দাঁড়াতে হবে, অধিকারকে ফিরিয়ে আনতে হবে, আমাদের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। ‘দানবীয়-হাইব্রিড-স্বৈরাচারী পুতুল সরকারের’ বিরুদ্ধে দলমতনির্বিশেষে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির আহ্বানও জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, ভিন্নমতকে স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য তারা (সরকার) আজকে সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং সাধারণ মানুষ যারা ভিন্নমত পোষণ করে লেখালেখি করে, সোশ্যাল মিডিয়াতে কোনো কথা বলে তখনই তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়। যে মামলাতে সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে একটা মিথ্যা অপবাদ, একটা অপব্যাখ্যা এবং সেই সঙ্গে আইনের একটা অপব্যাখ্যা দিয়ে। তাকে গ্রেপ্তার করে বিনা জামিনে আটকে রাখা হয়েছে। এটা একটি বিষয় নয়, অনেক সাংবাদিককে আজকে নির্যাতন করা হচ্ছে, নিপীড়ন করা হচ্ছে, সাংবাদিকদের হত্যা করা হয় তার কোনো বিচার হয় না। আজকে সাংবাদিকরা লিখতে ভয় পান। কারণ যে আইন করা হয়েছে সেই আইনগুলোর কারণে তারা আর লিখতে সাহস করেন না। সারা দেশে একটা ভয়ের, একটা ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা হয়েছে- রেইন অব ট্রেরর এবং সেটা করে তারা জোর করে বন্দুকের জোরে, ক্ষমতার জোরে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তারা আজকে ক্ষমতায় টিকে আছে।
অবিলম্বে রুহুল আমিন গাজী, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদের মুক্তি এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানান ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
‘নির্বাচন নির্বাচন খেলা করছে’
মির্জা ফখরুল বলেন, এই নির্বাচন কমিশন ও সরকার যৌথভাবে এই নির্বাচনকে তাদের একটা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। তারা নির্বাচন নির্বাচন খেলা করছে। নির্বাচনের নামে তারা আজকে ত্রাস সৃষ্টি করেছে। একটা প্রমাণ আমি দিচ্ছি। ঢাকা-১৮ উত্তরাতে যে উপনির্বাচন হচ্ছে সেই নির্বাচনে আমাদের দলের একজন নেতা মোস্তফা যিনি কমিশনার প্রার্থী হয়েছিলেন গত রাতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা তার বাড়িতে আক্রমণ করে ভাঙচুর করেছে। গতকাল সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনে আমাদের প্রার্থী রেজা সাহেবকে (সেলিম রেজা) সারাদিন ঘরের মধ্যে আটক করে রাখা হয়েছিলো।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এই মানববন্ধন হয়।
সংগঠনের নেতা সাংবাদিক শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় মানববন্ধনে ছড়াকার আবু সালেহ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, এগ্রিকালচারিস্ট এসোসিয়েশনের অধ্যাপক আবদুল করীম, শামীমুর রহমান শামীম, প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন, প্রকৌশলী ফখরুল আলম, ডক্টরস এসোসিয়েশনের রফিকুল ইসলাম, নার্সেস এসোসিয়েশনের জাহানারা বেগম, জাসাসের রফিকুল ইসলাম প্রমুখ পেশাজীবী নেতারা বক্তব্য রাখেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status